ইচ্ছেগুলোর মৃত্যুঘটে
এই যে আমার মনখারাপের সময় গুলো
একলা কেমন কাটিয়ে দেই, শব্দহীন, সঙ্গীবিহীন,
এই যে আমার ইচ্ছেগুলোর গুমড়ে মরা মধ্যদুপুরে,
মেঘের, ভেলায়, পাখির পালকে
ভাসিয়ে তোমায় খবর পঠাই
তুমি আসো না ফিরে।
গোধূলির চরাচরে যখন নিস্তব্ধ অন্ধকার নামে
সন্ধ্যা সখী ভালবেসে সান্তনা দেয় চুপিসারে।
সাজের প্রদীপে, ধূপের ধূনোয় ঘর ভরে যায়,
আমি চাই তোমাকে সঙ্গীকরে টাপুর টুপুর খই ফুটিয়ে
অনেক কথার মালা গাঁথি।
অযুত কথার মালা সাজিয়ে, ইচ্ছেটুুকুর মৃত্যু ঘটিয়ে
লুকিয়ে ফেলি ঝাপসা দু’চোখ।
নিজেকে কেমন সামলে নিয়ে, আবার একটা ভোরের স্বপ্ন গায়ে মাখি।
দিনের শুরুর ছন্দ না থাক, একাই বয়ে নিয়ে চলি
তুমি থাকো না পাশে।
কান্না গুলোও কেমন যেন আমায় তারা বুঝতে পারে
আসেনা চোখ মেঘলা করে।
খরতাপে পুড়িয়ে শেষে উড়িয়ে দেয় অট্ট হাসে ।
মাঝে মাঝে বিদ্যুতের বিদীর্ণ রেখায় অন্তর হয় ছিন্ন।
রাত্রি জানে, রাত্রি শোনে গুমরি ক্রন্দন।
রুদ্ধ অনুতাপে ফুলে ফুলে
নিঃশ্বাসে এক গভীর কষ্ট।
বিষন্নতায় তোলপাড় করে না পাওয়াদের দুঃখ গুলো,
এই যে আমার একলা পথে সঙ্গীবিহীন অসাড় বিরাগ।
পাড়ভাঙ্গা এক নদীর মতো বুকে জমা ঢেউগুলোর উখাল পাথাল
জীবনের সবটুক সঞ্চয় হারিয়ে
মরু পথটুকু পাড়িয়ে চলে যাব স্বপ্নটুটে
তখনো তুমি থাকবেনা জানি বন্ধুরূপে আমার পাশে।
বিবর্ণ ভালোবাসার রং
লুকোচুরি খেলতে খেলতে কখন মেয়েটি জানতে
পারলো জীবন ভর তাকে কতকিছু লুকোতে হবে।
তার শৈশব, যৌবন, বার্ধক্য।
এক আকাশ ভরা বুক নিয়ে সে খুঁজে বেড়াবে
লুকোচুরির ছোট্ট ঘর।
দু’ একজন মানুষ
ছোট্ট একটা নাক ছাবি
পায়ের মল রেশমি চূড়ি
নদীতে বহমান ঢেউ।
বুকের ভিতর গভীর ক্ষত নিয়েও লুকোতে হবে চোখের জল,
তারা ভরা রাতে ছাদের কিনারে তার পছন্দের জায়গায়
দাঁড়িয়ে লুকিয়ে ফেলবে অবেলার দীর্ঘশ্বাস।
একটু বৃষ্টির জন্য চাতক পাখিরমত হাত বাড়াতে হবে
অপেক্ষার দীর্ঘরাত্রি, তাও লুকোবে,
কিছু পুরোনো মুখ, আবছাদিন, ভুলের চিহ্ন
আজীবন গোপন দীর্ঘশ্বাসহয়ে বুকের গহীনে লুকিয়ে থাকবে।
একদিন পথ শেষ হবে। উত্তরের বাতাসে বিবর্ণ হবে ভালবাসার রং।
লুকিয়ে পড়বে সে তার চিরচেনা মানুষেগুলো থেকে।
স্বপ্নভাঙ্গা শোক
আমিতো চাইনি পদ্মফুলে ভ্রমরের খেলা দেখতে
শিশিরে ভিজিয়ে পা
