মাসুদ মুস্তাফিজের কবিতা






শেয়ালবন্দনা


শেষরাতে বিপিন পার্কের মতোন সম্ভাবনার শূন্য পড়ে আছে
চলে গেলো কেউ
প্রথম প্রহরের গতি নিয়ে-শুন্যতা আগলে রেখে
আমিও প্রত্যাবর্তনে ফিরি-সাতঘরিয়ায় উড়ে
কোনো এ্যাক অনতি তরুণ কবি লিখে রাখে
গাছের পাতায় আয়ূর দুরারোগ্য বয়ান-

এখন ধর্মের শাড়ি উড়ে আসে,ঘরে ঘরে গান
অপরূপ দ্যাখি না দাগ-গূঢ়-চিহ্ন ধাবমান...




বরফ মেশানো আগুনের সমীক্ষা


বরফ পানিতে ভাসে-
পৃথিবী ভাসে সাহসের বাতাসে-
বাসার ছাদে ওঠে মেয়েটি পৃথিবী দেখার ভান করে যেনো লুকিয়ে লুকিয়ে ছেলের গোপনাঙ্গ দেখার কৌশল-সুখানুভূতি সে একাকি মাঠে বসে-শুয়ে থাকে গর্ত থেকে উঠে আসা পিঁপড়েরা পৃথিবীর গান শোনায়, ধমক দ্যায় আর অবেলায় স্বর্গের ভাষা র্চচা করে পাঠ শেখে অনুভুতির দুজনার। মাঠে প্রচন্ড ঝড় উল্কিঝড়, গুয়িয়ালচক্রে জীবন-এই ভাবনা ভেবে ভেবে একদিন ধামড়িছুঁড়িটা ন্যুয়ে পড়ে বয়সের ভারে তবুও পৃথিবীর খেলা-পুজো শেষ হয় না-দুনিয়া দেখার চেনার শখ মেটে না তার। আকাশের ওপর দিয়ে বয়ে চলে বন্যা এবং জোরালো বাতাসগুলোয় মিশে- ও শিখে ফ্যালে মিথ্যে শিখে ফ্যালে ধাঁধাঁর পৃথিবী
এইভাবে এইভাবে ভেজাল মনে মেয়েটি সারাজীবন হাওয়াফুলে হাসে কামিনীগাছের গন্ধে বন্ধুত্বের বিষ খেয়ে এখনো বেঁচে আছে
এখন অপেক্ষা-
এখন প্রেমের বৈভব তাবুতে অপ্রেম শরীরমনসা মাটি ভেদে মনের নিকোটিনশ্বাসে বিশ্বাস আবাদ হয় আর লোহা পিটিয়ে নতুন রুপে সাধারণ হওয়া আমাদের ঈশ্বরের যাদুবিদ্যা-আমরা কামারশালার ছাত্র!
মাটিই ভূতল-
মাটিই খাঁটি থাকে না-মহান সামর্থে
দুচোখে নোনতা জলে ভাসে সাগর-মহাসাগর-পৃথিবী আর কতোকাল ভাসবো বলো রুুমু ভুল অন্তর পুড়ে নিবারণ রক্ত গেঁথে বুকের শব্দকলি...





