সাকিব শাকিল এর গুচ্ছকবিতা

মৃত্যুর পূর্বে সমস্ত মৃত্যুকে অবহেলা করি 




মৌসুমী হাওয়ার অসুখ


বিদগ্ধ দুপুরে পাখিদের দুঃখী ডানায়

মৃত্যুর মতো ওম।

কোন ভেলা ভালবেসে বেহুলারা ঘর ছাড়ে

নিমগ্ন জলে;

কোমলগন্ধ কার স্নেহের চাদরে ঝরে যায় অসুখী মৌরিফুল ;

অসময়ে বাড়ে মৌসুমি হাওয়ার অসুখ।


বাঁশবাগানের মাথার উপর একাকী দাঁড়কাক

কাজলাদিদি আজ ঘরে নেই।



গরম জলের কফিন


বিমুগ্ধ উড়াল ছিল তার বিলুপ্ত ডানায় 

আবৃত ছিল দেহ হলুদ ফুলের ঘ্রাণে

যেন জীবন্ত ফসিল ডাক পাঠায় জানালার জলে।

উনুনের দরজায় পোড়ে সঞ্চিত বাকল 

আর মৃত মাটির উঠানে

তুলসি চারাটি একা একা ভেজে করুণ শিশিরে।

যেন শব্দের মতো হেঁটে আসে কেউ আগুনের নদী পারি দিয়ে

আর স্মিমিত হয়ে শ্বাস নেয় গরম জলের কফিনে।


যে রাতে মায়েরা অসুখে ভোগে 

সন্তানেরা সে রাতেই আয়োজন করে নেশাগ্রস্ত ঘুম।



মৃত্যুর পূর্বে মৃত্যুকে অবহেলা করি


এলো প্রেম সাথে করে মৃত্যুকে নিয়ে 

এলো স্বপ্ন সাথে করে শঙ্কা কে নিয়ে। 


এত লাশ এত লাশ এত মৃত্যু এত মৃত্যু!

তবু কেন একটি ভ্রূণ আসতে চায় এই মানুষের বন্দরে? 

কেন আশ্বাসে বেঁচে আছে মানুষ 

মহামারী চলে গেলে সঙ্গমে কাটাবে দীর্ঘ গ্রীষ্মকাল;

আর কতো অপেক্ষা আর কতকাল! 

মুকুল ঝড়ে যাচ্ছে ঝড়ো বাতাসে

আমকুড়াবে শিশু।

শিশুটি বেঁচে থাকবেতো? 

যার জন্য ছেড়ে দিতে হবে স্থান? 



আত্মহত্যার যৌথখামার


জুতোদের বিরহ স্মৃতি নিয়ে পা আর ছুঁতে পায়না

মসজিদের জনবহুল সিড়ি

বিশ্বাসের মিনারে তবু ডেকে যায় ক্লান্ত মুয়াজ্জিন 

মাগরিব সন্ধ্যায় সবখানে গাওয়া হয় বিষণ্ণতার কোরাস।


শরীর জানেনা অন্য শরীরের ইশারা

চেতনাহীন ঘুম গভীর হয় শিশি'র ক্লোরোফর্মে

কেবল ঘুম আর মৃত্যুতেই যাবতীয় শান্তি।

অতএব এসো,

রোগেশোকে না ভুগে গড়ে তুলি 




মিউচুয়াল দু:খ


মিউচুয়াল দু:খেরা তোমার শরীরের খুব নিকটে গ্যালে

কোন অলঙ্ঘ্য স্মৃতির টেবিলে তুমি ঝিমিয়ে পর

বিপন্ন সন্ধ্যা

আগরবাতি সুখগুলো ছুঁতে পায় না তোমার হিমায়িত কফিন

তাই পথের দূরত্ব মেপে উদ্দেশ্য দৌড়ে পালায় কৈশরের স্বপ্নদোষের কাথায়।


আলুলায়িত দুপুরে মেঘপাখির আস্কারায় আকাশে রক্ত নামে

বৃষ্টির নামে খিস্তী দিয়ে কিস্তি দ্যায় রক্তের বিকেল।


এইসব রাতে কবর কবর খেলায় অবহেলার মুর্দা নামাই তোমার ভেতরে!


Post a Comment

0 Comments