একক কবিতা ।। বামিহাল অনলাইন ।। ঈদ আয়োজন।।


A single poem. Bamihal is online. Eid arrangement.


সম্পাদক: রনি বর্মন


সহযোগিতা: 
শুভাগত দেবনাথ
সাকিল মাহমুদ
জন নহশোন চৌধুরী

নামলিপি:
 শিবলী মোকতাদির

অলঙ্করণ:
রনি বর্মন

যোগাযোগ
বামিহাল, বিশালপুর
শেরপুর, বগুড়া।৫৮৪০

+8801743918916
e-mail: roniburmon@gmail.com




একক কবিতা ।। বামিহাল অনলাইন ।। ঈদ আয়োজন।। 




কা ম রু ল  বা হা র  আ রি ফ
ভুলের শ্রেণীকক্ষ


ভুলকে দখল করে ভুলে গেছি জীবন ও আনন্দ!
মাচার মাঠের ভেতর শূন্যবাতাসের ভুলশব্দ
জিগার ডালগুলো ভুলের অন্ধকারে—
মাটিতে প্রাণ আনে ভুল ব্যবহৃত জলের ছোঁয়ায়
আনন্দে ভুল জীবনে ভুল— ভুল সমরবিদ্যায়
শিক্ষাদান এক পরম ভুল! আদর্শ দিয়ে শুরু
শেষ মরণাস্ত্রের বিদ্যার পাঠদানে।
ভালোবাসা আবেগের রসায়ন ক্রিয়ার ফল
মর্মে যার শুরু অন্ধত্বে, শেষ যেনো ভুলের খেসারত

আহা ভুল! সুখের অন্বেষণে এই ভুলই
চর্বিত চর্বনে পাঠ হয় ভুলেরই শ্রেণীকক্ষে।
ভুলের সাথে সন্ধি করে কাদম্বরি আসে না আর
ভবতারিণী বালিকাভুলে ঋষির পদযুগলে আশ্রিত
ভুলের যুদ্ধউদরে জীবনানন্দ ট্রামের চাকার—
চক্রায়মাণ লৌহচাকায় ঘুরছেন অদ্যাবধি
ভুল শুধরাতে সামনে আসে দখলি ভুলসমগ্র।





জ য় ন্ত  দে ব

বসন্ত সীমা রেখা মানে না, বর্ষাও না


আজকাল কবিতার খাতা রেখেছি কাঁটাতারের ওপারে

দেখি, চোখ রাখি তার চোখে, মানে কাটায় লেগেছে 

রক্তচোখ তার, তারকাঁটা ভূগোল বদলে দেয় 

জেনে সঞ্চিত স্বপ্ননিয়ে আত্মজার মায়া বাড়ায়,

এপাশে আমি তার সজ্জিত মুখে

শিক্ষার আলো খুঁজি সম্ভ্রান্ত শব্দে

প্রণয় কাব্য লিখি এই বসন্ত দিনে;

জানি বসন্ত কোন সীমা রেখা মানে না, বর্ষাও না

মানি কবিতা কোন আঁচলে বন্দি না, বন্ধুও না;

সমাজচিত্রে আমরা জেগে থাকি সখ্যশব্দের প্রণয়ে।





খৈ য়া ম  কা দে র 

ভ্রমের ফানুস 


বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসের উপত্যকায় ব'সে আছি 

কোনদিকে তাকাবো কোনপথে হাঁটবো 

কোন নদীতে সারবো স্নান আর যাবো কোন সারথীর কাছে 

তা নিয়ে ভ্রান্তির মাঝে থাকি উত্তরহীন প্রশ্নের মাঝে থাকি।

চোখ বন্ধ করেও অনেককিছু দেখি আঁধারের রঙের ভেতর

আবার মুক্ত চোখেও দেখতে পাই না খুব কাছের জিনিস

চারদিকে উচ্চারিত অগণিত শব্দ শুনি,কানের কার্ণিশে বাজে 

অশ্রুত কথার ধ্বনি অর্থহীনতার এক ভয়াল নৈশব্দ নিয়ে!


যা দেখি তা কি দৃশ্যমান নাকি ভ্রমের ফানুস 

মানুষ ভেবে যাদের বন্ধু বানাই তারা কি আদতে মানুষ?  







প্রা ণ জি  ব সা ক

নির্বাক চৌকাঠ


সাত সাতবার ডানদিকের জানালা ছুঁয়ে

পেরিয়ে গেছি নির্বাক চৌকাঠ

সে কথা সে জানে

মাঝ-বসন্তের দিনে

যতবারই উড়ানে যাই

সঙ্গে থাকে স্মৃতি পাহাড়ের ঢেউ

পাড়াতুত মেঘেরা সরে গেছে 

রেখে গেছে একটি দিন 

রঙিন আলোরশ্মি কুয়াশা মেখে

চৌকাঠ ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে 

সারারাত ভবনের গল্প শোনে

আর তোমার কায়া দেখে 

সকালের অক্ষত রুদালি গোলাপবাগান

হেসে ওঠে ঐ

হঠাৎ যেন সবার বয়স কমে

গাছ হই ফুল হই বাতাসে 

মানুষই মানুষের কাছে যায় --

সময় সরণী খুলে দিলেই 

কেউ উদাস হয় জানালায়

কেউ নীলাভ আকাশে লীন 






না জি ম  খো ক ন
কবিতান্জলি

কবিতার বাঁকে বাঁকে হৃদয় বিন্যাস
অলিগলি কল্পনা ম'নের নির্যাস
হাত দিয়ে যা লিখি ম'নে তা অধিক
ম'নের ভিতরে ম'ন ব্রহ্মান্ডও ধিক

চ'লে যাই কতদূর দূরেরও দূর
সেইখানে কান পেতে শুনি সুমধুর
কোথা হ'তে ভেসে আসে অমৃতধারা
কে বা কোথায় থাকে দেখিনি চেহারা

আমার আমিকে নিয়ে উড়ি সারাক্ষণ
তুমি কে, কে তুমি -- সে আমারই ধন
আমার ভেতরে তুমি আমিই সর্বদা
কখনো হতাশা নেই, নেই তাই কাঁদা

পৃথিবীতে যতো প্রেম যতো না পাওয়া
পাওয়ার অধিক তা নিজ ম'নে গাওয়া
তোমরা ফিরবে যদি যাও ফিরে যাও
একলা অমল গীতে বেয়ে যাবো নাও

কবিতার রঙ দিয়ে আঁকি পৃথিবীকে
আমার আমিকে পাই নিজ দশ দিকে
তোমরা আমার হও আমারই রঙয়ে
এই চোখ ম'ন তাই নাচে রঙয়ে রঙয়ে