কুড়িয়ে আনতে শিউলি
কিংবা নীল আকাশে কাশফুলের মেঘ।
ভাঙ্গা মন, ভাঙ্গা চাঁদ মুখরতা চায়না।
নীরবে জীবনভর করেছি অনেক পুঁজি
কার জন্য মন ভেঙ্গেঁছে গড়েছি আবর কাঁদামাটির
প্রলেপ দেওয়া খুঁটি।
আমিতো চাইনি ভরা পূর্ণিমায় মাথারাখবার কাঁধ
অরণ্যে একা হেটে যাওয়া পাতা ভাঙ্গাঁর শব্দ।
সাজিয়েছি শুধু, গুছিয়েছি এই সংসার
পড়ন্ত বেলায় পেয়েছি আমার অতৃপ্তির হার।
এখনও কোন ধূসর সন্ধ্যায় একাএকা রেললাইন পেরিয়ে
বান্ধবহীন স্থির কায়া নদীটির পাশে দাঁড়িয়ে
হাহাকার মেশা কন্ঠে বলেছি–
আমি পরিত্রান চাই স্বপ্নভাঙ্গাঁ শোকথেকে।
ভালোবাসার রং
তোমার সাথে আমার প্রথম প্রেম
এ এক স্বপ্নের অনুভূতিতে শৈল্পিক সৌন্দর্য,
তোমার লেখা প্রথম চিঠি
শ্রাবন মেঘের ধারায় অনুভূতির আস্ফালন,
ছোট ছোট অক্ষরগুলোকে ভালবাসার রুপদান
ভালবাসার নন্দিত রুপের অনুভূতি।
সারাদিন অঝোর ধারায় শ্রাবন মেঘের আনাগোনা
তার মধ্যে চিঠি পেলাম তোমার
নীল খামে বিষন্ন মেঘের ভেলায় ভেসে
বিষাদ গুলোকে ধুয়ে ফেলে
ছড়িয়ে পড়লো মিঠে রোদ্দুর।
বৃষ্টিতে ভিজলাম আমি
মেঘের সুরে গেয়ে উঠলাম মন সঙ্গিঁত
ভাসিয়ে দিলাম মন খারাপের বিষাদ গুলোকে
এরই মধ্যে বৃষ্টি এলো ঝমঝমিয়ে
এলোপাথাড়ি হাওয়ার বেগে
ভালবাসার রঙিন স্বপ্ন বুকে নিয়ে।
ভালবাসার রং কেমন জানিনা
নীল, লাল নাকি হলুদ
সেই রঙিন বৃষ্টি ফোটা খোলা জানালার ভিতর দিয়ে
ঝাপটা দিল চোখে মুখে।
নান্দনিক প্রেমে ছুঁয়ে গেল আমার হৃদয় মন।
কবি ও কাব্য
আজ বুঝি মেঘেদের ঘোমটা খোলা হাসি
কিশোরীর কালো চোখে ভালবাসাবাসি।
আজ বুঝি শরতের স্নিগ্ধ কুয়াশায়
আনন্দে ভরপুর অরক্তিম হাসি
ভালোবাসে মৌটুসী মধুর কন্ঠি
ভালোবাসে আকাশে পাখনা মেলতে
বুনোহাস খেলাকরে দিঘীর প্রান্তে
ফুলেরা সুবাস বিলায় নিঃস্বার্থে
ক্ষেতের আলোগুলো পুকুরে পড়ছে
কাশফুলে প্রজাপতি মাটি ছুয়ে দুলছে।
পুচ্ছ তোলা সেই পাখির গানটা
হাওয়ায় এলোমেলো বনপথে ছুটছে।
আকাশের তারাগুলি মিটিমিটি জ্বলছে
চাঁদের হাসির কাছে সব বাধ মানছে
আজ বুঝি বধুয়ার চোখে নাই ঘুমটি
রাত শেষে খুঁজে ফিরে স্বপ্নের দিনটি
আস্তচলে আজ আলোর ইশারা
বিষাদের রাতে যেন জ্যোৎস্নার বন্যা
জীবনের কিছু কিছু অনাহূত শব্দ
অধর ছুঁয়ে যায় অব্যাক্ত যন্ত্রনা
তাই দিয়ে গড়ে উঠে কবির কল্পনা।
0 Comments