মিলি রহমান এর কবিতা


ক্ষতের আর্তনাদ 


ঝিমুতে ঝিমুতে এগিয়ে আসা
পরিচিত সে সন্ধ্যাটা---
গিলে খায় শুঁয়োপোকার সংসার
বুঁদ হয়ে বসে আমি কপাটে,
ক্রমবর্ধমান অপেক্ষাকে অনবরত
মাপতে থাকি  গজফিতায়।
পুরনো সে ঘাঁএর জমিনে
মনযোগে জন্মাচ্ছে ছোপ ছোপ মায়া...
এক টুকরো ক্ষুদার্ত চিৎকার
মৃত্যুর শক্ত সংবাদ নিয়ে ঠাঁই
দাড়িয়ে আমার উঠানে।
ভুলভাল কিছু নিজস্ব
কান্নার সুরে ভরছি মগজ।
কিছু অশ্লীল বিলাপ, ঢোক গিলে
ভারি করছি গলা,
আওরাতে থাকি "নিুতে আসবে কবে"
ধূসর পর্দায় ঘাটি গেরে আছে,
আয়ত্তে না আসা অতীত।
রাত এলেই চোখে বুনি নিম্নচাপ
উল্টে রাখি দেয়াল ঘড়ি,
জানি, মৃত্যু ভুল করবেনা
চিনতে আমার পথ।



অস্তিত্ব 

নির্ঘুম সমস্ত রাতে
নিখুঁতে বুনেছি যতো আগামী,
সবটাই হয়েছে দাহ কিংবা দাফন।
ফুটন্ত গাঢ় সোনালী সূর্যটা
খুঁটে খেয়েছে অনাগত কে।
রস চুষে ফেলে দেওয়া আমি,
পুনরায় উত্তপ্ত কড়াইতে সাজাই
নতুনভাবে আশাবাদী রেনু।
নড়েচড়ে প্রমাণ দিই মাটিকে,
নিজের অস্তিত্বের।
রাতের প্রায় শেষের অংশে
লিখে দেবো আমাকে, আয়ুর কাছে...
জন্মঋণের দায়ে।




বেওয়ারিশ 


অথচ কেমন অস্পষ্ট কাঁচে
থরে থরে তৈরী হচ্ছে জীবন,
মায়াময় হাতছানি, ব্যথার আকর
মিলেমিশে লিখছে জীবন।
কোন বুনোফুল কিংবা আমি
সমানতালে যত্ন নিই নিজেদের,
মাথা নুইয়ে পড়ে যাই
পূর্বপুরুষের শিখানো নামতা।
কি এক প্রচন্ড কান্নার দলা
আঁটকে থাকে গলার দাগে,
কড় গুণে-গুণে শেষমেশ
নিজেকে সাজাই ভাগ্য দেবতার
পাতে, চিকন এক আকুতিতে।
বেওয়ারিশ হওয়ার ভানে মেতে উঠি ক্রমশ,
অতঃপর তুমিও মানো,
আমার পদচিহ্নের স্পর্ধা।
সৃষ্টি করার এ ভার মুছবে
কিভাবে সৃষ্টিকর্তা?

Post a Comment

0 Comments