কবিতা দিবস নয়, নয় কবিতার মেলা
কবিতা হৃদয়ে নাচে সারাটি বেলা
এলেবেলে জীবন নয় --জীবনই এমন
এইভাবে কেটে যাবে সারাটি জীবন

অনেক নেই তবে সেটুকু অঢেল
যে যা বলুক তাতে দিই নাকে তেল
ঘূমের ভেতরে ঘোর তারও চেয়ে ঢের
কবিতা কাব্যলক্ষ্মী বলে আয় ফের

ফিরাতে চায়না কেউ শোনেনা কথা
কবিতায় ম্লান তাই নেই কোনো ব্যথা
আমার আমিকে নিয়ে সিড়ি ভেঙে উঠি
কবিতা ও আমি মিলে এক, তবে জুটি

লুটোপুটি হুটোপুটি নেইতো তামাশা
আমার আমাকে নিয়ে ক'রিনা আশা
সময় প্রকৃতি জানি তারা মহাকবি
আমি সচেষ্ট কেবল সেই ছবি আঁকি

ভুল বা নির্ভুল অভিধানে নেই
যা লিখি যা গাই দেখি সবই সেই
হাত বেঁধে নিয়ে যাই চোখ রাখি খোলা
না থাক না হয় ফাঁকা থাক ঝোলা

অল্পপ্রাণ স্বল্পপ্রাণ মহাপ্রাণ ধ্বনি
এ জনের হাতে খাক নাকানিচুবানি
শ্যাম বা কার্তিক তারা গোধুলির ধুলি
ইন্দ্রের সভা সব এ মাথার খুলি

কবিতা নাচাই আর গাই স্বেচ্ছাধীন
নিজেকে নিজে রাখি নিজেতে স্বাধীন
পরপদে আজ্ঞা নয় নিজেতেই বিন্দু
তবুও ডিঙোতে চাই এ ম'নের সিন্ধু







সু বী র  স র কা র
প্রেমদিবসের প্রাক্কালে

এত এত কান্না থাকে আমাদের জীবনে! এত এত অপমান থাকে আমাদের জীবনে!কাছের মানুষের বদলে যাওয়া মুখে শেষ বিকেলের রোদ।কিছু ব্যার্থ প্রেমের গল্প শিস দিয়ে উঠলে আমি লিখে ফেলি
প্রেমদিবস।একা হয়ে যাওয়া মানুষ তো আসলে চিরদিনের এক মল্লযোদ্ধা! কোথা থেকে হাসতে হাসতে বিদ্রুপ নেমে আসে পৃথিবীর মাঠে মাঠে।
একদিন কান্নার অনুবাদ করতে করতে দুরন্তরকম
                                               ফিরে আসবো আমি




ক  ম  ল  কু  জু  র

ডাহুক ডুব


হৃদয়ের অলিন্দে করুণ সুরে বাজে সেতার
ক্রমশঃ দিগন্ত ছুঁতে চায় অমাবস্যা রাত

 ইট পাথরের দেয়াল দম আটকে রাখে অনুক্ষণ
কারাগারের জানালা দিয়ে মুক্ত আকাশ দেখা পাপ

 বসন্তে পাতা ঝরে নিঃস্পৃহ খটখটে গাছ
নিঃস্ব শিরা উপশিরায় ছোটে বৈরাগী বাতাস

 ঈপ্সিৎ দেবীর খোঁজে ঘুরে মরে উপবাসী ডোমচিল
অম্লমধুর জ্যোৎস্নাম্রক্ষণে থিতু নদীজলের অপূর্ণ কোলাহল

 আলোকরশ্মি স্নাত সমর্পিত চোখে গ্রহণ লাগে
নিয়তির অমোঘ নিলয় স্বপ্নসাধ সেঁচে চলে







জী ব ন  সা হা 

ফুল গাছটির কাছে এলে


ফুল গাছটির কাছে এলে
তোমার মনে হবে
বেশি মানুষের কাছে যেতে নেই।


ফুলের কাঁটা আত্মরক্ষার্থে
বড় নিহন্তা হয়ে ওঠে মানুষের কাঁটা।


ফুল গাছটির কাছে এলেই  
ফুলের মতো ফোটে কিছু মানুষ !


তুমি 
কিছু মানুষের কাছে যেয়ো।






মু স্ত ফা  হা বী ব
মাটি ও মানুষের কথা


মাটি শাশ্বত, রূপ বদলায় প্রকৃতির দ্রোহে
ওড়ে, হাওয়ায় ভাসে অদৃশ্য টানে
তবু তার অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়না, হবেও না কোনোদিন

কৃষকের কর্ষণে হয়ে ওঠে যুগপোযোগী
সবুজ- সোনালি ফুল ফসলের অনন্ত আধার।
মাটি আছে বলেই পৃথিবী গৌরবময়
আঠার হাজার মাখলুকাতের অবস্থান এখানেই। 

মানুষ এই মাটির ওপর দাঁড়িয়ে 
মাটির কাগুজে দখলদারিত্ব নিয়ে হানাহানি করে
মাটির নির্যাস চিবিয়ে চিবিয়ে খায়, 
আপন স্বার্থে পোড়ায় কয়লা ও কাঠে।

চরম সত্য, মাটি মরেনা, মাটি থাকে বিচিত্র অভিধায়

মানুষ মরে, আর মাটিতেই মানুষ নিঃশেষ।






শা হী দ  লো টা স

চিঠি

বেনামী চিঠিটা আকাশে বিপ্লব ঘটিয়ে
আমার উঠোনে যখন এলো তখন বিকাল।
হর্ন বাজিয়ে রিকশাওয়ালারা ঘরে যাচ্ছে
পাখিদের সন্ধ্যা ভোজন তখনো শেষ হয়নি
বাকি আছে ফড়িং আর মৌমাছির বৈঠককাল।

আমার তখনো চিঠিটা খোলা হয়নি
যখন মেয়েটা আর্ত চিৎকার করে বলল তাকে ধর্ষণ করেছে
কয়েকজন বেঈমান ও একজন প্রেমিক।
আজকাল দৈহিক মিলনের জন্য রাত্রি প্রয়োজন হয় না
বলেছেন এদেশের বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ,
তবুও রাত বেকার আবরণে আমার ঘরে আসে বার বার,
আমার আবার প্রেমিকা নেই!
বুদ্ধিমান মেয়েগুলো ঠিক বুঝে গেছে আমি বোকা।

বেনামী চিঠিটা তখনো খোলা হয়নি,
যখন নর্দমায় ডুবে থাকা খাদ্য তুলে খায় বেনামী মানুষ
তরল ঝোলের মতো টপটপ ঝরে নোনা জল।

