এমরান হাসান এর ‘শ্রুত ধারাবিবৃতি’ ও অন্যান্য ৫টি কবিতা

Emran Hasan's 'Shrut Dharavibriti' and 5 other poems




শ্রুত ধারাবিবৃতি

 

পালক ছিলো পালকের মতো একা ।

 

ঐসব পালকের গান শুনতে চেয়েছিলাম তোমার কাছে ।

ভোরের আকাশ, ভোরের শুদ্ধতা কাঁপিয়েছো তুমি ।

করতলে বেলীফুলের নাচ, ঝড়া পাহাড়ী জলের ঘ্রাণ শুকেই এতোটা প্রহর কেটেছে তোমার ।

 

কতোদিন দেখিনি  ঐ সব ভোর 

কতোদিন পড়া হয় না, তোমাকে ।

কতোদিন পাপ কিংবা পূণ্যের হিসেব মেলাতে মেলাতে

 চলে যাইনি শতবর্ষী পারুড়তলায়।

 

তোমাকে দেখিনা বহুযুগ

কবে যেন ছুঁয়েছিলাম ক্লান্ত মুখ,কোমল অধর

যেমন নির্লজ্জ মেঘ ছুঁয়েছিলো মাটির প্রচ্ছদ।

 

 

 

 

বিস্ময়চূড়া

 

সময় এতোটা দুঃখ ধরে! জানা ছিলো না।

 

পিচ ঢালা পথ এতোটা সৌজন্যতা নিয়ে শেখায় পা ফেলা!

কতকিছু হয় ইদানিং। দিব্যি টিকে থাকার যুদ্ধ-পরম্পরায় হুমড়ি খেয়ে পড়া সেই  ছোট্টকালের একরত্তি আশ্রয় — ভুলেছি হয়তো। মনে পড়ে পাঠশালা পালানো কুয়াশায় চুপটি বসে থাকা।মায়াবী মুখ যেন কার? মনে পড়ে কি সহসাই!

 

পা-চিহ্নে এতোটা পাঠ অনন্তের দিকে!পড়া হয়নি।

 

ক্লান্তির চারপাশে জেগে ওঠা মিহি কোন সুর শেখায় নির্ঘ্রাণ পুস্পবিদ্যা।দ্যাখেনি কেউ।আকস্মিক আয়োজনে লেপ্টে থাকে উজ্জ্বল এক আলোর বাঁক।সাম্পানের মতোন সে এক অর্ধবৃত্তের রেশ রেখে যায় চিরদিন একপেশে চিত্ত হন্তারক।

 

অথচ আলো আসে রোজ।

হয়তো ভোর হয়।

গল্পের রঙ ছড়ায়না নির্বিরোধ সময়ের সুক্ষ্ম ডানাওয়ালা পাখি

 

 

 

যতিচিহ্ন 

 

আদিম উদ্ধারচিহ্নের উদ্ধৃতিতে মুছে যায় দিকচিহ্ন সব

কে না জানে পুণ্ড্র,মৌর্য,গুপ্ত,পাল রাজ্যের কাল-কথা?

 

বিস্মিত সচিত্র তালিকাভুক্তির রেশ লেগেছিল সাম্পানে

পর্যায়বৃত্তের নতুনত্বে ঝুঁকে গেছে দারুণ অধ্যায়গুলো

যেন কোথাও সরে গ্যাছে খাঁটি সুবর্ণ বন্দরে ভিড় করা

অনাম্নী রূপসী এক ভূমিতীর্থ—

আশ্চর্য আরাধ্য যার নাম,যেন সহস্রাব্দের দাম্ভিক জপমন্ত্র!

 

সুরকণ্ঠী পাখির জীবনচক্র যেমন,আশ্চর্য আলোয় বেড়ে ওঠে

প্রত্যহ তার বিম্ব,চিহ্ন ধরে রাখে এক অলৌকিক মোহে

প্রাচুর্য সাজায় তার নিজস্ব ভাবনার ঘর গৃহস্থালি।

অনুচ্চকিত ভাবনায় জড়ানো সে সিগ্ধ মনোরম সুখ

সমুদ্র ঢেউ এসে জড়ায় বিশালতার নিশ্চুপ আহবানে...

 

আয়োজিত আদিম যতিচিহ্নে মুদ্রিত সহস্রকালের ঘুম

মায়াবী হরিণা'র বেশে চিরদুরন্ত এই সুন্দরতম ঘোর

 

মুহুর্ত ভালোবাসা থেকে দুরত্বে নয় স্পর্শের ব্যাকুলতা

নিধুয়া সন্ধ্যার দিকে এই প্রতিশব্দ রেখেছে বাংলাদেশ।

 

 

 

 

অয়োময়

 

কেমন আছিস অন্ধ চোখে?

আপন আলোর মৃত্যু-শোকে?

 

কেমন আছিস একলা এখন?

ঘুম ভাঙা ভোর, চাঁদের আদর,

হৃদয়ে নিয়ে দুঃখ শহর

কেমন আছিস?

 

পা বাড়ালেই অন্য সময়

ভুল-বেভুলের এই অয়োময়

মুখোশ লুকোয় মুখের ভাঁজে

দু' চোখ ভিজে সকাল সাঁঝে

কেমন আছিস?

 

নীরব হাসির উল্লাসে আজ

হৃদয় জুড়ে নষ্টা বাতাস

ঘোরের ঘরে দু'একটা ফুল

ব্যর্থ বেভুল গন্ধে আকুল

কেমন আছিস?

 

 

 

ভাস্কর্য 

 

ঝাপসা মনে হয়।সবকিছু।

 

একেক টুকরো আলো আসে যুদ্ধংদেহীবেশে

জানেনা কেউ। কোথাও কোন এক আলোড়নে

মিথ্যে  বলা পাখিগুলো উধাও।

 

পালকের সাইরেন বেজে গেলে

পরাশ্রয়ী সময় গেঁথে নেয় সব কম্পন কারো।

সেখানে তরঙ্গ আসে,

আসে মৃত্যু সমান নিশ্চুপ একটা হাওয়াজী যেমন

স্থির,অনিশ্চিত স্পর্শ থেকে বহুক্রোশ দূরে

 

সবকিছু। ধোঁয়াশা কেটে গেলে তারপর...

আলো আসে,যুদ্ধংদেহীবেশে।

পায় না কেউ সবটুকু ডানার উড়ালে

সত্যাশ্রয়ী আকাশের কাছাকাছি।

 

পাখিটা শুধু মিথ্যে বলেছিলো

 


Post a Comment

0 Comments