মো. নাজাতুল হক চৌধুরী’র কবিতা

Poetry of Md. Najatul Haque Chowdhury


ভিক্ষুক ক্রীতদাস


প্রাক্তন প্রেয়সী, 

প্রাক্তন একটি জলন্ত আগ্নেগিরি—

ভিসুভিয়াস বা অসুস্থ শব্দ! তুমি কেমন আছো?

এখনো ফিনিক্স পাখির মতো পুড়ো? 

আমি তো নিরো নই,

বেহালা বাজাইনি কোনোদিন,

তুমি ৬৪ খ্রিস্টাব্দের ট্রয় হচ্ছো কেনো!

—-ট্রয় হয়ো না প্লীজ ,বরং সাম্রাজ্যবাদী ঈশ্বরী হও। সেজদা করি!


কম্পাসে তুলে ধরি নাভির নীচের জুঁইফুল  —গভীরতা,

যোনিতে ঢেলে দিই আমার ঈমান,নগর,সভ্যতা

ক্লিটরিসে লিখতে থাকি আমার যাবতীয় দুঃখ অভিমান,সুত্র।

পিথাগোরাস হই।


তুমি মেলে ধরো নগ্ন ঊরু, —গ্রাফিতি!  

তোমার বুকের তিল যখন লাইটহাউজ অব আলেকজেন্দ্রিয়া,

স্তন বেয়ে নেমে আসে পার্সিয়ান রেড ওয়াইন,মাংস ডুবানো সমুদ্র।  ,

ভীষণ দুর্ভিক্ষে মাংসের নবান্ন।   —সুগন্ধ। 

আমার রক্তে মেসোপটেমিয়া, শীরার ভেতর মহাকাল,দ্রোহ।

আমি তখন তৃষ্ণার্ত দেবতা- দরিদ্র নাভিক।

ফিনিকে মৃত্যু। 

  

আচ্ছা আজকাল যে সুপুরুষের ঠোঁটে ঠোঁট রেখে

মোমের মতো গলে যাও, 

শিখাও ভূ-বিদ্যা- জ্যামিতি এবং

ঠিক কতটুকু নীচে ধরতে হয় ২০৭তম হাড়,বিশেষ অর্গান।

সে কি আবিষ্কার করেছে সেই গোপন তিল, অথবা 

ঠিক কতটা উষ্ণতায় ঝড় উঠে তোমার উত্তাল সমুদ্রে- 

কতটা দক্ষ নাভিক সে? কতকাল ভেসে থাকে!

কতটা কাঙাল তোমার নোনা জলের?


আচ্ছা ঈশ্বরী তুমি কি আদিপাপ নাকি পিংক ফ্লয়েড? 

কতটা সংসারী সংসারহীন! 

কতটা ভালোবাসা জোটে পাতে,কতটা ক্ষুধার্ত, কতটা উদাস!

কতটা মনে পড়ে আদিকালের তোমার প্রিয় “ভিক্ষুক ক্রীতদাস”।





পত্র দিও 


তুমি কেমন আছো প্রিয় সৃতির প্রতারণা? 

আজকাল কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখো তোমার ইলম, হ্রদয়-সংসার এবং মখমলি পা! 

একজোড়া অসাম্প্রদায়িক ঠোঁটের অভাবে এখন বুঝি আর নূপুর পরো না! 

ঠিক কতদিন হলো তোমার পায়ে কেউ চুমু খায় না!    —খায়?


আশ্চর্য আজকাল ওসব হিসেব থাকে না, থাকে একটি তন্দ্রাচ্ছন্ন  মৃত্যু   —-অন্ধকার।

তুমি তখন মিশরিয় কায়দায় মেগাবাইট পুড়িয়ে উজ্জল হতে থাকো। 

গোলাপের অপরাধ কাটিয়ে তোমার নাভি হয়ে উঠে আটলান্টাস। মাংসের রাজনীতি।


কাকে কাকে দিলে সেই সমস্ত আদিম কলা-কৌশল এবং  ব্লাকম্যাজিক,

যা তোমাকে ভিসুভিয়াস বানাতো। যা শিখিয়ে ছিলাম আমি, 

—মানে মহাকালের চরম উপহাস। 

উপহাসে এখনো রক্ত জবার মতো হাসো?