বেনামী চিঠিটা তখনো খোলা হয়নি
যখন সব মহিলারা তেঁতুল হয়ে যায়
আমার বান্ধবী সহ।

বেনামী চিঠিটা তখনো খোলা হয়নি
যখন ৫২, ৭১ এর সব দালাল কেঁদে কেঁদে বলে,
আমার সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালোবাসি।







দে বা শি স  ভ ট্টা চা র্য 
বিবর্তন 

বিরুদ্ধ বাতাসে রং বদলে যায় 
গা থেকে খসে পড়ে আলো 
                                        ছেড়া ছাই 
যাপনের রসায়ন বদলে ফেলে 
ঢুকে যাই বর্ম খোলসের ভেতর 
               বদলে ফেলি আত্মপরিচয়।





আ জি জ  কা জ ল
আহা চোখ

আমি তো এই ঘাটের মাঝি, প্রতিদিন এক আনা করে সাঁতরাই আমার কূল। বা
হুতে মরে গেছে লবণ,ধরলার বুকে বাধা সাত জনমের
নদী। প্রতিদিন বাড়ছে আমার ভবচন্দনের কূল ডুব-সাঁতারের বাও।
এখানে নদী নেই। আছে বিস্মৃত নদীর কঙ্কাল
সেই খেয়া ঘাটে এঁটেল মাটির লবণ-ধোয়া
চোখের ছবি, আজ হতে হাজার বছর ধরে আজন্ম মাথায় নুয়ে বাঁচি। 
বাঁচতে চাই, তোমার এই মরিচিকা পাখায় ধরাতে চাই নোঙর-নথের লতা।








জা রি ফ  আ ল ম
বীজ

বাতাস কেমন আলুথালু বয়ে যায়
জড়িয়ে গিয়েছি তাই বিষাদ-মায়ায়।
এই নিয়ে কাটে দিন আমাদের মত
ফাগুন এখানে এসে প্রত্যহ নিহত।

এইসব দেখে দেখে সয়ে গেছি যতো
সারিয়ে তুলেছি তবু সময়ের ক্ষত।
সময় তো ভাঙাচোরা জীবনের গিঁট
চলার পথেই যার ঠেকে যায় পিঠ।

স্মৃতির খামারে তাই অতীতের চাষ
সরল হিংসা নিয়ে টেনে রাখি রাশ।
কতোদূর এগিয়েছি এইসব বকে__
যে বীজে জন্মেছে মায়াগাছ 
আমাদের অন্তর্লোকে।







আ লো ক  ম হি য়া ন
দুর্বোধ

সকালের পাঠশালা মাঠে একদিন
ধুলোর প্রলেপে পানপাতা এঁকে
কেন্দ্রে লিখেছিলে- ভালবাসা
স্মিতরহস্যে জানতে চেয়েছিলে ভালবাসা মানে

ছিলাম নিরুত্তর

সকাল পেরিয়ে দুপুর
তোমার উঠোনে ছড়িয়ে আছে 
কয়েক টুকরো আদরকাড়া রোদ্দুর
পান পাতায় গজানো ঘাসে
লাজুক সোনালু ফুল ঝুলে আছে

মহিমান্বিত সে হৃৎপর্ণ,
ক্যানভাসে  আজও ধরে আছে রক্তবর্ণ







নূ র  না হা র  নি পা

সোনালি ইতিহাস 

 

বুকের তাজা রক্ত জমাট বেধে হয়েছে ভোরের সূর্য

রবি ঠাকুরের গানে শুনি ব্রাশফায়ারের শব্দ।

গনতন্ত্র সবুজ বুকে অবারিত আমার স্বাধীনতা
সোনার ছেলেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে বন্ধুকের নলের মুখে।

রাজপথ শুন্য মেঘেরা চুপচাপ আকাশ নিঃশব্দ
দগ্ধ হৃদয় আঁছড়ে পড়ে মরীচিকার কংকালটা।

সময়ের রঙিন ক্যানভাসে হা-হুতাশ নীরব কান্না
আত্মচিৎকার হৃদয়ের আর্তনাদ সর্বহারা রাত্রি।

নারী পুরুষ অর্ধনগ্ন ক্ষত - বিক্ষত দেহ।

রক্ত মাখা শার্ট ছেঁড়া কাপড় জলরাশিতে ভেসে যায়।

বুকফাঁটা কান্না চোখের নদীতে উৎকন্ঠ ধ্বনি।
হৃদয় বিদারক বিধ্বস্ত আন্দোলনের একাত্তার।
       লেখা হলো সোনালি ইতিহাস।






অ ভী ক কু মা র  দে
পরাশ্রিত ছায়া 

এসময় বর্ষা নেই, তবুও 
এত জল! কার গা বেয়ে, খরস্রোতা নদী?

নদীই হবে যদি এত আঘাতের ক্ষত 
নিপুণ কোনও শিল্প তো দেখি না!

সবাই মনে করে 'আমি', সমুদ্রে যাবার জন্যই 
মাটির প্রশ্রয়ে অনাবিল আনন্দ লিখি গায়ে,
পায়ে যার জীবনের গতি...
 
যৌবন ছুঁয়ে বেরিয়ে যায় পরাশ্রিত ছায়া
মায়া পড়ে থাকে মাঠ ঘাট ফসলের কাছে।

সেখানেই এত জল আর রক্তশূন্যতা
আশ্রয় সব ভাসতে ভাসতে ডুবে যায়
ফেঁসে যায় শেকড়ে শেকড়ে, বাঁকে বাঁকে...

এসময় বর্ষা নেই, তবুও 
মানুষের বুকের ভেতর নদী কার গাছের মত 
সাত ঘাটের জল খেয়েও অন্ধকার লুকায়?

ডালপালা মেলে মানুষ থেকে মানুষ নিচ্ছে কেড়ে!









হা দি উ ল  ই স লা ম
জরাগ্রস্ত গোলাপের মুখ

জরাগ্রস্ত গোলাপের মুখ বিম্বিত চৌদিকে
নদী চলে গেছে। পেছনে খোলস পড়ে আছ
সত্যের মতোন

যথেষ্ট সন্দেহ নিয়ে সত্য বিকলাঙ্গ
নিপাতনে সিদ্ধ মর্গে পড়ে আছি পঞ্চাশ বছর
চতুর্দিকে চাষ হচ্ছে কফিনের

ষড়যন্ত্রের ছয়টি যন্ত্রকে খোঁজতে গিয়ে
হারিয়েছে বিবিধ গোয়েন্দা সংস্থা আর
প্রত্নতাত্ত্বিকের দল

সুন্দরের পায়ে জীবন সুন্দর
সমর্পণে অকাট্য জেনেছি
ইশকের ময়দানে তবু ঘোর দেখা না দেখার

