* লেখালেখির শুরুর গল্প জানতে চাই।
রেনু আক্তার: সাহিত্য পাঠ করতে করতেই মূলত সাহিত্য চর্চার ইচ্ছা জাগে। মনের অনুভূতিগুলো কবিতায় প্রকাশ করতে আগ্রহী হই। তারপর টাঙ্গাইল সাহিত্য সংসদের নিয়মিত পাক্ষিক স্বরচিত কবিতা পাঠের আসরে কবিতা পাঠের মাধ্যমে সাহিত্যচর্চায় নিজেকে সমর্পণ।
* প্রায় লেখক সম্মানী/রয়্যালিটি বিষয়ে প্রকাশকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?
রেনু আক্তার: লেখা প্রকাশে আগ্রহ কম। তাই লেখক সম্মানী বা রয়্যালিটি পাবার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে টাঙ্গাইল থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক পূর্বাকাশ ও দৈনিক প্রগতির আলো আঞ্চলিক পত্রিকা হলেও ক্ষুদ্র পরিসরে লেখক সম্মানী দিয়ে থাকে। সে সম্মানী পাওয়া তাও লেখার বিনিময়ে-- এটা অন্যরকম অনুভূতি। আমি মনে করি যদি লেখকের লেখা দ্বারা কোনো কাগজের সাহিত্যকর্ম গতি পায়, সমৃদ্ধ হয় তবে লেখকেও লেখার সম্মানী দ্বারা তাকে অনুপ্রাণিত করা উচিৎ। যদিও সাহিত্য কখনো অর্থের দ্বারা অণুপ্রাণিত হয় না।
* কী লিখতে এসেছিলেন? কবিতার আপনার স্বপ্ন এবং সত্তাকে কতটা ধরতে পেরেছেন?
রেনু আক্তার: মূলত কবিতা। কবিতায় আমার স্বপ্ন ও সত্তাকে কতোটা ধরতে পেরেছি তা লেখক হিসেবে একান্ত নিজস্ব বিষয়। কবি যদি নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারতো বা তার সত্তাকে তৃপ্ত করতে পারতো তবে মৃত্যুদিন পর্যন্ত কিছু সৃষ্টি করার ইচ্ছা পোষণ করতো না। তবে কবির স্বপ্ন ও সত্তাকে ধরে রাখে তার পাঠক; কবি নিজে নয়।
* লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনে তথাকথিত প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা’র আপনার বিশ্লেষণ কি?
রেনু আক্তার: সাহিত্যচর্চা, সাহিত্য আন্দোলন, প্রকাশ-প্রকাশনা প্রত্যেকটি স্বতন্ত্র বিষয়। সাহিত্যচর্চায় অর্থের দরকার হয়না। তদুপরি সাহিত্য আন্দোলন, প্রকাশ, প্রকাশনা প্রত্যেকটিই অর্থসংশ্লিষ্ট বিষয়। লিটল ম্যাগাজিন কিংবা সাহিত্যসংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক পত্রিকা (প্রতিষ্ঠান) এর কোনোটাই আমি বিরোধিতা করি না। কিন্তু সাহিত্যের গোষ্ঠীবদ্ধতাকে ঘৃণা করি। লিটলম্যাগ কোনো আন্দোলন নয়। সাহিত্যকে জাগিয়ে রাখা। মেধা ও মননশীলতাকে জাগিয়ে রাখা। কিন্তু বাণিজ্যিক পত্রিকা বা প্রতিষ্ঠানটিও ঠিক একই কাজ করছে। কিন্তু দু’জনার উদ্যেশ্য এক নয়। যেমন সকল লেখকের উদ্দেশ্যও এক নয়। তবে দু’জনই সাহিত্যকে ধারণ করে। পরস্পর-পরস্পরের বিরোধী হলে ক্ষতি হবে লেখকের-পাঠকের। তাই আমি কারো বিরোধীতা করবো না। সবাই সমান্তরালে স্ব-স্ব অবস্থানে সচল থাক এই প্রত্যাশা করি।
* কবিতা নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ কোন পরিকল্পনা ও তারুণ্যের দায় সম্পর্কে জানতে চাই।
রেনু আক্তার: পরিকল্পনা করে কবিতা লেখা হয়নি কোনোদিন। তাই বলতে পারি কবিতা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই। সময়ের স্রোতে, সামাজিক দ্বায়বদ্ধতা থেকে, সকল পাঠকের কথা চিন্তা করে যুগপোযোগী কবিতা লেখায় তরুণ সমাজকে অগ্রসর হতে হবে।
0 Comments