ইদানীং তুমি বিলীন হচ্ছো, সংসারী সংসারহীন হচ্ছো     

—তোমার সু-পুরুষ ও নাকি কা-পুরুষ হচ্ছে!

তুমি কার হচ্ছো? সেও কি তোমার হচ্ছে!  —গিনিপিগ।


যেমন আমি ছিলাম—  সোডিয়াম সন্ধ্যায় নেশাতুর ফিলিস্তিনি প্রেমিক। 

যে ঈমান এনেছিলো তোমার ঊরুর ফাঁকে,অন্ধকারে।


তুমি জানালে,কোন কৌশলে আবাবিলের ডানায় হতে পারতো ফুল। চুমুতে ক্যান্সারের নিরাময়। নাভির নীচের গোপন নদী  —-সর্গিও শরাব। এবং জানিয়েছিলে ফ্রান্সের সেই সমস্ত অর্গান যাদের “না” বলে তুমি এসেছ আমার কাছে। বললে, “তোমার সাহস দেখাও নাভিক —সফেদ সুভাষ ছরাও।” তোমার শীৎকার আমার আয়ু।


আমি ঈমান এনেছিলাম তোমার সমস্তে। 

তারপর বনেধি কাফের,সময়ের ষড়যন্ত্রে।  


এখন তোমাকে আর পাইনা— আমাকে পাইনা।

হ্যালুসিনেসন হয়না! স্বপ্ন অথবা স্বপ্নদোষও না।

হয় কেবল স্লিপিং অ্যাপেনিয়া—- 

মৃত্যুর পাশ থেকে বলি, “তোমার যৌনিতে তলিয়ে যাওয়া আমার

 “নগর-সভ্যতা-ঈমান” ওরা কেমন আছে?”

অথবা তুমি কেমন আছো? পত্র দিও। 






অন্তমূর্খীর প্রেম


আমি জানি,

যে মেয়েটা এখন আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে

সে তার বুকের খুব গভীরে লুকিয়ে রেখেছে আমাকে।

আমাদের চোখাচোখি হলেই সে চোখ নামিয়ে নিবে,

–– লজ্জা।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমার সাথে কথা বলতে থাকার তিব্র একটা ইচ্ছে পুষে,

আমার সামনে চুপচাপ বসে থাকবে

—ইতস্তত।

সে একটি জীবন পার করে দিবে,

অথচ কোনোদিন আমার সামনে এসে বলতে পারবে না

“ভালোবাসি”।    —-জড়তা! ভয়! সে তো শ্যামলা।

আমাকে ভালোবাসতে বাসতে মেয়েটির বিয়ে ঠিক হয়ে যাবে,

সে তার বাবাকে বলতে পারবে না,

“আমি একজন কে ভালোবাসি বাবা।”  —দুঃসাহস নেই।

মেয়েটির আটপৌড় সংসার হবে, সুখি হবে–

শুধু আমি হবো না।

সে কোনোদিন তার স্বামীকে মুখ ফসকে  জিজ্ঞেস করতে পারবে না,

“আমার একটা প্রেম হয়েছিলো, —--ওটাকে কি প্রেম বলে?





অধিকার


আকাশের দিকে তাকিয়ে অধিকার চাইতে চাইতে

আমি বুক পেতে দিবো —

রক্তাত্ব হবো,

মরে যাবো।

যে ছয় জোড়া চোখ আমাকে ঘুমুতে দিচ্ছে না,

চোখ বন্ধ করলে কেঁদে উঠছে পুরোটা মস্তিষ্ক।

আমি তাদেরকে স্বরণ করে

লিখে ফেলবো কয়েকটি কবিতা,

হত্যা করবো, নরপশু জল্লাদ ছাত্রলীগ।

পনেরো জুলাইয়ের অন্ধকারে ঠাঁসা কালো রাত,

নরপিশাচের উল্লাস,আমার ভাই বোনের আর্তনাদ,

আমি ভুলবো না —

এই জল্লাদে ভরা দেশ আমার না।

আমি রাজাকার নই,

স্বৈরাচার রাজ্যে আমি বাঁচতে চাই না,

রক্ত ডরাই না

আমি মানচিত্র খাবো,

আমার অধিকার চাই।

আমি অধিকার চাই।





মো. নাজাতুল হক চৌধুরী


Post a Comment

0 Comments