কতিপয় গুড়েবালির ভেতরে
এতোসব চোখের বালির সাথে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে
আঙ্গুল ফুলে কলাগাছের সমৃদ্ধ বাগান









ফ রি দু জ্জা মা ন  মি তু ল  ই ব্রা হী ম
লুসিফারিন

ল্যামপিরিডি পতঙ্গ পরিবারে জন্ম আমার ।
লুসিফারিন থেকে মিটিমিটি জ্বলে
আলোকিত করতে চেয়েছি নিশিকে ।
কিন্তু কিছুতেই তারে বুঝাতে পারিনি
এই আলো-ই আমার একমাত্র প্রেমের ভাষা ।

সে কৈশোর কাটিয়েছে
মাংশাষী প্রাণীদের হিংস্রতার স্বাক্ষী হয়ে।
তার বুকে অবাধ বিচরণে মেতেছে ,
শিয়াল আর হায়েনার দল । 
হায়েনিডে-র পরিবার তাকে
বড্ড বেশি ভালবাসে ।

আর যৌবন ?
যৌবনে ভালবেসেছে চাঁদটিকে।
লুসিফারিন থেকে চাঁদের আলো নাকি বেশি !
তাই তো আর বলা হয়ে উঠেনি মনের কথা !

একদিন নিশিকে দখল করে বসবে অমাবস্যা !
সেদিন যুদ্ধে নামবো আমি ।
আমার সমস্ত লুসিফারিন বিসর্জন দিয়ে
পরাজিত করবো অমাবস্যাকে !
আর আলোকিত করবো নিশিকে ।

সেদিন নিশি হয়তো বুঝবে এই আলোর ভাষা ।
কিন্তু বড্ড দেরি হয়ে যাবে  ! 
নিথর পড়ে রবে আমার ছোট্ট দেহখানি
শুধু থাকবে না সেদিন -
মিটিমিটি জ্বলার জন্য একফোঁটা লুসিফারিন ...








রে জা উ ল  ক রি ম  রো মে ল
তুমি ভালো থেকো

তোমাকে নিয়েই লিখছি, হ্যাঁ তোমাকে নিয়েই।
অনেক দিন হলো তুমি চলে গ্যাছ,
সেকথা ভাবতে ভাবতে এখন আর ভাবি না।
তোমাকে না পাওয়ার ব্যর্থতা এখন আমাকে আর কষ্ট দেয় না।
আমার মনের মণিকোঠায়, হৃদয়ের অতল 
গভীর থেকে গভীরতম স্থানে যে জায়গা জুড়ে তুমি আছ;
সাধ্য কার সেখান থেকে তোমাকে ছিনিয়ে নেবে!
তুমি কি পারবে সেখান থেকে ছিনিয়ে নিতে তোমাকে?

কে বলে তুমি নেই! তুমি আছ-
আমার আকাশে বাতাসে, সাগর নদী মহাসাগর
আমার পৃথিবী মহাবিশ্বে , আমার প্রতিটি শিরায় শিরায়,
রক্তের প্রতিটি কণায় কণায়।

তোমাকে হারিয়ে আমি কষ্টে আছি আমি বেদনাহত,
একথা ভেবে যদি তুমি কষ্ট পাও!
তারপর-ও আমি বোলবো,-
তুমি ভালো থেকো প্রিয়তমাষু, তুমি ভালো থেকো।









মা হা বু ব  টু টু ল
চিঠি

ভালবাসলে মানুষ বিশুদ্ধ কষ্ট পাই
জেনেই, ভালবাসার পথিক হয়ে
আজও পথে পথে____।

জানি, ঈশ্বরকে ভালবাসা যায়,
কিন্ত তার সাথে কখনও সহবাস হয় না।
তুমি তো ইশ্বর কিংবা দেবী নও,
আমারই মত একজন অন্যতম।

প্রগাঢ় অন্ধকারে নিমজ্জিত এই আমি
অশ্রুতে ভাসাই দিবস রজনী,
প্রত্যাশার ক্ষীণ আলোয়, নিরাশার
প্রতিশ্রুতিতে আশাবাদী হই বারবার।

হঠাৎই মধ্যরাতের একটু আগে
তোমার চিঠি পেলাম,
শুভ্র গায়ে সহস্র বেদনার পঙতিতে লিখেছ
দিবা রাত্রির ব্যবধানে ব্যস্ত ও বাস্তবতায়
আজও আকোঁ চব্বিশ বসন্ত বেলার কাব্য।
নিবিড় মমতায় ঘেরা সহস্র বছরের প্রেম
আজও আকোঁ শুধু আমার জন্য।

হিম হিম অনুভূতির স্পর্শিত ছোঁয়া
কেঁপে কেঁদে উঠলো বুকের জমিন,
একরাশ ঘৃণার প্রলেপ একেঁ দেয়,
দূর মহাকাশের ইথারে ইথারে।
ঘৃণার প্রক্ষালনে সাজবে বীথিকা,
পোড়াবে তোমায় অনন্তকাল।








য ত ন  কু মা র  দে ব না থ 
বিভ্রান্তি 

উড়ন্ত পাখির ডানা খসে পড়ে যাওয়া 
পালকেরাও কথা বলছে 

পাপ শব্দটা প্রথম পরিচয়েই বুঝিয়ে দিয়েছে 
প্রায়শ্চিত্তও পর্নগ্রাফি 

ঠোঁটের ভর দিয়ে ঠুকঠুক শব্দ 

বিভ্রান্তি  ! 

পৌষপার্বণ মেলায় পাখি বিক্রি হয় না 

পাখির মাংসে পরকীয়া স্বাদ 
চাঁদের টিপে কালো বউ ফর্সা । 







দা লা ন  জা হা ন 
মেট্রোমাছ


দুটি নেকড়ে ও একটি পিঁপড়ে বিক্রি করছে

জিহবায় তৈরি তৈলাক্ত মেদ

আলোতে দেখতে অনেকটা সাপের স্বভাব

অন্ধকারে চুলহারা কালো শকুন 

অথবা মাংসহীন এক দানব নদীর মতো।


অজ্ঞাত ফেনা ও প্লাস্টিক গোষ্ঠী 

অনন্তকাল বিধবার সংলাপ 

তিন ও সাতরকম দুরত্ব ভেঙে আসছে 

দূরদর্শী চিল

তাকালামাকান ডিং ডিং ডেথ ভ্যালি 

সাহারার আগুন বালিতে ডোবে 

কান্না করছে ভুগোল ভেজা ভূমধ্যসাগর। 


দুটি হরিণ ও অজস্র শিম্পাঞ্জির মাজারে

হাত তোলেছে মদগঙ্গা মেট্রোমাছ

কাছিম ও কসাই একই বোতলে 

তোমার ঘর

বাস পাখি ও উদ্ভিদ সদৃশ হলেও

ন্যাট্রন হৃদ ছাড়া কিছু মনে হয় না। 







মী র  এ না মু ল 

ভিন্ন ভাষায় কাপুরুষ 

যাপিত জীবনে সুখের বিপরীতে বসবাস 
সুখেরা আসে না বহুদিন আমার ঘরে 
ঘর্মাক্ত দেহে ক্লান্তিহীন পথ চলে 
কর্মের দুয়ার 
অথচ,অচল পৃথিবী বৈমুখ আমাকে ঘিরে 