কবিতাটি আমার নয়


দিনের উচু-নিচু অন্ধকার কিংবা সূর্যের ভেতর জলের গভীরতা আবার বাতাসে নিঃশ্বাস র্দীঘায়ু পেলে আমার কবিতার খোলস কল্পনার সৌন্দর্য হারায় না তারচেয়ে বরং সেখানে সময় বসিয়ে জীবনকে অনুভব করতে পারি কালের ঘামে। মনে হোলো বইটি পড়া শেষ, লিখে ফ্যালি সমালোচনা তাতেও আমার প্রিয়তমা স্বপ্নের ক্ষতি হয় না-আমি এক স্বপ্নরাত্রির মানুষ। চোখের জমিনে আবাদি ভবিষ্যত অর্ধসত্য পৃথিবীকে রহস্যজর্জরে মর্মরিত বিষাদে স্বমৈথুনে সুখপ্রাপ্তির অসুখ বানায়, সাপ ভাঙে পাখির বাসা। বেড়ালের পিতামহ সবটুকু জল মেপে ত্রিমাত্রিক জ্যামিতি আঁকে। আমি বলি-কেমন আছো সন্ধামালতি ? অনেকদিন তোমাদের পাড়ায় যাওয়া হয় না- পরশ্রীকাতর শব্দগুলো নিশ্চয়ই আমার খোঁজ কোরে। আমি বিশ্বাসকে অকৃপন হাসিতে অবিশ্বাস করি।
আলো কমে যায়
পাখির মন ভাঙে
একবার কাছে গিয়ে দ্যাখি-তোমার ঘুম বিস্ময়ের মুুহূর্ত বিস্তার সমুদ্রে ছায়াবস্তুর পরমা সুন্দরি প্রকৃতিকাব্য পাঠ করে আর আমার মৌনতা অমাবর্তী দুপুরে মধ্যবয়সি রাত্রি তুমি হয়ে ওঠো,শব্দকলি। প্রিয় ফ্রানৎস কাফকা,তুমি আজ কোথায় ? ‘মানুষ’ শব্দটা কীভাবে মানুষের হয় আমরা জানি না-আমরা ক্রমাগত প্রাণপাত করছি। ভুল ভূমিকে স্পর্শ করে মানুষকেই স্পর্শ করছি। এখন নুরুল কাদিরের হাত অগনিত বৃক্ষ রুপান্তরের মাছি
আজ এই অনুবর্তী চোখে এই কবিতাটি আমার নয়-
এই কবিতাটি তৈরি হয়েছে পাখির জন্যে
এই কবিতাটি তৈরি হয়েছে বৃক্ষের জন্যে
এই কবিতাটি রচিত হয়েছে ফুলের জন্যে

এই কবিতাটি আমার নয়




রুপমাছি


আঁধার ভালো-আরো ভালো আলো রুপমাহির আগুন কালো
রাত্রি গাঢ় স্বপন আঁকো সর্বনাশা চোখ হৃদয়ে বিরহী আলো

বাঁশির সুর নিমেষ চাঁদের তরু ঘাসে বেঁজে ওঠে ঐ গান তরাসে
একটি মাছি কাছে আসে দৈব ভালোবাসায় ভূবন ধূলোর ত্রাসে




রিভার্স

কে ধরিতে চায় তারে-কে বা রাখে গোপনে রহিতে
কে বাঁজায় বাঁশি-প্রিয় নামে ডাকি কী কথা কহিতে
মোর প্রীতি হায়-দূরান্তে ব্যাপিয়া যায় মনপাখি উড়িতে আকাশে
সন্ধান করিয়া মরি বেহালা কেঁদে অন্ধকার ঢেকে- ভাবি প্রশ্নসকলে
পাখিমুদ্রণে ভরা চৈতন্য আঁকি- সত্যমিথ্যের ধর্মবর্র্ণ শাসন নাহি মানি
শ্লোকের ধারাতলে অশ্লোক চুরি হলে রে চাঁদ- সুর্যকে দেবলীনা জানি

ও মরমিয়া সুখ-
তরঙ্গ রিভার্স অসুখ
তীর্থে বীর্য ফ্যালি-প্রকৃত কবিতাটি এখনো লিখিতে বাকি





মাটির আয়না


ধরা যাক-
তোমার ভাবনাগুলো আমার আয়না
আমি অন্ধচোখে আর ঘুমের ভেতর হাঁটতে হাঁটতে তোমার কাছে যাই
সেখানে বাড়ি বানাই-ঋতু চাষ করি,পাহাড় কেটে সাগর খনন করি
বৈচিত্রময় খেলায় জমে উঠি আমরা-জলরেখা জাগাতে জাগাতে
দীর্ঘ ঘুমের দেশে তুমি-আমি রক্তাক্ত হই
তোমার মধ্যে সুর্য-চন্দ্র সবই ওঠে
কখনো যতেœর অভাবে বিশ্বাস রোগাটে হয়-অনাদি ভূমিতে আগাছা জন্মে

বলো আয়নাদেবি-
নিজেকে কী প্রকৃতির মতোন দূরে আগলে রেখে অবাক ফসল ফলাবে ?
তুমি কীরকম প্রেমের জমিন গো শব্দকলি-
আমার ঘুম ভেঙে আয়না দেখতে ইচ্ছে করে না ক্যানো !




