রাগ
বারুদ শুধু কামানের কাজে লাগে না, বারুদে আগুন
বোমাও তৈরি হয়, বারুদ যদি নিজের ভেতর না
থাকে- তবে কেউ কেউ তোমাকে কালিঝুলিমাখা
এককোণায় রেখে দেবে। কখনো কখনো রাগ ফুটতে
দাও, সেই রাগ ফুটন্ত পানির মতন কেতলি বা হাঁড়ির
ঢাকনাকে লাফিয়ে তুলুক! কামানের গোলা হয়ে
উঠুক রাগ, বিস্ফোরণ ঘটাক- সোনারখনির অন্ধকারে
পড়ে থাকলে কী লাভ?
শৃঙ্খলিত নিরাপত্তা
পালিয়ে যাওয়ার পথ নেই, এই নগরেই তোমাকে
বসবাস করতে হবে, এইখানে তোমার শ্রম বিক্রির
নিয়তি, এইখানে তোমার বাজার, বাজারমুখী মূল্য
নিয়ে টিকে আছো, তারই নাম মজুরি! দেখেশুনে
রাখছে যতটুকু তোমাকে এই রাষ্ট্র ও সমাজ, ততটুকু
তুমি। নিজেকে মর্টগেজ দিয়ে রেখেছো, ঋণ শোধ
না হওয়া পর্যন্ত- তুমি দূষণতাড়িত পরিবেশ ও
আবহাওয়ায় নিঃশ্বাস নিতে বাধ্য- অবাধ্য হলেই
শৃঙ্খলিত নিরাপত্তাটুকু খসে যাবে, ধ্বসে যাবে!
হৃদপিণ্ড
বুদ্ধিমান ইঁদুরও তৈরি হচ্ছে, তাদের স্মৃতিশক্তি,
পর্যবেক্ষণ ও শেখার ক্ষমতাও বাড়ছে, আর কিছু
মানুষের চৈতন্য লুপ্ত হচ্ছে! তারা কখন কোথায়
আত্মঘাতি হয়ে দুগ্ধপোষ্য শিশুকে পর্যন্ত হত্যা
করছে, তার কোনো খেয়াল নেই! তারাও তো
নারীর গর্ভে বেড়ে উঠেছে, সেটা ভুলে গিয়ে-
স্বপ্রণোদিত হয়ে নিজের ভূখণ্ডে যে মানচিত্র তৈরি
করছে- তা কতটুকু মানুষের জন্য নিরাপদ ও
উপযোগী? তারা তা না ভেবে- যে চর্বি বাড়িয়ে
তুলছে নিজের শরীরে, তা কি হৃদপিণ্ডকে
সচল ও সুস্থ রাখবে?
জেলখানা
জেলখানা আরও বেশি বেশি স্থাপিত হচ্ছে- সরকার
দ্বারা নয়, আমাদের দ্বারা, আমাদের মাঝে! কেউ
কাউকে বিশ্বাস করি না, বিশ্বাস এখন জন্ডিসে আক্রান্ত,
চুরি ও প্রতারণা বেড়ে যাচ্ছে- বন্ধু থেকে বন্ধুর মধ্যে,
ভাই থেকে ভাইয়ের মধ্যে, সহকর্মী থেকে সহকর্মীর
মধ্যে, এমন কি আত্মীয়তাবোধের যে সবুজ গাছটি
উঠানে উঠানে বেড়ে উঠেছিল, তাও ঝড়ে দুমড়ে-মুচড়ে
পড়ে যাচ্ছে! কেউ কাউকে কারাগারে না রাখা পর্যন্ত
নিরাপদ ভাবছি না!
হিমবায়ু
কাঠ পুড়িয়ে অনেক সময়ে লোহা গলাতে
হয়, ঘরও গরম রাখতে হয়, কাঠ
কাটতে গিয়ে বনে হারিয়ে গেলে- চলবে
কি? কাঠ পুড়িয়ে পুড়িয়ে তাপ উৎপাদন
করে যে যন্ত্রটা, সে যন্ত্রের দায়িত্বে থাকার
পরও তুমি বনফুলের গন্ধে মাতোয়ারা
হয়ে গেলে- তোমার ঘরে রয়েছে
সন্তানেরা- যারা উত্তরের হিমবায়ু নিয়ে
কাঁপছে! জ্বরও আসছে, শরীরের শক্তিও
কমে যাচ্ছে! সূর্যের তাপও পেশীশক্তিবাজরা
আটকে রেখেছে!
0 Comments