নিত্যনৈমিত্তিক হাহাকার পাথরের বুকে অনায়াসে চলে শোষণের থাবা!
কষ্ঠে অর্জিত আহারের পাতে ওরা ঢেলে দেয় ছাইপাঁশ!
আমার দু'চোখের অশ্রু রক্ত হয়ে ঝরে পড়ে পাথরের শরীর।

দায়-দেনা বুকে নিয়ে খুঁজে ফিরি 
সফেদ মন 
স্বপ্নের সোনালী আবির আঁজলা ভরে গায়ে মাখাতে চেয়েছি বহুবার
মহাকাল রেখাপাত করে হয়তো বেড়াবন্দি অচল পৃথিবীর বুকে আমার শুধুই বাক্য প্রলাপ 

অমানিশায় অন্ধকারে পড়ে আছি 
এক বিরানভূমে 
সেদিন প্রতিবাদের হাত উঁচু করে ধরে ছিলাম,শিকল ভাঙ্গতে পারিনি কাপুরুষ হয়ে!








খো দে জা  মা হ বু ব  আ রা 
নিজেকেই বলি

১। রেখোনা আলোর প্লাবনে
ভালোবাসাহীন আনন্দের ছলনায়,
বালুকণা সম ঝরে পড়ি
অন্ধকার পদ প্রান্তে। 

২। মন ভুলে থাক
লুপ্ত প্রণয়ের রঙিন প্রহর 
সুখের সুর বেলায় 
অসুরের মহা প্রলয়। 

৩। দেখোনা হৃদয়ের আগুন নেভানো
দুফোঁটা চোখের জল
কাল কেউটের দংশনে নিথর 
হৃদয়ের নির্বাক চিৎকার।

৪। ছুঁয়ে থাক অনাবিল 
অনন্ত বাতাস
প্রসন্ন পাখির পালক
উড়ে যাবে সোনালী 
আকাশ বন্দরে।






রু দ্র  সু শা ন্ত
আমরা অনেক কিছুই জানিনা

আমাদের আশ্চর্য হওয়ার সমাপ্তি নাই,
কে জানতো আমরা দুই তলা বিশিষ্ট রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করবো-
কে জানতো মানুষের মাথার উপর মানুষ ত্যাগ করবে মলমূত্র-
কে জানতো মানুষের মাথার উপর মানুষ রান্না করবে চিকেন ফ্রাই। 
আমাদের আশ্চর্য হওয়ার সমাপ্তি নাই।

আমাদের বিস্মিত হওয়ার অবসান নাই,
কে জানতো মানুষ ইট বালি সিমেন্ট আর রড দিয়ে ছাদের উপর ছাদ তার উপর আবারো ছাদ  করবে-
কে জানতো আমাদের সরিষা মাঠগুলো দখল হয়ে যাবে বহুজাতিক কোম্পানির প্রকোষ্ঠে- 
গাড়ির পর গাড়ি তারপরেও গাড়ি ট্রাফিক জ্যাম মধ্যখানে আমরা পিঁপড়ের মতো হেঁটে যাই। 
আমাদের বিস্মিত হওয়ার অবসান নাই।

আমাদের অবাক হওয়ার শেষ নাই, 
মরণঘাতী প্লাস্টিক দিয়ে আমরা করছি সুস্বাদু পান-
কে জানতো আমাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বিবাহ কবিতা পাঠ এবং গল্পের আসরগুলো দখল করে নেবে প্লাস্টিকের ফুল-
আসলে ভবিষ্যৎ আমরা জানি না, জানার অন্ত নাই। 
আমাদের অবাক হওয়ার শেষ নাই।

আমাদের গল্প শেষ হওয়ার সুযোগ নাই,
কে জানতো উন্নয়নের নামে কোটি কোটি হাজার কোটি টাকা গলাধঃকরণ করবে দুই পায়ের জন্তুগুলো-
কে জানতো লাল সাদা রঙবেরঙের রঙের ভিতর পোশাক গুলোর দাম হয়ে উঠবে অট্টালিকা- 
যা জানিনা তা জানিনা কিন্তু যা জানি তা নিয়ে থমকে দাঁড়াই।
আমাদের গল্প শেষ হওয়ার সুযোগ নাই।






মু হা ম্ম দ  ফ রি দ  হা সা ন
ভাঙা-বাঁশির সুর

গান গাইতে বের হয়েছি ভরদুপুর
চিরায়ত ফাটলের দাগ কপালজুড়ে
ছেড়া একতারা, 
ছেড়া সংসার
ভাঙা বাঁশি, জোড়াতালি
কী গান গাইবো?

গ্রিক রোমান তাম্রশাসন
মমি-মন্দির-মথুরা
সবখানে ছড়ানো বিষাদ
সম্রাট আমি, এবং উন্মাদ...
ছেড়েছি পারস্য রক্তিম নগরী
জিউস, যাযাবর, একদিন কবি...

লোকালয় পুড়লে বাঁশি বাজাবো ঠিকই
নিরোকেও নির্দয় ছাই
মুখ তোমার ভাঙা চাঁদ
জিতে যাবো, 
তবু গেয়ে যাবো চির-বিষাদ...






নী হা র  মো শা র ফ
চতুর গম্বুজ


তুমি ঝগড়া বোঝ, গহিনে ভাঙ্গনের সুর বোঝ না।

কতটা কাল একা একা থেকে
                            না দেখার ভানে হেঁটে গেছ দূরে
ছিল কি তোমার পাশে কালের কথন?
তুমি অভিমান বোঝ,  সময়ে অসময়ে হাসি বোঝ না।
কত বর্ষা গেছে কেটে,  শরতের বাঁকে
শয্যার আড়ে আড়ে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে
                     সংগ্রামী তির।
গল্পগাঁথায় কল্পলোকের ছায়া
কোথায় সেই মায়া
                          একটু শীতলতা...
ভাদ্রবউ বিরামহীন হেসে কুটি কুটি
দুটি হাত বড়ই বেমানান
চিত্রটা নদীর ধারে,  অংক কষায় ভুল হলে
                         কষ্টঘুম বাড়ে।
তুমি খিস্তি বোঝ, উদাসীন পথের বাঁকে আলিঙ্গন বোঝ না।

 তাতে কী? খুঁড়িয়ে হাঁটলেও জীবন
                                              হয় না ফতুর
চতুর গম্বুজের ওপর সেই প্রিয় চোখ।







অ লো ক  মি ত্র 
বসন্ত

এই বসন্ত গতকালও এসেছিল

পলাশের শাঁখে শাঁখে, 

শোভিত হয়েছিল তারপর 

পাতাদের ভালোবাসার প্রণয়।


এই ভালোবাসা দিবস গেলবারও

এসেছিল চির বসন্তের ঝরাপাতার,

শিমুলের শাঁখে কোকিলের কুহুতানে...