ঈদের কবিতা

স্বপ্ন আর সম্ভাবনার হাত ছেড়ে ওঠো না বন্ধু- আকাশ লিখে রেখেছে তোমার ভাগ্যবৃষ্টি
মনের ঐহিক অনুবাদ অবন্ধন জলের ভাষা সামুদ্র সমান বিস্ময়সূচক দূরত্ব এখন প্রেমবরষায় শেয়ালের বিয়ে নিয়ে আমরা ভাবি না-অথচ হরিয়ালের চোখজ্বলে ধোঁয়া ফাটে আলোকাস্তান
সময়ের পুনর্জন্ম হোয়-আগুনের জলে মাতাল ঘুম ভাঙে পৃথিবীর কবিতার মর্মরিয়া দুঃখ আজ থাক মনের সাতসুতরো তীব্রতা ঝড়–ক হিশেবের উপকথায় সব পতনচিহ্ন কোনো জৈবিক অন্তর্লোকের সর্ম্পকের নতুন মৈথুনে

এসো আলোর ভাবনা ভাবি-পরাবাস্তব পুর্ণিমারাতে ফিরে হারানো সুখের বৈজনিক সবকটি জানালা খুলে রাখি জানা ভুলে, দিনের অস্থিরচোখে। জানি সূর্যের জন্মদিন কারো মনে নেই শুধু মিথ বদলাতে থাকে আর আমরা মনের ফিজিক্স-কেমিট্রি মুখস্ত করি-আজকের পুনরাধুনিক মেঘের গণিত সংঙ্গীত বাঁজিয়ে
এটি স্বপ-সম্ভাবনার নতুন ঈদের কবিতা





অসামান্য


কতোকিছুই তো ফেলে দিই
নষ্ট সূচ, ছেঁড়াকাগজ কালি শেষে কলম
প্রেমিকার সেফটিকিন, অব্যবহৃত কনডম
হস্তচালিত যৌনতার কষ্টভ্রূণ,পুড়ে ফেলা শাড়ি
ডিমের মোড়ক-শুকিয়ে যাওয়া প্রিয়ফুল
মলিন অথবা পোঁকায়কাটা কাপড় বেড়ে ওঠা চুল

সামান্য শিথিল ভাবনায় যে সব নতুন হয়ে ওঠে
প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সুন্দর ফেলেআসা দিন ভঙ্গিমার রবি
ইশারা প্রকৃতিধর কেউ কী ছুঁড়ে মারে ইমনছায়ার বস্তুনিষ্ঠ ছবি!





একটি রহস্যময় মাছ

যৌবন ভেঙে নতুন এক রহস্যময় মাছ
একটি রহস্যবাদ বিজাতীয়মাছ প্রতিদিন আমার সাথে কথা বলে
রাতের দুপুরে বিকারগ্রস্ত সময় কাটে আর রাত কেটে যায় অবিরল
আমি নির্মম সাঁতার কাটতে কাটতে সকালের রোদে উঠি জন্মস্বাদে
অনির্ধারিত জল কেটে
সে তো আসলে আমার মাছ-
এক রহস্যময় মাছ সে প্রিয় রামধনুর সুরভিত যৌবন ছড়ায় জলে
কতোটা সাঁতার বুঝলে মাছ হওয়া যায়
কতোটা সঙ্গিবিহীন একাকি কাটে শরমের জীবন
রক্তমাখা গরমজলে কোন কবিতা লিখো রাখো তুমি রুমি-
আমাদের শরীরে বিভা জ্বলে আর বিভার জলসঙ্গম নাচিয়ে
দিনের জন্ম নিলে রাশোভিত স্বপ্নে জলে আগুন ধরে...

কোনো সুগভীর জাল-অদৃশ্যের কাল জীবনের রাতদিনে
কী অদ্ভূত বিক্ষত আলোমাখা মিথ্যে অন্ধকার ডাকে স্বপ্নের ঋণে!

কী প্রতীক্ষা বিদৃশ্যের মাছে-
সোনালি-রুপালি বাতাসে ওড়ে নির্বিকার মাছপ্রতিম শীতলকাল
আজ দুপুরের রাতে এই রহস্যময় জাতে আমার ডাঙ্গারাঙা মাছের
সাথে কথা হলো-এক মির্মম অভিসারে!





রবীন্দ্রনাথ


‘জল পড়ে পাতা নড়ে’
পাতা নড়ে জল পড়ে
জল মাটিতে পড়ে
আসলে কী জল পড়লেই শুধু পাতা নড়ে!
পাতা নড়ুক-
জলও পড়ুক
আমি এ দৃশ্য দেখতে দেখতে হঠাৎ
রবীন্দ্রনাথকে ভুলে যাই







Post a Comment

0 Comments