কামরুল বাহার আরিফ এর কবিতা

কামরুল বাহার আরিফ এর কবিতা


চোখের নির্মোহ ক্যামেরায়


আমার চোখটা বড্ড সনাতনী।
বুক্ষ থেকে একটা পাতা দুলতে দুলতে খসে পড়লে
আমার চোখটাও পাতার সাথে মাটিতে নেমে আসবে।
তারপর কিছু বাতাস পাতাটাতে গড়াতে গড়াতে
যতদূর আমার চোখ যায় ততদূরে নিয়ে যাবে
ঝরা পাতার কাণ্ডে চোখের অলক্ষ্যে কিছু চিহ্ন রয়ে যায়।

রবীন্দ্রনাথের ছবির পাশে টানানো একটা ঘড়ির সময়ের কাঁটা
অবিরত পেরিয়ে যায়। নিমগ্নচিত্তে ভাবতে ভাবতে
বলি, গুরুজ্বী কতটা সময় আপনি পেরিয়ে এলেন?
সময়টাও আমার সনাতনী মনের বাতায়ন হয়ে
কবিগুরুর চোখর গভীরে প্রবেশ করলে জবাব পাই—
কত দীর্ঘ সময় রবীন্দ্রনাথ হয়ে থাকতে হয়!

কিছু খোলা আকাশ পেতে চায়।  ঢোলের বাদ্য বাজছে।
শারদের ঝরা শিউলি গন্ধ ছড়িয়েছে। শব্দের দোল আর
শিউলির গন্ধ খোলা আকাশ চায়। ধূপগন্ধী বাতাসটা
সনাতনী নিঃশ্বাসে আবিষ্ট করে কতকাল পরে।
আকাশে তাকাতে অন্ধকার বেয়ে কিছু বকের ছায়া
উড়ে যাচ্ছিল বাদ্যের ছন্দে।

পুরোনো রাস্তার ম্যাপগুলো মনে রেখে নির্জন আনন্দে
শহরের এপাশ থেকে ওপাশে গেলে বাবলাঝোপের ওপারে
নদীর কুলকুল শব্দে কান পেতে ভেসে যাই ভাটির প্রান্তে।
খেয়াপারের মানুষের নিয়ত অনুভবে জেগে ওঠে
জীবনের আসা যাওয়ার বদল মন্ত্রের নির্মোক দর্শন
আমিই বা কতক্ষণ আমি থাকতে পারি সনাতনী চোখে?

Post a Comment

0 Comments