রোকেয়া ইসলাম এর কবিতা

Poetry of Rokeya Islam



বাঁশি

দিনের জন্য রাত তাড়ানোর গল্প শুনতে শুনতে
বড় হয়েছি
রাতের সাথে সাথে নক্ষত্ররাও যে ঝরে পড়ে;
জানা ছিলো না
তোমার ঝরে পড়া আমাকে আবার ফেরাতে চাইলো রাত্রির দিকে
কিন্তু আমি যে দাঁড়িয়ে আছি কাঠফাটা রৌদ্রের দুপুরে
একখানা চীনামাটির বৈয়াম হয়ে।

জোছনার গান বাতাসে মিলাবে, 
কিন্তু আমার সুরে কোনো বাঁশি যাবে আর  কতদূর?


মৌনতা

কার্পাস ছুঁতে ছুঁতে আকাশ ছুঁয়ে ফেলি
আমার সমস্ত অঙ্গে মেঘের শিহরণ
আমি জল খুলতে খুলতে
নদী হয়ে যাই
আমার প্রাঙ্গণে শিরিষের মায়া
বরফের চাঁদ আর ঋতুবতী জ্যোৎস্না
আমি আকাশ ধরতে ধরতে
ধরে ফেলি তাকে
যে আমার শুরুই মৌন মুখের ছায়া....



জলে ভাসা দুঃখ

একদিন এই আমি ভেসেছিলাম বেহুলা ভাসানে
পরতে পরতে দুঃখ সাজিয়ে শব শয্যাসনে
সীমান্ত পেরুনো প্রস্তুতি একাকী এক নারী
দুঃখ অভিযানে সঙ্গী হয়েছে,
কে কোনকালে?
শ্রাবণসিক্ত জলে বৃষ্টিরাও ময়ূরাক্ষী খোঁজে
শঙ্খচূড় রোদের দহনে পেতে দেইনি শরীর শিল্প
সমুদ্র চিত্রকর্ম আকাশ ধ্রুপদ -সঙ্গীত আর সূর্য নৃত্যকলা
উজান পেরিয়ে আমি বেহুলা তপোলোকে
সাথে মিহি সেতার বাদ্য
জলঘুঙুর বেজে ওঠে সহস্র যুগের বদ্ধ নাচঘরের বারান্দায়
মেঘমল্লারে ঘুম ভাঙে আগ্নিযুগের কৃঞ্চচূড়ার
অকসাৎ খুলে যায় কাঁচঘরের কাঙ্ক্ষিত দরজা
প্রস্তর যুগের পা দুখান বাজায় বিবর্তন সভ্যতা
বিমুগ্ধ দেবরাজ আপ্লুত মেঘ বর্ষণে
এবার ফিরতি টান মোহন মাটির ঘাটে

পৃথিবীর নদীরা আর জলে ভাসাবে না সোনালি দুঃখ
অপরাজিতা - শোন, কোন এক মাহেন্দ্রক্ষণে
প্রকৃতির অনিবার্য মিথুন মন্ত্রেই জলে ভাসা দুঃখবীজে
জন্ম নেয় বেহুলা সুখ.... 

Post a Comment

0 Comments