মায়ায় ধরা পরেছি তাহার।


গতকাল তুমি বলেছিলে

তুমি আমি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি,

বসন্ত সেদিনও হাত ধরেছিল

নাটকীয় সংলাপের শিরোনামে।


এখন সময় যে পারাপার

ভালোবাসা আসে নেমে

জোনাকির ধীর পায়,

গোলাপের সুতীব্র গন্ধে 

প্রণয় সে গাঢ় হয়।







রা জ্জা ক  দু লা ল

চৈতিনদী ও বালুকারাশি

পিপাসিত প্রতিবেশি রোদে চিক চিক
তুমি থাকো বুক ভরা জলের ভিতর
দুষ্ট মেঘের দল ছলনা করে
তারপর অতপর বছর ফিরে
পাহাড়ের হাতছানি দুকুল ভাসায়। 







অ শো ক  অ ধি কা রী 
নির্মাণ


হাতের রঙ দিয়ে তোমার মুখ আঁকি।


আজ আমার কোনো লজ্জা নেই, 

নত হয়ে জলে তোমার ছায়া দেখেছি

নীলকান্তমণি যেন অবুঝ বৃষ্টির ছাটে ভিজে

যাওয়া মেহেদি। হাতের অজস্র রেখায়

কতো আতর যেন আদর খাচ্ছে প্রথম রাতে।


চাঁদকে কি এমন সুন্দর দেখায় রোজ;

জোছনা কি এমনি করে আলো দেখায় লজ্জাবতীকে।

দুটি হাত যখন একটি আরেকটির দিকে এগিয়ে যায়

তখনও কি নয়নতারা ফুলে গা রাখে মেঠো পোকা;


তোমাকে বলতে আমার কোনো দ্বিধা নেই -

কাল তোমার নিমন্ত্রণ চাঁদ দেখার।

চাঁদ মানে আলো; আলো মানে গূঢ় প্রবাসী মন

শুধু দেশ জানে, আর জানে হৃদয়ের এদিক ওদিক।






অ নি ক  রা য়
কালিবিষয়ক আদি ধুতরাতুষ্টির শীল-প্রেম

মকুলের মেয়ে ক্ষেপে উঠি ফাল্গুনের হাতের রেখা কী ক্ষিপ্র ছাগে জানে  কালি উবাচে ইষ্ট-বেতমে। ক্রীতদাস মালঞ্চ উতাল ডোবায় দুর্জয় তোলবার প্রেম কখনো মৌসুমী মুন্ডগলা খড় আনন্দভূত খাঁড়ার বিকশিত সমস্ত রক্তমঞ্জু লিপিতে সুবল ধ্বনিচিত্রী মালতী গর্ভঘাতের খোকন; সুনীলবদ্ধ লাবণ্য চেনে বিধিবহির্ভূত ইষ্টমিলন পিতৃহন্তা হয়ে কালিকে দেখি শঙ্খে।অপ্রাকৃত চিতার ভেতর যদি কৃষ্ণতুলসী পড়ে মাতাল অন্তর জানি রক্ষাকালি লালন করতে  হয় আদি-স্তবঘরের মা শিবের,শুভ্রতা;মৌগন্ধের কাছে পুরাতন কালির কাঠামোর কপালে  রক্তারক্তি দেখে আরোপিত বয়সের আগুনেও শেষ অলস;শীল বংশের  আদি জানতে কালিপূজা দেখার মত ফুলপোড়ার আগে হোমের অগ্রুপাতে কে আসে? কালসুর! রিপু জানি নীল ধুতরা চতুরদর্শী ক্ষয় শব্দটিও পঞ্চমীর সৌঁরিক স্বার্থ যখন শীল বংশের প্রেমের আদি জন্মশর্ত জানতে কালিপূজার যোগজল দেখার বিকল্প কী মকুল? ফাল্গুনের রিপু তোলে এমন খাঁড়া হয়ে উৎসর্গ শ্রী-রক্তকণা কেন এলো দৃপ্রমুক্তার শক্তিতে।








শ ও ক ত  এ য়া কু ব 
আমাদের ভালোবাসা না হোক কোনদিন 

আমি চাই না আমাদের ভালোবাসা হোক 
যদি হয়ে যায় তবে প্রতিদিন সাক্ষাৎ হবে, 
সময় নষ্ট হবে,অনর্থক কথাবার্তা হবে মাত্র 
মানুষ মন্দ বলবে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতে হবে রাত্র।

বাড়িতে জিজ্ঞাসা করলে দেরির কারণ কি বলবে?
কিছু বলবে?নাকি সহসাই মুচকি হেসে চলবে? 
আমার কথা স্মরণ করে সারারাত কাটিয়ে দিবে
ফ্রেমে বাধানো আমাদের ছবি তুমি বুকে নিবে।

বিরক্ত হবে,যখন বান্ধবীরা ভৎসনা করবে
আমার নাম দিয়ে মানুষ তোমাকে ডাকবে। 
এসব বিষয়ে তুমি একসময় বিরক্ত হবে
তখন সম্পর্কের ইতি টেনে ছেড়ে চলে যাবে। 

তাই চাই না ভালোবাসা হোক কোন দিন
সম্পর্কে না বাজুক বিচ্ছেদের বীণ।







র হি ত  ঘো ষা ল
প্রতিশ্রুতি

দু'হাত তুলে দাঁড়িয়ে থাকা গাছেদের ছায়ামূর্তি ঘিরে আমাদের অবিশুদ্ধ সুপ্রাচীন নাচ, আমরা সব অবিনশ্বর ক্ষুদ্র অংশ এই অশ্রু ভেজা মাটির, 
স্ফুরজ্যোতির্ময় প্রতিশ্রুতির পাখি আমাদের আকাশে দীর্ঘ সময় উড়ে বেড়ায়, চঞ্চল কাঠবিড়ালি আমাদের 
সামনে দিয়ে দৌড়ে পালায়,
সব অগভীর রাতে আমরা নুন ভাতের সামনে বসে থাকি,
এখন আমাদের দাবি সব শিশুপাঠ্য বইয়ে সূর্যের ছবি আঁকা থাক ।।






