সম্প্রতি বাংলাদেশের এক কবিকে নিয়ে ভারতের
বাংলাভাষী সাহিত্যপাড়ায় শুরু হয়েছে তুমুল হৈ চৈ। তাঁর লেখা নিয়ে চলছে আলোচনা, সমালোচনা,
তর্ক-বিতর্ক। বয়সে তরুণ এই কবির নাম সাম্য রাইয়ান। সম্প্রতি তাকে নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে
ড. আশুতোষ বিশ্বাস সম্পাদিত সাহিত্যের আলোকপত্র ‘তারারা’ বিশেষ সংখ্যা।
আলিপুরদুয়ারের ক্লাউড লাইন হলে ৬ আগস্ট
২০২৩ খ্রিস্টাব্দ তারিখে (রোববার) মহাসমারোহে প্রকাশিত হয়েছে সাহিত্যের আলোকপত্র ‘তারারা’ পত্রিকার ‘সাম্য রাইয়ান বিশেষ সংখ্যা’। পত্রিকার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন ড. সৌরভ
চক্রবর্তী (চেয়ারম্যান, শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ডেভলপমেন্ট অথরিটি), বঙ্গরত্ন প্রমোদ
নাথ, সুধাংশু বিশ্বাস (প্রধান শিক্ষক ম্যাক উইলিয়ম হাই স্কুল), রণজিত মালাকার (বিশিষ্ট
কবি), শ্রবণ মণ্ডল (অধ্যাপক আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়), গোবিন্দ রাজবংশী (বিশিষ্ট
অধ্যাপক), অজিত নাথ (বিশিষ্ট শিক্ষক) প্রমুখ।
কবি, সম্পাদক, প্রাবন্ধিক সাম্য রাইয়ান
বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার অধিবাসী। সাহিত্যচর্চা এবং লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের এই
মুহূর্তের উজ্জ্বল এবং বিপরীত ধারার কবি হিসেবে এপার ওপার বাংলায় বহুল চর্চিত নন্দিত-কবিনাম।
এই তরুণ বয়সেই নেই-নেই করে দশটিরও বেশি গ্রন্থ-রচয়িতা। গ্রন্থ রচনার নিরিখে সংখ্যাধিক্য
না হলেও এই তরুণ জ্যোতিষ্কের আলোকপ্রভা ছড়িয়ে পড়েছে স্বদেশ থেকে বিদেশের মাটিতে।
ইতিমধ্যেই সাম্য রাইয়ানের ‘হলুদ পাহাড়’ কাব্যগ্রন্থের কলকাতা সংস্করণ
হাতে পেয়ে গেছে পশ্চিমবাংলার কবিতাপ্রেমী মানুষ। তাঁর লেখা কবিতা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ
থেকে নতুন কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। এর আগে আমেরিকা থেকে প্রকাশিত
সাহিত্যপত্র ‘মনমানচিত্র’ তাকে নিয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ
করেছিলো।
‘তারারা’ পত্রিকার এই বিশেষ সংখ্যায়
প্রাবন্ধিকগণ সাম্য রাইয়ানের কবিতার ভেতরে লুকিয়ে থাকা শব্দ-গহীন গাঙের অতলে ডুব
দিয়ে তুলে আনতে চেয়েছেন তাঁর কবিত্ব শক্তির অপরিমেয় বহুমাত্রিকতা এবং তাঁর রচনার
অনন্য বাঁকফেরা চৈতন্যে প্রবাহিত চোরাস্রোতকে পাঠক দরবারে উন্মুক্ত করে দেওয়ার প্রয়াস
রেখেছেন তাদের প্রবন্ধে। এপার ওপার বাংলার প্রথিতযশা কবি, প্রাবন্ধিক, কাব্য সমালোচক
