বঙ্কিম কুমার বর্মন এর কবিতা



প্রবাদ পুরুষ


এভাবে কাঁচাপাকা রাস্তায় ছুঁড়ে দিলে আমার উদাস অঞ্চল । গুঁড়ো গুঁড়ো দুঃখের কণা ভরে উঠে হৃদয়ের অন্ধগলির কুঠুরিতে । ছড়িয়ে যেতে থাকি সে এক ঋতুর চতুর কাজলের ব্যবহার । সর্বস্ব পুচ্ছ নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি তোমার মেদের লেলিহান শিখা । আর তুমি ঘষা খাচ্ছ এসবের ভেতর হুঁ হুঁ করে।

উঁচুনিচু নক্সার শরীরে চর্যাপদের টিলা সারাক্ষণ ছায়া ছায়া সংসার নিয়ে ব্যস্ত । তাঁকে হারিয়ে যেতে দিওনা দৌড়ের বিজ্ঞাপনে । পারলে তাঁকেই সার্বিক প্রবাদ পুরুষ গড়ে তুলো ।


মুখোমুখি 


মুখোমুখি হয়ে দাঁড়াই দৃশ্যের সরল মুখে । সংগোপনে ছুঁয়ে যেতে থাকি তার দুর্গম মৃত্যুমদ ।প্রতি বাক্েয শ্মশান হেঁটেছে খুব । ঢেউ দিতে দিতে দেওয়াল অন্তত একবার ঘোমটার মায়ায় সুঠাম অধিকার চেয়েছে । বাকিটা নিজেও থেকেছি বহমান ঈশ্বরের কেউ ।

ক্ষণস্থির জড়ো করে বিষয়ের ন্যুব্জ চমকপ্রদ এঁকে দিলো ঘন বর্ষণ । আমিও উন্মুক্ত প্রশ্নে চমকেছি খুব যেহেতু রাত্রিরাও যাপনে অধিক রাখে অজুহাত শীত ।


নাচঘর


জানা হলো না একবারও তোমাকে প্রকাশ্েয অতীতে । যেহেতু ঠিকঠাক শুধালে অসংখ্য পায়রার স্বভাবে নেমে গেছ মায়াপ্রপাতে । দৈনিক মেনে ফিরেছি টেবিলের চওড়া পরিশ্রমের বিন্দু ঘামে , এখানে বারোমাস অজানা উৎসের ভাতঘুমের নিম্নস্রোত । তীব্র বিষয়ে অধিক ফলেছে বাক্য ফল ।

বিনিময়যোগ্য শর্টকাটে ইচ্ছা-অনিচ্ছার দোফসলি সিদ্ধান্ত খুঁড়ে সূর্য প্রণামে ঢুকে পড়ি দর্শকের একাকীত্বে , এও এক বীজ বপনের মরসুম । তুমি ডালপালা মেলে জ্বেলে দাও পিদিমের নাচঘর ।


তলদেশ


সোহাগি আয়নায় যে ক্ষিদের বসন্ত লেগে আছে , আমি তাঁকেই শুধাই কতটা আঁকড়ে ধরো মহাকাল । বক্ষে জমানো শীতল যৌবনের রাজকুমার চেপে ধরেছো কত । কোনো এক স্পর্ধার ফুসফুসে ফুটপাত পেয়েছে গ্রীবার স্বীকার । কাঁচা সংশয়ের পায়ে বিকলাঙ্গ যতির তুমুল উদগিরণ ।

প্রতিবিম্বে লাজুক পেয়েছি হাসির ফোয়ারায় । সে তো বিরামহীন মুহূর্তের দরিদ্র পদধ্বনির সংকেত সাজায় । ফোটে শালপ্রজন্মের নখে দূরতম জন্মভূমির তলদেশ ।


ভীষণ


যত্নে চুলখোলা আবেগের তরতাজা রামধনু ফলানো যায় গহিন স্নানে । তাতে বয়স কমবয়সী করে নেওয়া যায় সহজেই চোখের তরুণ্েয । সেসব মেধার আদর্শে সুনামি পুষে রাখা এক দারুণ ফলাফল । কাউকে গতজন্ম গিলে দিয়ে বোঝানো যায় রান্নাঘর একটা সহোদর ভাই ।

প্রায়োগিক দীর্ঘ ধ্বনির ডুবে থাকা আলাপ যেন বিকেলের মধ্যমণি । সে সমস্ত আড়ালের শেকড়ে জড়িয়ে উঠছি । পিপীলিকার সরল বাগানে কী ভীষণ চিন্তিত মাটি ।


Post a Comment

2 Comments

  1. There are designs in poetry, there are statements, but there is no deep understanding. Let the words come from the heart. This line sounds a bit like:"উঁচুনিচু নক্সার শরীরে চর্যাপদের টিলা সারাক্ষণ ছায়া ছায়া সংসার নিয়ে ব্যস্ত ।"

    ReplyDelete
  2. সবকটি কবিতাই ভালো। কিছু অসাধারণ অংশ আছে।
    যেমন-
    "উঁচুনিচু নক্সার শরীরে চর্যাপদের টিলা সারাক্ষণ ছায়া ছায়া সংসার নিয়ে ব্যস্ত"
    "প্রায়োগিক দীর্ঘ ধ্বনির ডুবে থাকা আলাপ যেন বিকেলের মধ্যমণি "
    "ঢেউ দিতে দিতে দেওয়াল অন্তত একবার ঘোমটার মায়ায় সুঠাম অধিকার চেয়েছে" ইত্যাদি।
    সবদিক থেকে নাচঘর খুব ভালো লাগলো।

    ReplyDelete