অনিক রায়ের কবিতা

Anik Roy's poetry





দাস বাড়ির হাঁসকাটা

অন্তরা তখন গোলাপি ওয়ালের আলে সৌরিকের স্বার্থ পন্থায় বোবা হয়ে বসে আছে, কুটকুট করে চাঁড়া কামড়াচ্ছে মাংসের লোভে! তখন তার উঠনে নিমগাছ চড়ক স্ত্রী-আচারে শাক্তপাটে রক্তমাংস ব্রত খুলে বসেছে;

অন্তরার জল্লাদ  ভাবনার বাণ টানটি আমার জলকুপের দিকে ধেয়ে আসছে এবং তা আমি বুঝতে পারছি স্বাক্ষরের সাইকেলের সামনের চাকাটি রক্ত-টোনার তন্ত্রে লাল-বুনন ছড়াচ্ছে আমার নিকৃষ্ট হাতের যোনিমুদ্রায় প্রণাম আর ইতিমধ্যেই আমার হাতাল স্বভাবের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছি
আমার সামনে মাঘের শীতলিপিতে আসছে বিব্রত রক্ত চৈত্র

আমার ডানপাশের ঘাসবহুল তারতম্য যেন স্বার্থ সাহারার বটি ফুয়ারা তারপর ধীরে ধীরে অন্তরা শেষ হওয়ার সংকেত দিচ্ছে ক্রোধ কলির দিকে এইভাবে হাসমাংস শোকে অন্তরা ছাড়বে দেশের বাড়ির মাটিটি সমস্ত খাবার বর্জন করার ভয়ে স্মৃতি-কাকী  ভিজিয়ে ভিজে দিল আশ বটিখান 
হাতাল দাঁটি উড়ে গেছে কালীপূজার ফাগমেঘে আমি বিড়বিড় করে এগিয়ে গেলাম অজিত কাকার সিঁড়ির দিকে

তখন অন্তরার একটি নতুন শেষ রচনার ইচ্ছে হলো শুরুর দিকে বিপরীতে আমিও রচনা করতে শিখলাম হামেশা মাংসিক উপনয়নে তার মায়ের হাতাল বাঁধায় বাড়ি একদিন বসলো আর আবার সেই একই সুত্র ধরে তাকিয়ে থাকলো হাস-টির গলার স্বরে। 




বন্ধ্যাকামনার রাতে

সহচার্য সতীর্থ রা নিজ-নিজ বিছানায় কবিতার কামনা খুলেছে সেখানে আমি রাতে নিষ্কাম ছিলাম
সেদিনের এককাপ মধুর কথা ভাবতে ভাবতে বিকলে কামাখ্যার সুতো ও চায়ের কাপে সরিষার তরল অন্তর পেয়ে আমিও কামনা হয়ে উঠলাম আজ রাত থেকে আমার হাতে বাঁধা কামাখ্যা সুতোয় ইন্ধিত প্রেমিকা ছাড়া রাত আমাকে কবিতা লিখতে বলছে কাল অক্ষরের পূজো হবে এই নিষিদ্ধ লেখা অক্ষরে তারপর গত ষষ্ঠীর তির্যক চিত্র ধরে পঞ্চমী লেগে যাওয়া ভয়ে কালোগালের মৌণ ব্যাকারণটি তিথির মধ্যে তিথির পদ হিসেব করছে আমি এও উপেক্ষা করে তাদের মতো ইতিহাসবেত্তার কাছাকাছি সারমর্ম জেনেও কামনার বুধ হয়ে লিখছি ওই সারমর্ম টুকু আপনা আপনি বর্জন হতে থাকলো তখন আমার জানালার পাশে স্মৃতি কাকীর খোঁপ ভেঙে স্বাক্ষরের বানানো মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাধারার খেলনা বন্দনা ছুয়ে এলো দক্ষের ঝোল মাখা রাজহাঁসের সাদা আত্মজ শরীর বলছে আমাকে সে ভোজ কামনার কথা এই কথা ফাঁস হলে প্রজারাও রাতের জন্য শিক্ষিত রাজা এই ইন্ধিত রাতে নাচে হয়তো কিছু রাত্রিকামী কামুকতার দৃঢ় পতিতা কার মন্ত্রণায় এসেছে রাতের একটি বীর্যকাগজের আসরে 
কাল তোমাদেরো হাতেখড়ি কামস্বার্থিক নাচ দ্রুত হোক নিষিদ্ধ অক্ষরে
তখন তাকে এই অক্ষরে কিছু সময়ের জন্য আজ হলুদে সুরের হও তারপর রোববার শুনবো তোমার যোনিতে বয়ে আনা বন্ধ্যা লোকশ্রুতির বিদ্যা ইন্ধিত গীতি।




শ্মশানের যৌবন 

হ্যাঁ ফিরেছে শ্মশানের কাঙখিত যৌবন, 
শ্মশান সাজছে নব আভরণ।

সাজাও সাজাও নদীর পাড়ে ফুলশয্যার খাট, 
বয়সের বাধা নেই কাকে যে টেনে নেবে- 
পেতে যৌবনের স্বাদ
নতুন নাটে নাম হয় বসে চাঁদের হাট। 

হ্যাঁ শ্মশানের যৌবন ফিরেছে, আগুনে  ঘেরা চাদরে। 
শ্মশানের নাকি অহংকার হয়েছে, শ্যামা মা-র আদরে-
শুনেছি যার দিকে তাকায় শ্মশান, 
তাকেই মোহিত করে।
যৌবনের অস্তি রাখে শেষ কাঠের কোটরে, 
তোমরা বাজাও খোল করতাল।
 চর্চা হোক শ্মশানের যৌবনের, 
নীরব নিশিত জ্বালাও প্রদীপ-
একে একে সঙ্গী হবো যৌবনের, প্রতিটি ক্ষণের।




কীর্তনের বিবৃতি 

কীর্তনীয়াদের কত সুখ;
তাদের বাকযন্ত্র কত তীব্র, 
চোখের বাঁধের দুয়ার খোলা।
উন্মুক্ত আসরে ;
আমি অদৃশ্য ভক্ত তোমার প্রত্যাশায়-
আমি আর তোমাকে দেখেছি কই, 

আমি আবদ্ধ পদাবলী;
রাতের কাছে থামিয়ে দিয়ে
শাসনের মাপকাঠি -
আমি অন্ধকারেও পথ পেয়ে যাব।

আমার বাকযন্ত্র কাঁদে আসরের উপকূলে ;
 বন্দী দশায়-
তবু আমি বিবৃতি দিই তোমার জন্য যা পৌঁছায় ;
প্রতিটি  সম্প্রদায় সংঘের  শ্রীখোলে।



 
রক্ষকূলে ছাঁদ

পেঁপের ছাঁদ বড্ড নরম তবুও  
তার আচ্ছাদনে;
 জল-ত্যাগী শৈবালের আশ্রয়।

সূর্য প্রণাম শেষে তীর্যক ভাবে দেখেছি;
 স্রোতশূন্য সুযোগে গৃহ-বিস্তার। 

ত্রি-শাখায় ছাঁদ বিভক্ত 
যদি বর্ষা আসে -
গৃহ তলাবে জলে
হে গৃহাশ্রয়ী অনুজীব;
জলবিচ্ছিন্ন হওয়া -
তোমার অভিমান হলেও
আমি  বুঝলাম;
তোমরা গৃহবাসী কারো সঞ্চয়ে।



Post a Comment

0 Comments