হীরক বন্দ্যোপাধ্যায় এর ‘চন্দ্রবিন্দু রক্তদাগ’ ও অন্যান্য ১৬ কবিতা

Hirak Bandyopadhyay's 'Chandrabindu Rakta Daag' and 16 other poems


বাবা

ফোনে সব কথা বলা যায়  না
চিঠিতেও কি সব বলা যায়?
আমি জানি  না,তুমি জানো?
হঠাৎ করে সুখ এলে যেমন হয় 
হঠাৎ করে দুঃখ এলে কেমন
এর পরের শব্দ অক্ষর আর পড়া যায় না
আবেগ।ঝাপসা সব ঝাপসা  লাগে।
অক্ষরের গায়ে জল পড়লে  যেমন  হয় 
চোখের জল... একশ তে এক শ আবেগ...
বাবা বাবু বাবাই যে নামেই ডাকি না কেন
শব্দ মাত্রা অক্ষর উপমা উৎপ্রেক্ষা কম পড়ে  যায় 
জানি জন্ম আকস্মিক বেপথু মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী 
তার মাঝে তুমি সত্য  নিত্য তুমি  পিতা হি পরমন্তপ...







শবসাধনা


নিজের ভেতরে ভৈরবী আর মালকোষ

আগলে রেখেছো শিবরঞ্জনী ঝঞ্ঝা 

উঠে এলো যত কড়ি ও কমলে সব দোষ

তোমার সঙ্গে  মিল দিতে তবু মন যায়  
   
তোমার সঙ্গে  মিল দিতে তবু মন চায় 

রাগ জীবনের সব চেয়ে বেশি জরুরি 
আঘাতে আঘাতে রৌদ্রপাতের মহিমা 
পারাপারহীন ভেসে থাকে জিন পরী
শুদ্ধ নি এর সঙ্গে মিশেছে কড়ি মা


এমন ই তো হয় শেকড় ছড়ায়  মাটিতে

এমন ই তো হল তোমার আমার জীবনে 

কত সহজেই দেয়া নেওয়া সারা

স্বপ্নের মায়া তছনছ সম্পর্কের হননে 


পাথর তবে  কি গড়িয়ে গেছিল জলে
শাখা নেই তবু আঁকড়ে ধরেছি পল্লব 
ধ্রুপদ ধামারে এমন কথায় বলে
প্রতি মুহূর্ত্তে খুঁড়ে খুঁড়ে দেখি সেই শব...

আজ প্রতি মুহূর্ত্তে খুঁড়ে খুঁড়ে দেখি সেই শব...







দূরের বর্ষা 


দূরের বর্ষা তুমি 
তুমি  এসে  জানালায়   দাঁড়ালে 
জানলাও অসাড় নয় 
অসাড় এখন শুধু ভিজে যাওয়া টুকু 

ভিজে ভিজে কতবার বৃষ্টি হয়েছি 
দেখেছি বৃষ্টির চলে যাওয়া টুকু 

যাওয়া যে এতোই কঠিন 
পাওয়ার চেয়েও তার তীব্র অভিলাষা 

এখন সে তীব্র বারিধারা ম্লান হয়ে এলো
ম্লান হলো ঝর ঝর ঝরে যাওয়া টুকু 

মানুষ বোঝেনা তবু দিগন্ত ডাকে 

সমস্ত পোষাক খুলে চেনা যায় তাকে 






রীতিনীতি

তোমরা তোমাদের একান্ত রীতিনীতি নিয়ে থাকো
আমি রাস্তা  থেকে  রাস্তায় ময়দানের মধ্যে  
হেঁটে দেখেছি মানুষ  অংশত বড়ো ভীতু

ন ইলে  ঢাকঢোল পিটিয়ে একদিন তো 
তারাই দেখেছে সতীদাহের মতো হাড়হিম ঘটনা
দেখেছে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ ভীষ্ম স্বয়ং 

তাহলে এসব ই  বুঝি বীরত্বের নমুনা

আর ঐতো দুধে‌র ছেলে অভিমন্যু্ 

তাকেও বধ করার জন্য এত আয়োজন 
চারিদিকে শুধু  জয়দ্রথের দল

বারবার  মানুষের কাছে গিয়ে আমি দেখেছি
মেরুদন্ডহীন মানবতা অংশত বাঁকা 
তাই মিথ্যে বলে 
অসহায় সময় দেয় 
শেষপর্যন্ত নীরবতা নিরাকার হয়ে 
খুঁটে খায় করুণাপ্রসাদ...

