ফিরোজ শাহ’র ‘ঐশ্বর্য’ ও অন্যান্য ১০ কবিতা

Feroz Shah's 'Aishwarya' and other 10 poems




ক্লেশ


রং ওঠা বিকেল

একটার ওপর একটা বিছিয়ে কাঁথা সেলাই করতেন মা

অস্ত যাওয়া সূর্যের চকচকে লাল সুতায়
ভেসে ওঠতো মায়ের লাল কষ্ট

সেলাই শেষে
সূর্যটা ঘুড়ির মত নেমে আসতো মায়ের কাঁথায়।





ঐশ্বর্য

পাতিলে

আলু মুলা শিম আর কাতলমাছের

আগুনবাস শেষে 
একটা সুস্বাদু সালুন
ঘরময় দৌড়াদৌড়ি করে ঘ্রাণ

রান্নার শেষের দিকে আসে ধনেপাতা

সালুনের ঘ্রাণ খেয়ে 
ছড়িয়ে দেয় নিজের ঘ্রাণ।








জামগাছ

জামগাছে

ধরে আছে গোল গোল অন্ধকার

টুপটুপ ঝরে পড়লে 
রাত আসে পুকুরে

মাছেদের ঘুম পাড়িয়ে  উড়ে যায় জামগাছ। 




ডাহুক


ঘুম

একটি ডাহুক
ডিম পেড়ে উড়ে যাচ্ছে ডিমের দিকে

লুকানো রাতে
আঁকা শীতকাল

বাহিরে জেগে থাকে একটি ছায়াবৃক্ষ।






বাড়ি


ক্ষুধার্ত বাড়ি

রাত গভীর হলে
লাফিয়ে লাফিয়ে চলে যায় ঘাসের খোঁজে
পেটভরে 
ঘাস খেয়ে চলে আসে

ঘাস না পেলে
একে একে খেয়ে ফেলে বাড়ির লোকজন

জনশূন্য বাড়ি
একদিন খেয়ে ফেলে নিজেকে ।






নখ

ব্লেডে নখ ঘষে

সরিয়ে দিচ্ছি শাদা মেঘ
ভেসে ওঠছে নগরের পরিত্যক্ত দালানবাড়ি

আর মৃতদের ছায়ার স্তূপ।






রাত

রাতে

হারিকেন জ্বলে
চিমনির ভেতরে কালি জমলে

নেমে আসে আরেকটা রাত
ডীম আলোয়

জ্বলে ওঠে দুই রাতের এক চাঁদ

জোনাকিরা উড়ে যাচ্ছে ভেতরের রাতের দিকে।






রকেট

গ্রামের কিশোরদল রকেট বানালো

অন্য পাড়ায় রক্তের গন্ধ পেয়ে
ফড়িঙদল

উড়ে যেতে যেতে খেয়ে ফেললো সেই সব রকেট।








মর্মদেশ

হৃদয়কে 

ওয়াশিং পাউডারে ধুয়ে
উত্তরমেরু দক্ষিণমেরু বরাবর তার টেনে রোদে শুকাই

ধবধবে শাদা 
একটি রুমাল আমার ঘাম নিয়ে

উড়ে যাচ্ছে তোমার ক্ষুদ্রসংস্করণ সূর্যের কাছে। 





ছাতা

সূর্যের মুখ বরাবর 

একটি ফুটন্ত  ফুল 
ছাতা হয়ে 

ঢেকে দিচ্ছে রাতের ছায়া। 





Post a Comment

0 Comments