লবণাক্ত হাওয়ার বিভূতি
নাম না জানা সমুদ্র সৈকত গিলে খাচ্ছে অরণ্যের গাছপালা
নোনা জল-নোনা জল ঢুকে পড়ছে
আস্তে আস্তে নিষ্প্রাণ হয়ে যাচ্ছে মাটি
পড়ে থাকছে, মরা গাছের ডাল
তাদেরকে ঘিরে রেখেছে পূর্ণিমার আলো
বাঘের থাবার ছাপ,খুদে খুদে শান্ত ঢেউয়ের শব্দ
আকাশ পোড়াতে আগুন লাগে না
লবণাক্ত হাওয়ার বিভূতি আগাম বার্তা দিচ্ছে প্রজনন মৌসুমের
ঘর
একটা গোটা সংসার লুটনো আছে পড়ার টেবিলের উপর
আলগা করে বাইরের গেট খুলে মুখ বাড়িয়ে দেখি
বড় মানুষদের ছোট ছোট পায়ে যাতায়াত
বাতাসে দূষণ কমে এসেছে,নীরবতা খান্ খান্ হয়ে যায় ছেড়া ঘুরির আটকে থাকা শরীরের স্পর্শে,
ওই ঘুরিটা একদিন একটা হুর ছিল,তার ডানা কেটে হাতপাখা বানিয়েছি
হুরদের মুখ দিয়ে মুখোশ ভালো বানানো যায়।
আমার ছাদে যে ঘন অরণ্য সেখানে এখন নিদারুণ খিদে
আর তার পাশে যে নিরীহ গ্রামের রাস্তা, খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে জানে সে
মহুয়ায় মাতাল হয়ে থাকে আমার ঘরের নীল ঘাসজমি
কায়
বাতির বিচ্ছুরণ আর আগ্নেয়গিরির ছাই
এই দিয়ে কেটে যাবে নিশা।
ছোট মুখে বড় কথা বলা হবে
সবকটা গলির তুলনায় একটা গুলি দগদগে রক্তাক্ত
পথের শিশুদের চোখে ঘুম যতটা প্রাকৃতিক আমাদের জেগে থাকা ততটাই
আরো মনে হয় তোমার হৃদয় এখন পাখির চঞ্চু
ফুলের মৌ না পেতে পেতে তুমি মাঝ রাস্তায় এসে পড়েছ
দুরন্ত পানোন্মত্ত গাড়ির সামনে, তাও তোমাকে মাটি দেবো আমি একা।
রাতের গান্ধীঘাটের কালো জলের উপর মৃদু আলোর ছলাকলা
সমস্ত রকম আসক্তি থেকে অব্যাহতি দেয়।
সড়কের উপর দিয়ে ছুটে যায় এক
সমান্তরাল
জীবাধার
পরিমণ্ডল
সামান্য পুরনো ধাঁচের একটি বাড়ির বারান্দা থেকে দুটো চাকাকে গড়াতে দেখছি।চাকা গলতে দেখছি।মাথা ঘুরে যেতে দেখছি।মাথা কেটে নিয়ে যেতে দেখছি।বিড়াল আর আঁষ্টে মাছের হাঁচি-কাশি দেখছি।
আকস্মিক ত্রাস চাপা দিয়ে নামিয়ে আনছি মেঘমেদুর দিন।ধীরূজ এইসব দিন যেন দেহ ছেড়ে যায় না,অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সময়ের থেকে অনেক ধীর গতিতে চলে।নিত্যদিনের ডাল ভাত হয়ে ওঠে আরো সুস্বাদু ।
পুদিনা থেকে উদাসীন ঠান্ডা ভাব
উত্তর থেকে দক্ষিণ খগোলকে ছড়িয়ে পড়ে
ঊর্মিকে বলতে চাই
মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীর নাম দিয়ে কোনও কিছু চিহ্নিত করার প্রয়োজন পড়ে না।
এই সাংকেতিক হস্তক্ষেপ অপ-মৃত্যয,
জন্ম চিহ্ন ভেসে যায় সবুজ ঘাসের উপর দিয়ে গড়াতে গড়াতে নদী প্রবাহে
নদীর জীবনমরণের
খবর রাখে বিথীকা
রঙ্গন ফুলের বনানী থেকে কিছুটা অভিমান তুমিও মেখে নিও।
এই আর্দ্র শেষ বেলায় আলাপচারিতার উছিলা ছাড়া আমাদের আর কিচ্ছু নেই
রহিত ঘোষাল
দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ এলাকায় ১৯৯০ এর ৯ অক্টোবর রহিত ঘোষালের জন্ম, সেখানেই শৈশব ও কৈশোর ব্যয় করেন।লেখালেখি করছেন ২০০৭ সাল থেকে। জীবনের বিচিত্র সব শিল্প সংস্কৃতি সংক্রান্ত কৌতূহল ও স্বপ্ন মেটাতে ও বাস্তবায়ন করতে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা কলেজ অব্দি।বিভিন্ন রকম পেশা বদলে বর্তমানে একটি ব্যক্তি উদ্যোগের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। কবিতা লেখার আশেপাশে অভিনয় করেছেন মঞ্চনাটক ও অন্তরঙ্গ নাটকে। গান গেয়েছেন এবং লিখেছেন নানা বাংলা ব্যান্ডের দলে, অবসরের ছবি আঁকতে ভালোবাসেন আপন মনে।
0 Comments