  




শ্রীচরণকমলেষু 

শ্রীচরণকমলেষু, তোমাকে  যখন ই লিখতে বসি
তখন ই লাবণ্যকাকিমা এসে কান মুলে দেন
গোপন খাতার ফাঁকে যে পালক লুকানো ছিল
এতদিন, কী আশ্চর্য সেখানে সুধামাসি
হাই তুলে পাশ ফিরে শোন

তোমার লাগানো যত ফুল সকল ই  গোলাপ
লাল নীল  সাদা 
কী দিয়ে  যে শুরু করি,ভুলবশতঃ নয়  
সতত ভুল, ভুল  হয়ে  যায় 

নাহলে বিমলা দিদি ভাই সেও এসে বলে
কোমরে দড়ি বেঁধে উঠে পড়  গাছে
 বিন্দু বিন্দু রস এসে পড়বে হাঁড়িতে আবার

শুধু  কুমুকে কুমুদি বলিনা এখন

তবু সে কি ধরা দেয় 
মাঝে মাঝে  বাইকের পিছনে এসে বসে 

সে বলে কুশলকথা,বলে ,এইতো হাটগোবিন্দপুর 
আজ হরতাল, চল...

এস এস সি  দিয়ে  এখন সে বাংলার মেজ দিদিমণি 

শুরু করেছিলাম মাঝখান থেকে 
তাই
শেষ হইয়াও  হইল না শেষ


                                               ইতি...






তোমার কাছে 

এই যে  তোমার কাছে এসে গান গেয়ে গেলাম
একদিন এই গান আর গান থাকবে না
এই যে হাতে ধরে লিখছি 
এই লেখার আর কোনো মানে থাকবে না

এই যে দিনকেদিন ঘুমোচ্ছি জেগে ওঠার জন্য 
এই যে  জেগে ওঠা নিসর্গ কৃষ্ণচূড়ার উদ্গীরণ 
সমস্ত ই ঘুমের দেশে তলিয়ে যাওয়ার জন্য 
এইযে অপর হিংসা দ্বেষ নিন্দা প্রশংসা কিচ্ছুটি থাকবে না...

তবু কেন নতজানু হতে মন চায়না এখনোঅবিশ্বাস্য 
হলেও সত্যি, এই  চাওয়া টুকুও একদিন 
থাকবে না, আর এই কথা আজ ভেবে দেখো সুলতা 
এসব যদি না থাকত 
তাহলে তুমি আমি আমরা বাঁচতাম কি নিয়ে...






ক্লেদ

লোকটা কা পড় কাচতে গিয়ে কেচে ফেলল নিজেকে 
এখন তার কি অবস্থা 
কাপড়ের মতোই ভিজে চুপচুপে
শুকনো হলেও কুঁচকে থাকবে চিরটাকাল কাপড়ের
মতোই ,সারাক্ষণ সে দেখবে অন্তরীক্ষে চিল শকুন 
জলের ভিতর জলকন্যা 
এখন সে বাড়ি ফিরবে কি করে 
হায়নার হাততালি দিতে দিতে রাস্তায় নেমেছে জনগণ
ধনুকের মতো বেঁকে পিঠ বেয়ে নামছে জলধারা
একদিন কৌতূহল বশে সে লিপ্ত হয়েছিল 
ঐ কাজে ,ঘুনাক্ষরেও সে জানতে পারেনি 
এত ক্লেদ জমে ছিল তার গায়ে...







সমস্ত  কিছু দিতে হবে

তোকে কয়েক লাইনের শরীর দিয়েছি শুধু
কবিতা কল্পনালতা আর সেই তুই কিনা
এতো সহজেই আঁটোসাটো যুবতী হয়ে উঠলি
কী বলি  কী বলি 
এখন সমুদ্রের কাছে গেলেও সমুদ্রহীনতার কথা ভাবায় আমায়
এখন আকাশ কালো মেঘের আড়ালে দেখি কোনও ভরভরন্ত নদী নেই 

সত্যি বলতে কি দরজা এখন আধেক খোলা
বন্ধ হয় না  কখনো 
সকাল বিকেল সন্ধে রাত্রি গোধূলি...

