মাহফুজ রহমান এর কবিতা ‘পৃথিবী অসুস্থ হলে ঈশ্বর পালিয়ে যায়’ ও অন্যান্য

Mahfuz Rahman's poem 'When the world is sick, God flees' and others


পৃথিবী অসুস্থ হলে ঈশ্বর পালিয়ে যায়

 

ধর্মগ্রন্থের পাতায় পাতায়

ঈশ্বরের মৃত্যু লেখা থাকেনা;

মানুষের হাতে কিংবা বিশ্বাসেই তাঁর-জন্ম-মৃত্যু-অমরত্ব!


তবু, যখন তাঁর ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায় 

তখন কোথায় সে মুখ লুকায়?

পোড়া মুখ কাকে দেখায়?


আকাশে আজ পৃথিবীর ক্রোধ আর হিংসার আগুন।

মানুষ মানুষের দিকে সন্দেহ চোখে তাকায়;

 এমন দিনে সন্ন্যাসীরাও ভয়ে পালিয়ে বেড়ায়। 

 আর ক'দিন আগেই যে দুধ ভাত খেতো,

আজ সে ধর্মের রক্ষক; তলোয়ার নিয়ে লাফিয়ে পড়ে উম্মাদের মতো।


কুনো ব্যাঙ লাফ দেয় অকাল বৃষ্টি পেলে, 

সাত আসমানে যে থাকে হয়তো তাকে দেখবে বলে।


প্রতিমার অপূর্ণ রূপও খসে পড়ছে মগজের ইশারায়,

সমস্ত ঈশ্বর আজ দল বেধে ডুকরে মরে;

বহমান পৃথিবীতে চলে জগৎ বিনাশী কান্না।





আলিঙ্গন 


একবার খুলে দাও তোমার দজলা ফোরাত

আমি চুম দিয়ে শুষে নেব বিস্ময়। 

যদি সামন্তিয় কায়দায় বর্গা খাটি আজিবন।

তবে কি মিশে যাব মোহনায়?

তুমি তো বোঝ-

ধ্যান ভাঙা মুনী আজিবন বেওয়ারিশ বাদশা!

মোহ হীন নৈরাজ্যের প্রেমিক।





প্রস্থান 


ঈশ্বর পালের গদি ঘরে নিওনা আমায়,

আমি যখন মরে যাবো

কোন হিসেব সেখানে নেই আমার 

জেনে রেখ নৈসর্গের এ মহাজগৎ। 


সামনের এবং পেছনের সবকিছুই 

আমার বিকাশ ও বিনাশ। 

অর্কেস্ট্রার সুর আমাকে যতটা বিমোহিত করে 

তেমনটিও পারেনি সেই পুরনো রাখাল 

যার সুর ছিল আধ্যাত্মিক এবং অপার্থিব। 


এমনকি সে যুবক 

কাঠি হাতে খুলে দিত অন্ধের দ্বার

অথবা হাজারে হাজারে প্রাচীন গ্রন্থজ্ঞানী মহামানব। 

সৃস্টি এবং স্রস্টার সম্পর্ক যখন শুধুই দেয়া এবং নেয়া।


আমার অবাধ্য মন পরে থাকবে পৃথিবীর ঘাসে

জন্মাবধি দেখেছি জননীর সমুদ্র গভীর চোখ

সর্বগ্রাসী ক্ষুধা তবু থামেনি –

আমি যখন মরে যাবো

এক জোড়া চোখ শুধু নিয়ে যাবো 

অসীমের অন্ধকারে –

 


Post a Comment

0 Comments