তানহিম আহমেদ এর কবিতা


ভাঙারাত্রি জরায়ু থেকে


অক্ষয় ডায়েরির ভাঁজে, পুড়তেছে জন্মান্ধ মানুষ
এবং, সে কথা চিহ্নসমেত লেখা হচ্ছে— শেকড়ে !
ভাঙা— রোদবৃক্ষ, রাত্রির যোনি জুড়ে শুয়ে থাকে
ত্রস্তলিপি, নিঃশব্দ সোমপুর, ভাষার ভেতর ফুটে
আছো এক ব্যর্থ হাসি— চ্যাপলিন, উড়ছে পত্রাদি,
নদীতটে বসে শুনি ত্রিফলা ধ্বস্ত পুরাণ, যেনোবা
বানপ্রস্থ— চন্দ্রাহত প্রাচীর, হাওয়ার রন্ধ্রে ঘুমিয়ে
একজন সামুরাই— খসা তরবারি, কফিন, একটি
দীর্ঘ— কবিতা, যার নিঃশ্বাসের ভারে কাঁপছে দূর
একত্রিশে জানুয়ারি...



উপেক্ষা


একটি রাত ঢুকে যাচ্ছে বরফের রাজ্যে। ভাঙা
কফিন— মেঘ সঙ্কোচ। প্রাচীন হরিৎ মদের পেয়ালা।
টেবিলে সাজানো পুরনো চার্মিনার— নষ্ট হারমোনিয়াম—
সমগ্র শরীরে লেগে রয়েছে অজড় বেদনা
                              আক্ষরিক রঙহীন অসম প্রেম।

অথচ— এক বুক স্বচ্ছ হতাশা নিয়ে আমি অনায়াসে
মেনে নিতে পারি তোমার কঠোরতম উপেক্ষা।







রেইনি সিজন


আষাঢ় সন্ধ্যার কাছে নতমুখে— পাঠ করছি বিষণ্ণ
নদীরস্রোত— তুষারকাল। পিকাসোর নামের পিঠে
ঝরতেছে প্যারাফিন— ঘোরলাগা। ত্রস্ত সন্ধ্যারতি।
নৈঃশব্দ্য চিরে বাজাচ্ছ ভায়োলিন— সুর? ঐদিকে
গেছে ক্ষয়িষ্ণু বন। সবটা নির্জনতা। সাদা কাগজ
থেকে উড়ে যাচ্ছে মর্মর— ভঙিমা। ধ্যানের ভিতরে
পেয়েছিলে— যেটুকু স্বস্তি। নির্মেদ এই দিনে— ঝরা
পাতার আঙুলে ভাঙছে ওকবন।





বৃক্ষ বিষয়ক


মূলত মানুষ বৃক্ষ হিসেবে নিজের
একক অসমকক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী—

সন্ধ্যের আকাশে— পাখির মতোন।

এভাবে বারবার হেরে যেতে যেতে
সময়ের বুক জুড়ে লিখে রেখে
যায় তার অগ্রন্থিত কবিতা।

তারপর— মনোরম বাতাসে;
নীরবে ছড়িয়ে দিয়ে জীবনের রঙ
একাকী গোলাপের কাছে—

শেখে তার নিজস্ব এক মাতৃভাষা।

Post a Comment

1 Comments