সত্যি করে বলতো দেখি
এ পৃথিবীর ভার কাঁধে তুলে নিতে
তুই কি তাহলে আবার এলি

এবার ফিরে এলে আমায় শেখাস ক্ষমা 
উদাসীন পর্যটন 
মানুষের বেঁচে থাকার রসদ হিমকুসুমদের মায়া

কত  কি যে হয়না পাওয়া  মাত্র একটা জীবনে 

এই দিনগত ক্ষয় নিয়ে এলোমেলো অলীক দর্পনে 

কিছুই পারিনি দিতে,কয়েক লাইনের শরীর দিয়েছি শুধু,
তাবলে সব... সব কিছু দিয়ে যাবি তুই...





সুখের ওপারে দুঃখ 


সুখের ওপারে আয়নায় আজ দুঃখ পড়ে আছে  
নির্বিকার, কান্নার ধ্বনির মতো তার অপ্রাকৃত চলাচল
অভুতপূর্ব অভিঘাতে আয়নার বহুকৌনিকতায় দেখছে মহাকাল,
এখন স্বপ্নগুলো ছুটে  যায় বিপন্ন বিপ্লবের দিকে আর নিজেকে নিঃস্ব লাগে

জীবন যদি ধ্রবক হয় তাহলে আকুতি অন্তহীন 
শূন্যতার বিস্তার নিয়ে ভালবাসার ইচ্ছেগুলি সর্বদা বিভাজ্য,
ফলত অনুরাগ পূর্বরাগে ছেয়ে গেল মেঘ
খুব মিহি চিত্রলিপি নিয়ে অবগাহনের পথে
ইচ্ছেপাখির  পাঁচালি পাশে নীল উপত্যকা 
সামনে ধীর স্রোতে প্রবাহিত নদী 

তবু সেই সুখের ওপারে দুঃখ 
পাপের বদলা পাপ
পুণ্যের বদলে প্রসারিত ঘুমের দেশ 

এখন রাস্তায় কোনও জনপ্রাণী নেই
এমনকি চলনে বলনে এমন এক নির্জনতা 
যা মানুষকে দয়ালু হতে শেখায় 

তবু কেন কান্নার শব্দে ভেঙে পড়ছে রেটিনা
মানষ তার আত্মজীবনীতে কখনোই একথা লেখেনা  






বিপ্রতীপ লতা

আমি কি তোমাকে শুধুই দিয়েছি, দিয়ে গেছি জোনাকির ফুল,
দিইনি কি গাছে গাছে আম্রমুকুল
বৈধ অবৈধ কথা যাই থাক মনে, নীলাভ আলোয় 
ফিনফিনে, তবু আমাদের  অঙ্গরাগ দুঃখের আধার
ঠিক গন্তব্যে নিয়ে গেছে চিনে...

কোলাহল শান্ত করে একদিন ফিরে যেতে হয় 
তবু শ্রবণের কাছে, থাকে নিবিড়তর আকর্ষণ 
ধ্রুপদ ধামার আর যেখানে রয়েছে, লুপ্তগতি 
তমিস্রা অফুরান গুপ্ত বিদ্যা সকলের সূর্যাস্ত বেলায় 

তখন সব স্মৃতি এক  হয়, সব তিথি ভর করে হেলায় ফেলায়...
তুমি শুধু নজিরবিহীন, তুমি শুধু জেগে থাকো নয়নতারা...
আর সব আলোচনা কথোপকথন প্রতিশ্রুতিহীন
শুধু পড়ে থাকে পদধ্বনি আর ইশারা ইঙ্গিতে থাকে ছাই,
ঝরে পড়ে বিপ্রতীপ লতা, দিনগত ক্ষয় নিয়ে মোহ স্তব্ধতা রেখে যায়...
  





চন্দ্রবিন্দু রক্তদাগ 

মহাপৃথিবীর দিকে হাঁটতে হাঁটতে একসময় ল্যাম্পশেড গুলি অন্ধ হয়ে গেল 
রাস্তায় কেউ নেই  
রাত্রির ঘূর্ণাবর্তে মানুষ অসহায় 
তবু বসন্তের অসাধারণ সৌন্দর্য্যের কথা ভেবে 
পিটুইটারি থেকে  মুছে গেল না সে আবহসংগীত 
শক্তিশালী মহাশূণ্যে অনন্ত ব্ল্যাকহোল সেখানে 
ফড়িং ও প্রজাপতি আসে কীকরে...

একথা সেকথা বলার পর অবশিষ্ট কয়েকটি ধ্রুপদী নক্ষত্র ফিসফিস কথা বলছে মহাশূণ্যে 

আসলে মহাকাশ বলতে তখন ওপেনহাইমার 
আসলে প্রত্যেক ব্যক্তির সারাজীবনের স্মৃতি সতত তার ভ্রমণকাহিনী...

