রত্না মাহমুদার কবিতা

 

Ratna Mahmuda's poetry



ক্ষত


মাটির বুকে  শাবলের ক্ষত কূয়া হয়। 
লোহার মরিচিকা ক্ষত করে নতুন হয়। 

প্রেমিকা - প্রেমিককে ক্ষত করে ধ্বংস হয় । 
স্ত্রী - স্বামীকে ক্ষত করে অসুখী হয়। 

সন্তান বাবা -মাকে ক্ষত করে অভিশাপী হয়। 
ছাত্র শিক্ষককে ক্ষত করে নাস হয়। 

মানুষ বিবেককে ক্ষত করে মনুষত্যহীন হয়। 
মানুষ সমাজকে ক্ষত করে দেশ নোংরা হয়। 

সুখ-দুঃখকে ক্ষত করে সুখী হয় ।
হাসি -কান্নাকে ক্ষত করে খুশী হয়। 

চাঁদ -সূর্যকে ক্ষত করে দিন হয়। 
সূর্য -চাঁদকে ক্ষত করে রাত হয়।





আত্নভাবনা

উত্তপ্ত রোদের দাবদাহে গলে গেছে আমার মস্তক
তবুও আমি মৃত্যুর পরবর্তী দৃশ্যপট আঁকি।
সমুদ্রের ঢেউয়ে ডুবে গেছে আমার সমস্ত শরীর
তবুও আমি উদ্ধত মাথায় ধর্ষিতার বিচারের সীমারেখা মাপি।

রাস্তার পাশে ময়লার স্তূপে পরে থাকা পঁচা মৃত অবুঝ শিশুর
হৃদস্পন্দন শুধু আমার কানেই ভাসে।
ক্ষুধার্ত কুকুর শিশুর পঁচা লাশের মাংস ভক্ষণ করতে নারাজ।
কারন শিশুর গাঁয়ে লেপ্টে আছে জারজ নামক কুখ্যাত শব্দটি।
অমন ভালোবাসা কেনো হয়?
অমন সম্পর্ক কেনো করো?
যে সম্পর্কে জীবন্ত শিশু মৃত পঁচা লাশে রূপান্তরিত হয়।
তোমাদের ভালোবাসা এতটাই ঠুনকো
তোমাদের ভালোবাসা এতটাই নির্মম
তোমাদের ভালোবাসা এতটাই অক্ষম 
যে তোমরা জারজ শব্দে আঁটকে যাও।
ভুলে যেও না সমাজের চোখে তুমি অন্তরালে
কিন্তু আত্নজগতে তুমি কিংবা তোমরা ভয়ংকর অপরাধীদের চেয়েও নিকৃষ্ট।





কলমের আয়ু

কলমের কালির রং লাল-  
  কালো যাই হোক না কেন?
   কলম সর্বদা আপন গতিতে চলে।
      কালি ফুরিয়ে গেলে ক্ষণিকের প্রস্থান ঘটে।
          কালিভর্তি কলম ঠিকই তার স্থান গ্রহণ করে।

         ‌ক্ষমতার চেয়ার কিন্তু সময়ের ব্যবধানে ,
            কলমের মত পূর্বের ন্যায় ফেরত আসে
     ‌  ‌ ‌   চেয়ারের প্রস্থান না হয়ে,
          ‌    ব্যক্তিমানুষের প্রস্থান ঘটে।
   
    তবুও ক্ষমতাকে পুঁজি করে ব্যক্তিত্বকে বিলীন করি!!



আঘাতের শুভাকাঙ্ক্ষী

যারা আপনাকে আঘাত করে সার্থক হয়,
তাঁরাই আপনার শুভাকাঙ্খী হয়ে পুনরায় ফিরে আসে।

যারা আপনার মেধা ব্যবহার করে মেধাবী হয়, তাঁরাই 
আপনার জীবনে বিপথগামী হয়ে ফিরে আসে।

যারা আজ আপনাকে কাঁদিয়েছে, তাঁরাই
আবার প্রতিটি পদে পদে অনুশোচনা করবে।।
 
জীবন সততা-সময়রের চাদরে মোড়ানো ।।

কারন ঠক -প্রতারক , মিথ্যাবাদী, সন্ত্রাসীদের চেয়েও বেশি ভয়ানক।
তারা নিকৃষ্ট মনের, উৎকৃষ্ট মানের মানুষ ।
যাদের বাহিরের আবরণ চকচকা,ভেতরের আবরণ কোণঠাসা।
সবশেষে সময় প্রত্যেকের অনুকূল-প্রতিকূল দুধারীর।



দুর্বোধ্য জীবন

মিহির মিশেছে হিমাকরে
অর্ণব মিশেছে হিল্লোলে
তমস্রি- তমায় দামিনীর আভা।

আপন ললাটে তুমি পরপুষ্ট।
আঁখি ধারাপাতে  তুমি গাত্র।

নিয়তি আমার  বড়ই নির্মম।
জীবন আমার বড়ই দুর্বোধ্য।

Post a Comment

0 Comments