এথেন্স পাটোয়ারী’র বিষ্ণুপুর ও অন্যান্য কবিতা

Bishnupur and other poems by Athens Patwari


১.


নদীর গভীরে যে পাথর ডুবে থাকে তার সাথে ভাসমান নৌকার দূরত্ব কমে আসে গ্রীষ্মকালে।

জল কমতে কমতে নৌকা গিয়ে বসে পড়ে পাথরের উপর।এইতো দেখা।

 

আমরা কি বর্ষকালে থাকবো? তোমার আর আমার সম্পর্কের ভেতর যে ইগোর নদী তার জন্য কি কোন গ্রীষ্মকাল আসবেনা?

আমাদের দূরত্ব কমবেনা?

সমস্ত ইগো জল শুকিয়ে আসবে এমন গ্রীষ্মকাল আমাদের কি আসবেনা?

 

আমি এক আশ্চর্য পাথর যার নাম যায়নি ভূগোলে, শুধু পাড়ার মানুষ জানে দুলালের ছেলে আস্তো একটা বিরহের পাথর পড়শী যার কারিগর।

 



২.

দুপুরে মা গোসল করতে যায় নদীতে

শাড়ির আঁচলে করে নিয়ে আসে নদী।

রোদে শুকাতে দেয় সেই শাড়ি 

আমাদের উঠনো টুপটুপ করে ঝরে পড়ে

তখন ডাকাতিয়া, ইছামতী,কর্ণফুলী।

প্রতিদিন দূরের মাঠে একটা গাছ ছায়া দেয়

সেই ছায়ার নিচে দাঁড়াই।

বাবা মনে করে বাড়ি নিয়ে আসি রোজ সন্ধ্যা।

 




৩.


কিছুই খাইতে পারিনা বমি বমি লাগে। সুখ তিতা তিতা লাগে বিরহ হজম হয় শুধু ।

ভেতরে মন নাই দেখি একটা নদী থৈথৈ করে ঢেউ আর অভাবের পোনামাছ ছুটাছুটি করে সেখানে।

 

কিছু খাইতে পারিনা বমি বমি লাগে।

মা ভাত লইয়া দাঁড়ায়।

বইন পানি লইয়া দাঁড়ায় খাইতে পারিনা তিতা তিতা লাগে।

অতীতের দোষে হৃদয় পুড়ে যাচ্ছে কেউ যদি একটু শরবত বানাইয়া তোমারে খাওয়া দিতো আমারে।

 

তুমি কোথায় থাকো কোন দেশে?

কার গ্লাসে গ্লাসে?

 




বিষ্ণুপুর


এখনো একটা শরীর চিতাবাঘের মতন গুত গুত করে আমার চোখের ভেতর।অন্ধকারে মিশ্রিত হয় অতীত সংলাপ ।সমস্ত রাত ‘দাঁড়িয়ে থাকি’ মন খারাপের উপর।ধীরে ধীরে যে পাথর হয়ে যাচ্ছি টের পাই। টের পাই এ-ও আমি আর কখন ঘুমাতে পারবো না।

দেয়ালে লেখা যে অক্ষরমালা ‘তোমাকে ভালোবাসি’ পাহারায় দিচ্ছে আমার চোখ।

 

এ বছর মেট্রিক ফেল করা ছেলে'রা জানতে চায় তোমাকে পেয়েছি কিভাবে এতো ফেল করার পরেও এবং হারালাম বা কেনো?

কাউকে কিছু বলিনা রহস্যের প্রেমে পড়ে গেছি বোধহয় আমি।

পাড়া সবাই জানে আমি রাতে ঘুমাই না, শুধু তোমাকে বলা হয়নি আমার রাতে ঘুম আসে না বিষ্ণুপুর।

Post a Comment

0 Comments