চাঁদের হাসি
শৈতালি রোদে হিমানি চাঁদের হাসি,
নদীর ঢেউয়ের মতো দুলে ওঠে মায়াবি শরীর।
ঠোঁটে কুসুমের সুঘ্রাণ।
এ পৃথিবী আঁধারে ঢাকে না,
চন্দ্রদিঘীর সরোবরে ভাসে।
আর-
ঘুম কাতুরে চোখে সেই চাঁদ,
শিশুর নরম গালের মতো হাসে।
মুছে যায় পৃথিবীর দুঃখের ইতিহাস।
এই বসন্তে হঠাৎ
এতদিন কোথায় ছিলে?
এই বসন্তে হঠাৎ!
আঁধার হতে চরণ টেনে,
এই উঠোনে হামাগুড়ি!
কী হয়েছে ঠোঁট ফুলানো রাজকন্যা?
বৃন্দাবনে ঠাঁই হলো না?
কৃষ্ণ শুধু জ্বালায় পোড়ায়!
যমুনার জল যন্ত্রণা দেয়?
সেই তো ভালো।
পাতার বাঁশির শব্দ শুনে আসলে ফিরে,
এই উঠোনে।
সে তো ঝরা পাতা।
মস্ত বড় ভুল করেছো,
দেখবে এখন আকাশ জুড়ে মেঘের খেলা।
কুয়াশা টাঙানো রাত
ঝাঁঝাঁ রাত,
নক্ষত্রের কাতর চাহনি।
চাঁদ এসে চলে গেছে,
আকাশটা বেদনায় কাত হয়ে শুয়ে আছে।
কুয়াশা টাঙানো রাতে,
একটা পাখি ডানা ঝাপটায়।
চারিদিকে শেয়ালের ধ্বনি,
ঘরের পাশে পেঁচার ডাক।
এখন অন্ধকার- পাহাড়ের মতো জমাট হয়ে আছে,
মানুষের চোখের চারপাশে।
একটা কোকিল এসে বসন্তের আগমনি গায়,
নাকি ভোরের প্রার্থনা!
এবার আঁধার কেঁপে ওঠে।
স্বপ্নোদয়
মোরগ ডাকা রাতে ঘুম ভেঙ্গ যায়,
দেখি- কুয়াশা কনা ভেদ করে বহুদূর-
একটা রূপালি নদী বয়ে গেছে।
নদী নয় অজস্র ফুল।
তাবৎ রঙ মুছে ফেলে পৃথিবী ঘুমায়,
শুধু দু’একটা পেঁচা কথা কয়-
নিঃস্তব্ধ বাতাসের বুক ভারী হয়ে আসে।
রাত ভাঙার আয়োজন চলে গাছে গাছে,
বাঁশ ঝাড়ের পাতার বনে।
এখন অজস্র স্বপ্ন ভেসে ওঠে,
অনন্ত আকাশের বুক বেয়ে।
স্বপ্নগুলো জ্বলে ওঠে
এসো-কবিতার শরীরে আতরের সুগন্ধি মাখি,
পবিত্রতম পথে হেঁটে যাই নতুন দিনে,
সারা বছর।
লুকানো স্বপ্নগুলো যেন নক্ষত্রের মতো জ্বলে ওঠে।
আর কোজাগরি রাতের মতো মায়া ছড়ায়।
সব আহত পাখি ডানা মেলে দেয় সবুজ দিগন্তে,
ফুলের সৌরভে মেতে ওঠে।
তবু পথে পথে আসবে বিবস্ত্র রাত,
এই রাতের ভাঁজ খুলে হেঁটে যাব ভোরের দরজায়।
0 Comments