শৈবাল নূর এর পাঁচটি কবিতা




কন্দর্প

সন্দেশ প্রিয় তোমার। মেদহীন কোমল শরীরজ

দেহাতি কুমোরের হাতে আকারহীন মৃন্ময়ীর মতো
রসগর্ভ দধিছানা ঈষৎ শুষ্ক

আস্বাদনে রিপুর সর্পজ্বীভ ধেয়ে আসে
খাচ্ছো  জোড়া ঠোঁট ভেঙে ভেঙে
আর ভাবছো কাকে!

ভেতরে, অভিসারে নিজেই সন্দেশ হয়ে ওঠো নিয়মে



নির্জন কুয়ো

পারিবারিক কলহ লুকাতে চেয়ে
আমার ঘরময় উড়তে থাকে চড়ুইপাখির মিথ্যে  ছায়াপাখাগুলো

বিপন্ন কোন শঙ্কায়—
গরানগাছের বনে মায়াহরিণের দিকে গুলি ছোঁড়ার শব্দে
তার অনিশ্চিত মনে, তাসের ঘরের মতো আত্মসম্মানে
স্থিরচিত্রের আড়ালে শব্দ, ত্রাস, শব্দ, ত্রাস ছড়িয়ে পড়ে

একটি ইলেকট্রিক করাত দৃশ্যত, অদৃশ্য
ফালিফালি করছে সমস্ত তুলোর বালিশ —



প্রতীকী


আকুল ফড়িং স্থির জল ছুঁয়ে উড়ে
চাতুর্যের লেজে পানি পান করে কারা

দৃশ্যের ভেতর থেকে, বেলা থেকে
অধীর কিশোর ছায়া  ছুটে আসে

গদগদে জিগা আঠা পাটকাঠিতে লাগিয়ে
ছুটছে ফড়িঙের পিছু, ব্রহ্মা চিহ্নের পিছু—



সহজমানুষ

পুরুষ শব্দটি দৃষ্টিহীন —বলার সাথে সাথে
পায়রা উড়ার মতো আয়না থেকে
মুক্তকেশী রমনীদের অট্টহাসি চূর্ণ হলো বুকে

পৌরুষ উপভোগ করছি শুধু — যাপন করিনি কোথাও

যেভাবে বরেন্দ্রট্রেনে হরিৎবন পেরুতে গিয়ে
নিদ্রাভ্রম ভঙ্গ হলো আমার । হেমন্তের অন্ধগান সহ
হাওরের শেষ স্টেশনে নামিয়ে দিয়ে ট্রেনটি গায়েব হলো দেহে

তারপর কে নৌকাহীন সাঁতরাচ্ছে নেত্রনীলিমায়, বৃথা লিঙ্গান্তরে


সৃষ্টিবিজ্ঞান


সুষম কবিতা শোন, স্বাস্থ্যবতী হবে

তোমাকে দেখে আরাধনার হাসি হেসে
সজাগ বেদনা লুকাবে গ্রামের পীড়িত নারীগণ

ত্রয়ভাগ জলের পৃথিবীতে পুরুষেরা চিরদিন নাবিক

শুধু জলযান ভেড়ানোর ছলে,  স্ত্রী-কায়ায় নোঙর ফেলতে আসে ছলে

চতুরানন সব জানে —

Post a Comment

1 Comments

  1. এই সময়কালের কবিদের মধ্যে শৈবাল খুব ভালো লিখছেন। তার ঋদ্ধ প্রকাশভঙ্গি অন্যদের থেকে তাকে আলাদাভাবে চিনিয়ে দিচ্ছে। তার জন্য শুভকামনা।

    ReplyDelete