ওই যে মায়াফাঁদ বকুনি চোখের ইশারা সম্পাদ্য উপপাদ্যের মতো ক্রীড়াহীন 
একেও কি প্রেম বলা যায়?

নাকি ভেতরে ভেতরে চৈতালি সন্ন্যাস, মস্তিষ্কপ্রদাহ 
তোলপাড় করা মেধাবী শায়ক...

চড়াই উৎরাই বেয়ে হাঁটতে হাঁটতে সারা গায়ে লেগে থাকা হত্যাপ্রবণতা তবু গেল কৈ...
ষড় রিপুর অমোঘ শীৎকার
কল্পগাছের সঙ্গমগাথা যা কিনা
অবশেষ হিসেবে নির্বাণের মহাপৃথিবী...






হাটখোলা হারমোনিয়াম 

সুন্দরী নারীদের চোখে বহু  বহু বছরের অনেক কান্না 
জমে থাকে  আয়ুরেখার পাশেই সৌন্দর্য্যকে পেতে রাখতে ভুলে যান ঈশ্বর 
আসলে এ তার ভুল নয় , ধ্যানমগ্নতা 
তবু বুকের ভেতরে পাথর চাপিয়ে 
সুন্দরীরা কাঁদে না
শুধু মাথা নাড়ে আর সান্ত্বনা দেয় পৃথিবীর তাবৎ
কামুক পুরুষদের 

নিরোর বেহালা বাজাতে বাজাতে তখন সামনের বাড়ির ছেলেটা দেখে ব্রহ্মসঙ্গীত 
ধ্বনি উৎসব ভালবাসার পোড়া গন্ধ,
শুধুই  শরীর তোমার মন নাই কুসুম বলতে  বলতে ক্রমশ 
বাতাস তখন ভারী হয়ে আসে, প্রেমের সকল শস্যদানা শুষে নেয় 
অথচ একথা ঠিক নাগরিক স্ফুলিঙ্গ সেতো আদপে 
তৃষ্ণা উপশমকারীর জন্যেই 

এখন ফুলেরা উড়তে উড়তে ছড়িয়ে দিয়ে  যাচ্ছে 
সবুজ হাওয়া, একসময় সব মেঘ দূরে চলে গেলে
শ্মশান ভস্ম মেখে বিদগ্ধ ময়ূর নাচে
আমি দেখি ময়ূর নয় 
সুন্দরী নারীদের দল আসলে  অন্ধকারের নৌকো 
প্রাগঐতিহাসিক, বেড়াল
মাংস মাটি কিচ্ছুটি নয় অপার্থিব বিদিশায় 
নিশ্চুপ হাটখোলা হারমোনিয়াম 
শুধু বেজে চলে উদারা মুদারা তারায়...



  


ভুলবার নয় 


সে রাত্রি ভুলবার নয় 

বলা উচিৎ তোমাকে 
                ভুলবার নয়...
আমি তোমাকে  ভালবাসি 
এই সামান্য কথাটা বলার জন্য সাহস লাগে
আসলেই...

খেয়েদেয়ে কীভাবে  যে বিছানায় গেছিলাম
ভ্রূমধ্যে শুধু  আদিগন্ত ক্ষেত আর
মাঠে মাঠে  নতুন শস্যদানা শ্যামল সুন্দর...

কৃতজ্ঞতায় মন ভরে গেল 

সুন্দর তুমি এসেছিলে সব কাজ মিটিয়ে
অস্তিত্ব নিয়ে অস্বাভাবিক তাড়াতাড়ি 
সেদিন বুঝেছিলাম 
অনেক কিছুর মধ্যে দিয়েও 

রামধনু উঠে আসে

আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়েই টেনে নিয়েছিলে
আমার মাথা, পান খেয়েছিলে তুমি  

মিষ্টি মিঠাপাতা...

মন পুনরায় ভরে গিয়েছিল কৃতজ্ঞতায় 
জনশূন্য পৃথিবীতে রৌদ্রতাপে জ্বলতে জ্বলতে
এত যে শক্তি তুমি কোথা থেকে পাও
আমি জানি  না 
শুধু এইটুকু জানি
মাঝে মাঝে  ক্লিওপেট্রার মতো দেখা দিয়ে যাও...






