গোলাম কিবরিয়া পিনু’র কবিতা

সমব্যথী ও অন্য ৫টি কবিতা


সমব্যথী


সে আমার সমব্যথী বলে
                  অলক্ষ্যে অশ্রুমোচন করে_
আমার ঊঠানে ভোরে এসে
পাথর-মাটিতে পলিমাটি মিশেয়ে দিয়েছে!

গোড়ালেবু গাছের গোড়ায়
                    জলাশয় থেকে জল এনে
                          _ভিজিয়ে দিয়েছে !
সেই থেকে অবিরল হৃদয় জুড়ানো
বাতাসের দোলা_
খোলা দুয়ারের পর্দা ছুঁয়ে যায়।


ডাক্তারখানায় ডাংগুলি খেলা


অপটু হাতের মধ্যে আবারও পড়ে যাই
উঁকি দেয় কূলভূমিতে যৌবনময়ী পেঁজামেঘ
ডকে তোলা হচ্ছে কতজনকে?

ডালপালা নিয়ে বৈষম্য বেড়েছে
                  নাশকতা জরাগ্রস্ত নয় !
দুখের ভেতর শোকের ভেতর
ডাক্তারখানায় ডাংগুলি খেলা !

চক্ষুষ্মানরাও ধেইধেই করে নাচে
                        ছুকরিদের সাথে
                        চক্ষুলজ্জা নেই !
অপরিহার্য কাতরতায়_
                  চমকে চমকে উঠি।



ভয়াবহ পাঠ


তুমিতো রহস্যউপন্যাস
                 তাই সর্বনাশ!

মনোগ্রাহী হয়ে পাতা উল্টাতে উল্টাতে
রোমাঞ্চকর উদ্যান থেকে ঘুরে এসে
পরের অধ্যায়ে_
            ভয়াবহ দৃশ্য_ বীভৎসরস!

এত শাস্ত্র এত অক্ষরশাসিত দিন
ঋণ করে চলি!
লিপিচাতুর্যের অলোকশূন্যতা নিয়ে
দ্বৈতসংগীতে_
গলা ছেড়ে কোনো গান গাওয়া যায় না!

কপোতবৃত্তির লোকদের জন্য তা আরও হয়ে ওঠে
ভয়াবহ পাঠ!


তাতানো শুচি


আগুনমুখো  পথে পা বাড়ালে
               _প্রকম্পন হবে!

নদীও বাঁধ ভেঙে উপচে পড়বে
হিমবৃত্ত থেকে দূরে গিয়ে_
চাপশক্তি নিয়ে তাপশক্তি সঞ্চয় করে
অবাধ্য হবে_
নির্দিষ্ট সীমানা নিয়ে থাকতে পারবে না!

নিজের মাঝে নিজের অগ্নিকুণ্ড_
তাতানো শুচি মাতানো বিদ্যুদ্বাহী
সেই প্রজ্জ্বলন কীভাবে নিভাবে?



সোনাচড়াই


গেরুয়া পোশাক পরে এসে
কোন্ সে গৃহশিক্ষক গৃহদাহ তৈরি করে দিল?
                        গৃহবিবাদের চেয়ে গৃহনাশ
                        আর পিছু পিছু সর্বনাশ !


গৃহসজ্জা থেকে এক এক করে পর্দা খসে যায়
পুড়ে যায় কিছু অ্যালবাম!
অর্থালংকার তৈরি করে যে অলংকার_
                          তা আসলে অঙ্গার!


গৃহ-অভ্যন্তর থেকে সোনাচড়াই পালিয়ে যায়_


          ডুবোচর

     
আটকে পড়ি বারবার ডুবোচরে
ঘরমুখী আমি!
            কোনখানে গিয়ে থামি?

সারারাত ডুবোচরে আটকে থাকবো?
রাতের নিকষ কালো!
আলোহীন করে রাখে!
কথা দিয়েছিলাম আমিও মাকে_
              পৌঁছে যাবো দিনে দিনে
                            আমারই গ্রামে!
ঠিকানা রয়েছে_ পাটা  গিয়ে সেখানেই থামে
উদ্ধার করবো নিজেদের জমিটাকে
যা আছে বন্ধক মহাজন-ঋণে!

মরানদী_ জল নেই নিরবধি
সময়মত হয়না ড্রেজিং
বারবার মাঝপথে আটকে যায় ফেরি!
                         পথে হয় দেরি!
জোয়ারের পানি_
কখন যে আসবে ? তা-কি জানি?
থাকি অপেক্ষায়_
রাত্রিতে কোন্ রেখা আলো দেখায়!

Post a Comment

0 Comments