লুফাইয়্যা শাম্মী'র কবিতা

যৌথ খামার


পাঁচ



কতো ভাঙ্গে ডাঙার বহর, কলকাকলির গান। ডাঙা বেয়ে নেমে আসে কল্পিক স্রোতধারা। একটি একটি করে গলা টিপে হত্যা করি। উল্টোস্রোতে ভাঙার শব্দ আবার ফিরে যায়, তার কোকিলার কাছে।

শব্দের ভীড়ে জগতের সব কলতান হারিয়ে যেতে থাকে। হারানো শব্দেরা ফিরে আসতে চায় আঁচল ঘেষে, একজন তুমিকে নিয়ে নৌকা উড়ে যায়, যাক।

সংসারের দুঃখসাগর মিঠাইওয়ালার কাছে, কোকিলার পরানের বক্ষে লুকিয়ে যায় কিছু শব্দ, কিছু বাঁক। কিছু অচ্যুত সত্য তলানোর ভয়ে ছোটাছুটি করে।

এভাবে আমরা একের পর এক ধূম্রজাল তৈয়ার করে শুষে নেই একে অপরকে। নাক বেয়ে যেটুকু ঘাম ভাগাড়ে যাওয়ার কথা সে ঘামও তোমার চরণে লুটোপুটি খায়।

ধূলোকণা ধরে ছড়িয়ে পড়ে সার্কেল কষে, সত্যের চিৎকারে আয়োজন ভেঙে দাঁড়ায় মাথামোটা মন্ত্রিটা! দ্বিয়াত্মা ঘুরে বেড়ায় ধূম্রজালের ডানায়, কোকিলার গড়ন তুলো হয়ে ভাসতে চায়, হন্য হয়ে খুঁজে পরাণ-রে, আয়োজন ভেঙে যায়, আবারও। আগমনীর গানে সংসার মাতুন, আমরা ফিরে যাই বরং।





ছয়



চোখের আদলে গড়ে উঠা দেহ, শ্রমে ঘামে বারুদ নেশায় পেয়েছে তাকে। ত্বক লাল করে পথের দিকে এগুতে গিয়ে পায়ে লাগে মাটির অশ্রু। ধীর পায়ে আরেকটু সামনে এগুলে আরও কিছু পাখি তার পিছু নেয়।

এইসব বাস্তবিক আহ্বানে আমাদের ঘুম নাই। স্খলিত ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে বসে ভাবছি আমরা ক্যাবল'ই, একে অপরের অন্তরে গেঁথে যেতে চাচ্ছি। কিছুটা নকশী কাঁথার মতো। বুনতে বুনতে শীত এসে গ্রীষ্ম চলে যাচ্ছে অন্তরায়। শহরের বুকে জেগে উঠে নতুন ধুলিকণার চর। পাখিরা নেমে গেছে শীতলক্ষ্যায়, সংসারের পুরোনো ছবি দেয়াল টপকে চলে গেছে ছাদে, আমাদেরই জপে যাচ্ছে- নিভৃতে।

কতদূর প্রার্থনালয়! ক্লান্তিতে তোমার শরীর সমুদ্র হয়ে যায়, স্নানঘর ছেড়ে তোমাতে নাইতে যাব, প্রাণের খোঁজে।




সাত



এই গতানুগতিক পথের মাঝে যে নতুন খেয়া ঘাটের সৃষ্টি, তার প্রেম কতটুকু উচ্ছ্বল। কতটুকু উজ্জ্বল। আমরা অনাদরে ভুলে যাই অসম্ভব যাতনা। ফেলে আসা আহত প্রেম, যতন-যাতনা প্রেম।

আমরা আবারও মৃত্যুকে ডাকি, চিৎকারে পালাই, চক্রাকারে স্মরণ করি যাবতীয় অতীত ও আমাদের বেলাল্লাপনা!

নতুন বছরান্তের খামে ঘৃণা জমাতে জমাতে- একসময় পুরোনোকে গর্তে চাপা দেই, অযথাই রক্তজবা- ফুটে!

আরও এক বসন্ত চলে যাওয়ার পর, শুরু হয় মিনতি

সুরের তালে তালে চিৎকার খ- হয়ে জলডাঙায় লুকায়। আমরা, একজন কড়ি হাতরিয়ে খুঁজে পাই সুরের খণ্ডাংশ

আরেকজন শরীরের সংঙ্গে গেঁথে দৌঁড় দেই প্রাচীন জাদুঘরে। বৈপরীত্যে ছন্দ মিলিয়ে ভাগ হয়ে যাই।

ইচ্ছেরা অচ্ছুৎ

মৃতপাখির মতো পরে থাকে ডানার বেফাঁসে। তবুও শব্দেরা ঘড়ির কাটায় দাগ ফেলে বাদুরের সাথে উড়ে বেড়ায় রাতভর। খুন আর খুনীর রাজত্বে জ্যোৎস্নাঘর আলোময় হয়ে উঠে।








Post a Comment

0 Comments