মহাশূন্যযান ক্যাসিনোকে যারা ভাবে ইউ.এফ.ও. এবং আমাদের এলিয়েন তাদের নিয়েই লিখছি এই কসমিক-কল্পনা। এক মিস্টিরিয়াস রেডিও ওয়েভ আজো বয়ে যায় পৃথিবীর বায়ুস্তরে আর তার বিশাল তরঙ্গ দৈর্ঘ্য নিমেষে আঘাত করে যায় ঘূর্ণমান উপগ্রহে। এই যে অনধিকার প্রবেশকারী আলোক এর ও রয়েছে জন্মকাল, স্থান; অনেক দূরের যাত্রা। সেখানেও কেউ চোখে টেলিস্কোপ নিয়ে বসে থাকে চরম দৃশ্যটি অবলোকন করার জন্য। হয়তো স্যাটেলাইট নির্ভর রেডিও ভিউ দিয়ে কেউ আমাদের চোখে চোখে রাখছে।
পৃথিবীতে দীর্ঘ দীর্ঘ স্থলচর জীবন কাটিয়ে আরো দূরে অন্য গ্যালাক্সিতে অন্য গ্রহে চাঁদে আমরাও পাখির জীবন পেতে পারি। হয়তো আজ থেকে সৌর বর্ষ পরে এই হাত দুটিই ডানায় রুপান্তরিত হবে।
২
৩০১৮। একটা এলিয়েন-পেঙ্গুইনকে তাড়া করে সীল মাছ কি পেরিয়ে আসবে বেলাভূমি? তারপর আর কখনো ফিরে যাবে না সমুদ্র জলে? তারপর পরই জল থেকে উঠে আসবে মেধাবী ডলফিন? তাকে নাম ধরে ডাকতে ডাকতে উঠে আসবে তার পুরো গোত্র, বন্ধু, স্ত্রী ডলফিন।আর একটা লাঙফিস তাদের শিখিয়ে দিবে কি করে ডাঙায় জীবন যাপন করতে হয়।একই সাথে ওয়াকিং ক্যাটফিসের পদ রেখা ধরে লোকালয়ে চলে আসতে থাকবে জেলি, অক্টোপাস আর মৎস কুমারীরা।
মানুষ আর হাঙর একই জলে মাছ খায় না।
জল থেকে উঠে আসলে মাছের শরীর থেকে জানি আঁশ ঝরে যায়। ফুলকা থাকবে কি থাকবে না!
সমুদ্রের বুকে ফসলের হাসি!
৩
ভাবছি , শিম্পাঞ্জির সাথে মানুষের এতো মিল ! কিম্বা বানরের দেহ ব্যবচ্ছেদ করে কিভাবে মানব দেহতন্ত্র নিয়ে কথা বলা যায়! অতিবানরেরা তবে বন্য ঘোড়াদের পোষ মানিয়েছে? লোহার খাঁচায় পোষছে নিরীহ খেচর। মৃত্তিকার নিচে চাপা পড়ে গেছে ওরাং ওটাংদের বুদ্ধিগত বিকাশ। ভাবছি, সবার উপরে গাছ সত্য। সবার উপরে মাছ সত্য। সবার উপরে পাখি সত্য। সবার উপরে সমুদ্রের অক্টোপাস সত্য হতে পারে। হতে পারতো। আমরা কেন তাদের বিকাশে বাধা দিই। অস্বীকার করি?
আজ না হোক আগামীকাল সবার উপরে শহরের কর্কশ কাকটির প্রতিভা ও সত্য হতে পারে। কে জানে কাকের প্রতিভাও একদিন বাড়তে বাড়তে মানুষের সমান হয়ে যাবে!
৪
তারপর পৃথিবী ছেড়ে যাওয়া লোকের মেমোরিতে জমে থাকবে নক্ষত্রের ধূলো, হাইড্রোজেন প্লাজমা। অবারিত শূন্যপথ পাড়ি দিতে প্রতিদিন কতবার সূর্যোদয় , কতবার সূর্যঅস্ত দেখা গেলো স্পেসশিপে বসে। দেখাগেলো আলোর ঝলকানি ধূমকেতুর। মেঘে মেঘে রঙিন বিদ্যুৎ-সব স্মৃতি আমাদের মস্তিষ্ক জিপিএস থেকে অতীতের দিকে ছুটে যাবে।
নতুন নক্ষত্রে, বৈরী পরিবেশে, হাড় হিমঠান্ডায়, অনুজীব-সংকুল-ভূ-খন্ডে, অক্সিজেন হীনতায় মহাজাগতিক ঝড়ে খাপ খাওয়াতে খাওয়াতে অভিযোজিত অভিযোজিত হতে হতে বিবর্তন ঘটে যেতে পারে আমাদের।
তখন কি আমরা নতুন প্রাণীতে রুপান্তরিত হবো? তখন কি মানুষের কবর রচিত হবে? মৃত্যু হবে? তখন কি আমরা জলে ও স্থলে চড়বো? আকাশে আকাশে উড়বো? আঁধারে আঁধারে দেখতে পাবো?
খান আলাউদ্দিন
জন্ম: ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭, রবিবার।
কাপাসিয়া, গাজীপুর।
পড়াশোনা: বিজ্ঞান, মানবিক, ইংরেজিভাষা ও সাহিত্য।
প্রকাশিতকবিতারবই: ভার্চুয়ালরিয়েলিটিডিসঅর্ডার।
চৈতন্য, বইমেলা ২০২১।
0 Comments