ইউরেকা

সে আমাকে শেখাল ভালবাসার মন্ত্র 
সে আমাকে প্রথম শেখাল মানুষ প্রকৃত অর্থে পশু নয়
সে আমাকে শেখাল সঙ্গমের বিবিধ বর্ণমালা 
তারাদের অযোনিসম্ভূত সন্ন্যাস সবিনয় নিবেদন 
অন্ধকারে উরু দাবনা শিনা
কীভাবে ঝোলাতে হয় 
আর আমি অন্ধের মতো
চিনতে শিখলাম শিকল ভাঙার গান
সমকালীন জ্যামিতি বৃত্ত আর 
সরলরেখাকে ঘিরে নক্ষত্রদের অনুপান
ইউরেকা ইউরেকা করে চিৎকার করে উঠলাম
প্লবতা নয় আমি আবিষ্কার করলাম 
খেটে খাওয়া মানুষের দুঃসময়ের দলিল

তারপর অন্ধকারেই প্রণাম সেরে 
পঙ্গু ও আতুরের মতো হেঁটে চললাম
তাপহীন ক্লেদহীন উজ্জ্বল এক ভোরের দিকে...





কখনো বিপ্লব হলে

আলো ভেঙে যাচ্ছে অন্ধকার ভেঙে যাচ্ছে 
ক্রমশ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে জল
ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে রামধনু 
নাইট ডিউটিতে এফ আই আর লিখতে লিখতে 
ঘুমিয়ে পড়ছেন 
অফিসার ইনচার্জ 
শুধু  এই  দৃশ্য টুকু শুট করছিলাম 
ডার উইন যখন সামনে এসে দাঁড়ায় 
ফ্রয়েড  তখন জানলা দিয়ে পালায় 
কামুর আউটসাইডার বেয়োনেটে বিদ্ধ আততায়ীর 
জ্যোৎস্না তখন কাফকার নায়ক গ্রেগরের চোখে
রোদ পোহানোর অছিলা 
তখন কার যেন কন্ঠস্বর ভেসে আসে 
পরাজিত হবার জন্য মানুষ জন্মায়নি
কে বলল কে বলল একথা 
একজন ছিয়াশি বছরের বৃদ্ধ 
সবাই যখন ছেড়ে চলে যাচ্ছে একে একে তাকে
তখনো সে একটা ডিঙ্গি নৌকো নিয়ে  পাড়ি দিচ্ছে 
মাঝ সমুদ্রে স্বভাবসিদ্ধ হেমিংওয়ের তিমি 
অন্তর সত্য বাহির সত্য হায়রে মোপাসাঁ সন্ধ্যার আকাশে তুমি
নিষিদ্ধ পান্ডোরা আর যারা চুপ ছিল তারা নীরবে সমাহিত-
অর্ধেক পৃথিবী দেখেছো তুমি 
হে সঞ্জয় তাই কুরুক্ষেত্র ঘাসে ভরে গেছে 







সত্যি হয়ে ধরা দিল

শূন্য থেকে শুরু হলে কাউকে না কাউকে
জবাবদিহি করতে হয় অর্থ এবং পরমার্থ 
বিজ্ঞাপনে ভেসে যাওয়া কড়ি ও কমল
ছায়াপথকে যদি আমরা শ্মশানভূমির সঙ্গে তুলনা করি
মৃত নক্ষত্রদের উড়ন্ত তাস এবং সলমাজরির 
বৈভব তখন রিংটোন লুকানো থাকে চন্দ্রালোকে 

যতদিন যাচ্ছে লৌকিক থেকে অলৌকিক 
চেনা অচেনা বল গড়িয়ে যাচ্ছে 
মসৃণ পথে প্রগলভ নারীদের কাছে 
মেইনস্ট্রিম ছৌনাচের যৌনাচার

তখন সিঁড়ি ভাঙা স্মৃতির অতল অঙ্ক 
দোতলা একতলা বেয়ে উঠে যায় ক্ষমতার অন্দরমহলে
এদিকে রূপকথা গড়িয়ে যায় 
শপিংমলের  কাউন্টারে...
মাঝখানে রজনীগন্ধা 
পড়ে থাকে জবকার্ড ছিঁড়ে কুটি কুটি 
ভেঙে যাচ্ছে সম্পর্কের নয়নতারা 
ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকছে
গড়াগড়ি খাচ্ছে রাষ্ট্র,
তার শরীরে শরীর নেই 
তখন চোখের ভেতরে চোখ
আয়নার ভেতরে  আয়না প্রতিফলন প্রতিসরণ
কিচ্ছুটি নেই 
আলো ক্রমে কমিয়া আসিতেছে,
বহু পুরনো কথা হলেও সত্যি হয়ে ধরা দিল...

Post a Comment

0 Comments