হা নি ফ  রু বে ল
প্রণত সুন্দরে প্রতি

প্রাতঃসন্ধ্যার কাছেই ধরা দাও বুনো সুন্দর
এই অন্ধকারকে মোহনীয় করে তোল ধীরে ধীরে ,
লাজুক কামনার স্তব্দ মূহুর্তগুলোর ভিতর তাকিয়ে দেখ-
কেমনে সাজিয়ে রেখেছি প্রণত শ্রাবনের অবিরল ধারা।

যার নিত্য ঢেউ স্বর্ণিল উপকুল ছুঁবে বলে
প্রখর দুপুরের বুকে ছায়া প্রতিম অশ্বথ হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে থেকে
তাপিত সূর্যের সবটুকু আগুন ধরেছে শিরায় শিরায় ।

তাকে একটু আড়াল দাও , নিরালা জোৎস্নার মদিরা পান করে
কাঙ্গাল জীবন শিখুক মাঝিমাল্লাদের গান।










হা বি বু ল  ই স লা ম  তো তা 
গিরগিটি সংবাদের সারসংক্ষেপ 

ধর্মত্যাগী সারমেয়টি বড় ছিঁচকে স্বভাবের,
থাকে ঠাকুরবাড়ি—
সুযোগ পেলে মোল্লাবাড়ির হাড় চিবায়, 
প্রেমকরে স্যান্ডলিনার পোষা কুকুরীটির সাথে। 
প্যাগোডার সদর দরজায় বসে বসে 
করে ঘেউ ঘেউ
সবার সান্নিধ্যে আসে, 
সুবিধা বুঝেনিয়ে শটকে পড়ে— 
মনে হয় সে এ' সমাজের নয় কেউ। 

শুনেছি তারকাখচিত কৌলীন্য তার 
চৌদ্দ পুরুষ—
সবছিলো রক্তচোষা গিরগিটি, 
যেদিকে চোখ পড়ে সবই শূন্য করে 
পড়েরয় খালিভিটা— ঘটি-বাটি ! 

এভাবেই যুগের পর যুগ
নৃত্য করে দুর্ভাগা দুর্ভিক্ষ 
হারিয়ে ফেলে সুখ, 
বাংলার উঠোন থেকে চুরি হয় শস্য 
থেকে যায় ভুকা পেট 
আর অসংখ্য শুকনো মুখ। 







ম ন সু র  আ জি জ
পৃথিবী হাওয়ায় উড়ছে

পৃথিবী হাওয়ায় উড়ছে
ডানা ঝাপটা‌চ্ছে সৌরগ্রা‌মে
কোন এক দুষ্টু বালক কে‌টে দি‌য়ে‌ছে তার সু‌তো
তার অ‌ভি‌যোগ, এই হিংস্র আর স‌হিংস পৃ‌থিবীর প্রয়োজন নেই আর
যেখা‌নে মানুষ‌কে মারা হয় পু‌ড়ি‌য়ে
শিশু‌কে ব‌ঞ্চিত করা হয় মা‌য়ের আদর থে‌কে
ভা‌রবাহী পিতার কো‌লে দেখা যায় পু‌ত্রের থকথ‌কে গ‌লিত লাশ
এরপর পৃ‌থিবী কী ক‌রে থাক‌তে পা‌রে মানু‌ষের মা‌ঝে!

একজন ধ‌্যানমগ্ন কি‌শোর লা‌ফি‌য়ে উঠে‌ছে উচ্ছ্বা‌সে
ল‌্যাব থে‌কে নতুন এক পৃ‌থিবীর চারা তার হা‌তের তালু‌তে
সবুজ পত্র-পল্ল‌বে ক্রমশ বিস্তার কর‌ছে পারপাশ
মানুষ জ‌ড়ো হ‌চ্ছে তার চারপা‌শে
নতুন এক মানব বস‌তি নির্মা‌ণের প্রত‌্যয় সবার ম‌নে।






সা ল মা  আ ক্তা র
শেষের নীলে ভালোবাসা

যতটা আভিমান জমিয়েছো নীল খামে
যতটা ঘৃণার স্তুপ পুষেছো বুকের গহীনে,
একবার সেই স্তুপ সরিয়ে চোখের গভীরে তাকিয়ে দেখো- 
অবহেলা আমিও কম সহ‍্য করিনি। 

বেলা শেষে আমিও কাঙ্গালের মত বুক পেতে অপেক্ষা করি তোমার। 
অভিযোগ, অভিমান, ঘৃণা, অজুহাত দেখিয়ে 
আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি দুজনের কাছ থেকে।
আমাদের কথার ধার এখন সুঁচালো চাকুর মত ধারালো,
স্বাধীনতার কালোরাত্রির মত ভয়াবহ। 

অথচ আমাদের কথা ছিল সভ‍্যতার রোমান নগরীর মত গড়ে তুলবো 
ইচ্ছে কাঠামোতে আপন অভিন্ন নীড়। 
আমাদের জেদ থাকবে কেউ কাউকে ছেড়ে যাবোনা মরনেও। 
এতোটা অনুভূতি জমিয়ে আজ নিজ নিজ আধিপত্য কায়েম করে চলেছি 
যার যার মত করে। 

দেখো,
একদিন মৃত্যুদূত সমেত ফেরারি চিঠি নিয়ে দাঁড়াবো তোমার দুয়ারে,
শেষ বারের মত বলে দিব- 
তুমি আমাকে ততটাও ভালোবাসোনি যতটা বেসেছিলাম তোমাকে।






সু ম ন  রা জ  স র কা র 
একটি ছবি

একটি ছবি,
শুধু একটি ছবি নয়।
ছবিতে লুকিয়ে থাকে-
না বলা
না দেখা
কতো যে আনন্দ, দুঃখ-ব্যথার অশ্রু!

ছবি কথা বলে না, সত্য।
শুধু
নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকে
উন্মোচিত
আকাশের মতো;
তবুও-
জীবনহীন ছবির, জীবন্ত ভাষা
বুঝতে কারো বাকি থাকে না।

একটি ছবি-
একটি জীবনের গল্প,
একটি ইতিহাস...






গো লা ম  র ব বা নী 
বোধ- ২৪

সেই দুঃস্বপ্নের অমাবস্যার সময় আজ চলমান 
পাখিদের ঠোঁটে ঠোঁটে খুটে খুটে খায় পোকামাকড় 
এরচেয়ে ভালো থাকার রাজনীতি কোথায় পাবে?

