সাহাব উদ্দিন হিজল এর ‘দুঃসময়’ ও অন্যান্য কবিতা

Sahab Uddin Hizal's 'Dushsamy' and other poems


তোমার ইতিহাস


তোমার সামনে তখন রঙ্গিন আলো

চোখ ঝলসানো বেসামাল পদভারে

মাটি দেবে যায় মাটির নিচে

তাই যন্ত্রযানে হয় উঠতে—উড়তে।


পাখায় পাখা লাগিয়ে শূন্য ওজনে

উর্ধ্বে আরও উর্ধ্বে উঠতে উঠতে

প্রেমের আলো জ¦লে উঠলে—তুমি

অঙ্গার আলোক ছড়ালে পথের ধারে।


এই তো তোমার মাটিতে পড়ার ইতিহাস

এখন আর ঘৃণা লাগে না কোনো মাটি

পা-যাবেনা বর্ণবাদের নোংড়া কাদায়

টেনে তুলতেউ হাত বাড়াতে হয় না।


বোধের জানলা খোলা থাকলেও, তবু

শূন্যে উড়তে দুন্দুভি কেঁপে ওঠে—উঠবেই।


 


দুঃসময়-১


সময়ের বড়ো আকাল

চারিদিকে আলোহীন দুঃসময়;

অভাব কবিতা সময়ের

তাল লয়ের পথ ভুলে

কণ্টক ভালোবাসা দিশা খোঁজে।

আবার সামান্য স্বার্থেই কেউ

কবিতার ছন্দ বিকিয়ে ফেলে—

পথ হারিয়ে কাদায় পড়লেও

গা চুলবুল করে না,

পচা ভাগাড়ে পা রেখে

সুস্বাস্থ্যের ধুয়া গায়।

সদাগর কালচার বুকে আগলে

উচ্চ লম্ফে হাসে—

বাহ্! হাসে বোয়াল-চোয়ালে।





এক তরুণের গল্প

(অকাল প্রয়াত অনুজ ‘আবু তালেব’ স্মরণে)


বৃক্ষলতা গড়ন—বুদ্ধি-বিদ্যায় সমৃদ্ধ তরুণ

আশার আলো কুহুতান, ঝর্নাধারা-স্বচ্ছ উচ্ছ্বাস

আর রিমঝিম বৃষ্টির নূপুর-নিক্বণ সুবাস

অবারিত বায়ু বটমূল উচ্চাসনে উত্তোরণ;

নিগূঢ় আঁধারের বিরুদ্ধে সমতার উচ্চারণ—

জন্মভূমির সুবাসিত পলিমাটির উষ্ণাদেশ

বুকে সেটে নিয়ে গড়বে বিন্যস্ত স্বাপ্নিক স্বদেশ

আকাশ পথে হবে গর্বিত হিমালয় উচ্চাসন।


সদানন্দ প্রাজ্ঞ তরুণ হঠাৎ ঝিমিয়ে পড়লো

আষাঢ়েই লতা-পাতা-প্রশাখা হয়ে গেল পা-ুর

আকাক্সক্ষা-উর্বর আকাশে প্রবল বর্ষণ-মধুর 

সঞ্জিবনী নির্যাস সেবা দ্রুত মানোন্নয়ন হলো।

তবু জীবন প্রবাহের আশালতা হলো বিকার

সুখৈশ্বর্য ছেড়েছুড়ে সূচি বন্ধ করলো সেবার!




উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের কলতান


সবুজের সমারোহ—উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের কলতানে

কবির কলম লিখে চলে সুবাসিত কুহুতান

অজ¯্র পুষ্প প্রজাপতি-ডানা মেলে খেলা করে

তাই তট বরাবর মেঠোপথ ছেয়েগেছে স্বর্ণলতা।


পাতারা  হাতে হাত রেখে সৃষ্টি করে ছায়াপথ

প্রকৃষ্ঠরা কলকন্ঠে নৃত্যগীত উৎসবে মাতে

অপচ্ছায়া পরাস্ত করতে পারে না

সাদাসাদা পালকের সোহাগী শুদ্ধস্বর।


পরাক্রমশালী নরখাদকরা ভেসে যায় খর¯্রােতে—

মাছের মায়ের পুত্রশোকের কোলে কোলে

সজীব নিঃশ্বাসের দাপট এখানে কবিতা লেখে

পাহাড়ের জুমচাষ, দোয়েলের চক্ষু-চঞ্চু-পালক। 





অভ্যর্থনা


থেমে গেছে চলমান পাখির ডানা

সে এখন টার্গেট পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে

এটা আকাক্সিক্ষত একটি ছায়াতল।

সবাই এখানে পৌঁছুতে পারে না—

প্রাণের প্রাবল্য ঝিমিয়ে পড়ে অবলীলায়

¯্রােতের গতি হারিয়ে যায় ঢেউয়ের তালে।

স্বচ্ছ আকাশে অজ¯্র উজ্জ্বল তারকা

মিটিমিটি হাসছে—অভ্যর্থনায় সিক্ত করছে।

ফুলের বাগান বাহারি পাপড়ি নিয়ে 

ছুটে এসেছে সময়ের ¯্রােতে ভাসতে।

পাহাড়ী ঝরনা অবলীলায় আসন পেতেছে

আকাবাঁকা পথ রেখে হিজল বনে—

যেখানে পাখি আর তারা হাসে

ঝরনা আর সাগর নাচে

নাচে বিদ্যুৎ-আলো; বৃষ্টির

টার্গেট পয়েন্টে উচ্চকিত বিজয়মাল্য পরে।


Post a Comment

0 Comments