সোৎসাহে কলম ধরেছেন— তাঁর কবিতার পাঠ এবং পাঠকমুগ্ধতার
রহস্যময় প্রেক্ষিতটিকে ছুঁয়ে যেতে চেয়েছেন। প্রতিটি রচনাই গবেষণাধর্মী হয়ে উঠেছে।
এ সংখ্যা শুরু হয়েছে সাম্য রাইয়ানকে উৎসর্গীকৃত নির্বাচিত কবিতাগুচ্ছ দিয়ে। যা লিখেছেন,
ইয়ার ইগনিয়াস, রুবেল সরকার, সাজ্জাদ সাঈফ, উপল বড়ুয়া ও গিয়াস গালিব৷ এরপর ছাপা
হয়েছে সাম্য রাইয়ানের একগুচ্ছ অপ্রকাশিক কবিতা।
সাক্ষাৎকার বিভাগে লাবণী মন্ডল, সাইদুর
রহমান সাগর, হিম ঋতব্রত, আবু জাফর সৈকত ও অন্যান্যের নেয়া সাম্য রাইয়ানের ছয়টি সাক্ষাৎকার
ছাপা হয়েছে।
সাম্য রাইয়ানের কবিতা ও গদ্য প্রসঙ্গে
গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ লিখেছেন, ড. অমিতাভ কর, ড. সুশান্ত চৌধুরী, ড. মধুমঙ্গল ভট্টাচার্য,
ড. আশুতোষ বিশ্বাস, ড. অনিন্দ্য রায়, ড. বিশ্বম্ভর মন্ডল, হরিৎ বন্দোপাধ্যায়, ধীমান
ব্রহ্মচারী, স্বাগতা বিশ্বাস, সন্দীপন দাস৷ সাম্য রাইয়ানের লিটলম্যাগ অ্যাক্টিভিটিজ
প্রসঙ্গে প্রবন্ধ লিখেছেন, অনুপ মুখোপাধ্যায় ও আহমেদ মওদুদ। সাম্য রাইয়ানের গ্রন্থ
পর্যালোচনা লিখেছেন, ড. অমিতাভ রায়, ড. প্রবাল চক্রবর্তী, অবন্তিকা সেন, ফেরদৌস লিপি,
সব্যসাচী মজুমদার, সুবীর সরকার, সৈয়দ আহসান কবীর, তানজিন তামান্না, অমিতাভ অরণ্য,
সুতপা রায়, সাজ্জাদ সুমন, শামীমফারুক, বিপুল বিশ্বাশ, আইরিন সুলতানা ও আহমেদ তানভীর।
সাম্য রাইয়ানের সাহিত্যের পাঠ অনুভব লিখেছেন, কৌশিক সেন, মাহ্দী আনাম, শামীম সৈকত
ও হোসাইন মাইকেল।
‘তারারা’ সম্পাদক জানিয়েছেন— ‘প্রায় দুবছরের অনলস প্রয়াসে এই পত্রিকাগোষ্ঠী এই
বিশেষ সংখ্যাটিকে দাঁড় করাতে পেরেছেন’। এগারোটি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ,
তাঁর কাব্যগ্রন্থের বহুকৌণিক পনেরোটি বিশ্লেষণ, পাঠ অনুভব যেমন আছে তেমনি কবি সাম্য
রাইয়ানকে উৎসর্গীকৃত নির্বাচিত কবিতা ছাড়াও জবরদস্ত অনেকগুলি সাক্ষাৎকার এই সংখ্যায়
রাখা হয়েছে।
একশত আটষট্টি পৃষ্ঠার এই সংখ্যাটির দৃষ্টিনন্দন
প্রচ্ছদ এঁকেছেন দয়াময় বন্দ্যোপাধ্যায়। পত্রিকাটির দপ্তর সুভাষিণী পল্লি, মানবাজার,
পুরুলিয়া হলেও এই প্রথম ‘তারারা’ পত্রিকার এই বিশেষ সংখ্যার
আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ আলিপুরদুয়ারের সারস্বত সুধী-প্রাজ্ঞ মণ্ডলীর করস্পর্শে সম্পন্ন
হল। পত্রিকার সম্পাদক আশুতোষ বিশ্বাস, সহ সম্পাদক স্বাগতা বিশ্বাস। পত্রিকার সংগ্রহমূল্য
মাত্র দুইশত টাকা।
তারারা পত্রিকার ওয়েবসাইট:
www.tararapatrika.com
0 Comments