মুখরিত হয় কথার খরস্রোতে পরিমার্জিত হয়ে
সুরভিত ফুলের সুগন্ধে বড় রাজনীতি ছড়ায় এখানে
নষ্টঠোঁটের চেয়ে বড় কোনও রাজনীতি হয় না

তিপ্পান্ন বছর সুন্দরের সর্বনাশে একখণ্ড নষ্টধূলি;
নষ্টগ্রাম- বিনষ্ট মনের দীর্ঘ কালের বিষাদে রূপান্তরিত 
শুধু হতাশা আর আক্ষেপের কেন বজ্রপাত হয় না?
অটোহান ও ওপেনহাইমার আশ্চর্য সুন্দরের মালিক-
না পাওয়া শঙ্কিত সংক্ষুব্ধ সে-তো চিরদিনের ক্রুদ্ধজোঁক
মুক্তির পদাবলি বিমুখ হয়ে একনিষ্ঠচিত্তে গিলে নিচ্ছে 
গিলে নিচ্ছে একাত্তর; একাত্তরোত্তর উজ্জ্বল দিন

পূর্বদিকে উদিত সূর্যের মতো ঠিক চিরন্তন অহংকার 







পৃ থ্বী শ  চ ক্র ব র্ত্তী
তুমি আসবে বলে 

বসন্ত! তোমাকে শুভেচ্ছা জানাবে বলে চেয়ে দেখো    
পলাশ, শিমুল সেজেছে রঙিন সাজে  মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছে সারি সারি  ফুল হাতে। 
শিমুল , পলাশের বনে লেগেছে আগুন
বরণডালা সাজিয়ে রেখেছে তোমাকে বরণ করবে বলে।

ফুলের বাগান সাজিয়ে রেখেছে বেলী কামিনী, অশোক, কৃষ্ণচূড়া,
ঘুমভাঙা চোখে জেগে উঠেছে পলাশ।
রঙ মিলন্তি মেলায় আমের মুকুল সেজেছে রাজ মুকুট তোমাকে পরাবে বলে।
লেবুর সুগন্ধ ছড়িয়ে রেখেছে তোমার চলার পথে,
তোমার জন্য আকুল হয়ে কোকিল তুলছে কুহূরব।
মরমীয়া সুর ভুলে গেছে আজ কোন্ রাখালের ছেলে! 
ময়না, শালিক, মৌমাছি আজ ভুলেছে নিজের কাজ
তোমার জন্য তুলেছে সুর ফাগুন হাওয়ায় মাতাল গান।






ই লি য়া স  মা হ মু দ
নিষিদ্ধ কোরাস

লেখা হয়না আর তেমন কিছু সুদীর্ঘ ছায়াপথ ডিঙ্গিয়ে আষাঢ়ের বৃষ্টির লিরিক ভিজে দিয়ে যায় দুঃখী সাদা কাগজের নিঃশর্ত ধূসর ব্যঞ্জনা
ঘাতক সময়ের নষ্ট নীড়ের ঘুমন্ত জোৎস্নার প্রজাপতির ভূল ভাঙ্গার গানে মধ্যরাতের নিঃসঙ্গতার বুকে  বুনো মেঘ এঁকে দেয় অপাঙ্বেয় ইজেলে।জন্মান্তরে প্রেমের বায়োগ্ৰাফির লাল ইটের ভৌগোলিক দিবসে পরাজিত হয় আইডেনটিটি।
দেখা হবেনা কশ্নিনকালে; কফিনের ভেতর সাদা কাফনের সুপারসনিক মন শুয়ে আছে অনাদি, অনন্ত অন্তর্জালের অভিধানের নিষিদ্ধ কোরাসে। 







ফ রি দ  ভূঁ ই য়া
সুক্ষ্ম অস্বীকার 

দিনান্তের জিজ্ঞাসায় নীরব দক্ষিণ 
পশ্চিম হেসেকেঁদে জানায় বিদায়
উত্তরের আলস্য ভাঙাতে 
মেঘেরা পায় কি পায় কদাচিত আমন্ত্রণ 
পূর্ব স্বভাব চরিত সুখে
আর কেউ পায় নাকি দিবসের উদ্বোধন... 

এক নবান্নের দেশে হেমন্তের মাঠে জীবন আনন্দ 
কবি মনে জীবনানন্দ দাশেরে;
প্রতিটি নদীতে তাই কুয়াশায় গোসল সেরেই 
হাঁসের ডানায় সূর্য কম্পমান...

নিশিথের মুখচোর জমাট শিশির
তলে ও অতলে ছলে ঘুঙুর বাজায় 
মনোমঞ্চ ভেঙে যায়—যাবে যায় যায় 
সরল বাঁকাতে বাঁকাতে আশ্চর্য বৃত্ত
বৃত্ত ভাঙার সবক নিলে বিন্দু—অশ্রু বিন্দু 
বিন্দু মেয়েটির চোখে তির 
ছেদ করে চমৎকার পাষাণ নিশান...

রূপশ্রীর কোথাও কোথাও বেজায় বিরক্তি তবু 
লেগে থাকে সুক্ষ্ম অস্বীকার! 







রা জে শ কা ন্তি  দা শ
ধূলোর শরীর

আমার ধূলোমাখা শরীর। দিনরাত একাকার। কে যেন বললো দিনরাত একাকার হলে বেঁচে থাকা যায়? কে যেন বললো নিরাপদ আশ্রয়...? পুরো দেহের চাঁদ স্মৃতি ঝরায়। গহিন অতীতে ভাসে শীলবাড়ির উঠোনে রাধা-কৃষ্ণের পালা, মা'র কন্ঠ। পাখিরা ফিরছে...। পাতারা ঘুমায় গাছের ওপর। পদ্মজা পুকুরে। শেকড়েই ওদের স্বস্তি। এতটুকু ভাবতেই শরীরটা দেখি। বুঝে নিতে কষ্ট হয় এ আমি? ঝিলমিল সবুজ। নদীতে ঢেউয়ের কোলাহল। ধু-ধু বাতাস। পাশের গ্রামে শিব ঠাকুরের গান। সবই আছে। আমি শিশিরহীন ধূসর- পান্ডু। বাবার মতো মা-ও মন্ত্রের শ্লোক। কে যেন নিয়ে গেছে ঘুম? ধূলোরা আমার শরীর হয়ে উঠেছে কখন-কবে কে জানে? টেবিলের চারপাশে সবাক আঙুল। কার কথায় বেঁচে থাকা? কোথায় নিরাপদ আশ্রয়...?





দে বা শি স  ভ ট্টা চা র্য 
বিবর্তন 

বিরুদ্ধ বাতাসে রং বদলে যায় 
গা থেকে খসে পড়ে আলো 
                                        ছেড়া ছাই 
যাপনের রসায়ন বদলে ফেলে 
ঢুকে যাই বর্ম খোলসের ভেতর 
               বদলে ফেলি আত্মপরিচয়।



Post a Comment

0 Comments