কবিতা মানেই প্রলাপ আর পাগলামী ।। শি ব লী মো ক তা দি র ।। বামিহাল (পঞ্চম সংখ্যার ওয়েব ভার্ষণ) “Bamihal" eigjt year, five issues- march 2019




কবিতাকে হওয়া উচিতযেমনসুঠাম নারীর নগ্ন কোমরের মতো তীক্ষ্মতেমনিপ্রশস্থ নিতম্বের মতো দায়িত্বশীল। লোভনীয় টকের রসায়নে রসসিক্ত প্রকৃত কবিতাযেনজল আসা জিভের জৈব হন্তারক। প্রকৃত কবিতার সমস্ত ভূগোলজুড়েই ছড়িয়ে থাকে অনাকাক্সিক্ষত সঙ্গমে সাড়া দেওয়ার ন্যায় চরম এক উত্তেজনা। গৃহযুদ্ধের দেশে যেমন অতর্কিত ঘুমের মাঝেও জেগে থাকে অতি বিপ্লবীরা...

প্রকৃত অর্থে কবি হবেন বহুদিশাময়। ঝরনার মতো অনর্গল ঝরবে তার কলম থেকে শব্দের ফুলঝুরি। তিনি হবেন বিস্তৃত। দেখায়ভাবনায়স্পর্শেবর্ণে হবেন বহুমাত্রিক লীলাময়। কবিতা কখনোই হুট করে লেখার বিষয় নয়। টাটকা বীজসত্তা নিয়ে প্রথমে তাকে কবির গর্ভেই পুষ্ট হতে হয়। সময় হলে সে জানান দেবে। ঠিক তখনই কবি তার আপন ভাষায়নিজস্ব ডিক্সন দিয়ে পৃথিবীর আলো বাতাসে ছাড়ার অনুমতি দিয়ে করবে তার আত্মপ্রকাশ

কবিতাকখনো সে ঝিলিক দেয় নিত্য কিরিচের মতো। কখনোবা জং-ধরা ভিখিরির থালার ন্যায় পড়ে থাকে অচেনা ধুলোয়। নানান ম্যাজিক আর মেঘ এসে ভর করে আমার এইসব কবিতার পথে। আমার দেখানাদেখাবোঝানা-বোঝার ত্রিশঙ্কু এই ভুবনে তবু সে প্রবেশ করে। কাজেই অজাত সতীনের ন্যায় সে এসে হানা দেয় রোজ। নানান উস্কানিতেনানান মশকারাতে নিষিদ্ধ প্রলোভনে সে কেবলই ডাকে। তাকে লিখতে বলে। আমি লিখিআমি কাটি। গ্রহণেপ্রত্যাখানে অস্থির এক ঝড় বয়ে যায় মগজেমনেকোষেকণিকায়হাড়ের অভ্যন্তরে। কখনো সে জিতে যায়। কখনোবা হারি। আমি ঘুমিয়ে পড়ি সদ্য লেখা কবিতার পাশে। প্রতিটি পঙ্ক্তিকে সজোড়ে সাপটে ধরে

কবিতা হলো তাইধরা যাক সবুজ কচুরিপানায় ভর্তি কোনো পুকুর। আপাত দৃষ্টিতে কোনো জাজমেন্টেই যার হিসাব মেলে না। ফলে ভয় হয়যদি একবার পা পিছলে পড়ে যাইনিচে তার কি আছেকতটা গভীরবোঝা বড়ো দায়এই তল অতলের বিভ্রমে কেটে যায় সারাটা বেলা। চরম সভ্যতার মাঝেও টুপ করে ডুব দেয় গভীর এক অন্ধকার। নেমে আসে রাত। কখনো তা আশ্বিনের। কখনো হেমন্তের

কবিতা চিরকালই রহেস্যের। সে আমাদের হাতছানি দিয়ে ডেকে নিয়ে যায়যাবে। শয়তানের ন্যায় ঘরছাড়া করবে শান্ত সুবোধ সেইসব বালক কিংবা বালিকাকে। গোপনে গোপনে সে নিরাকারের রূপ ধরে হানা দেয় আমাদের সমস্ত আর সামগ্রিক ইন্দ্রিয়তে। আর তখনই আকার হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় প্রতিটি জনের বুকে আর বাহুতে। আমি সেই কবিতার চারায় পানি ঢালতে রাজিযে কিনা হয়ে ওঠে প্রতীকে প্রজ্জ্বলিত। যার স্তরে স্তরে নানান বিভঙ্গে ফুটে থাকে চিত্র আর কল্পনার জটিল মিথষ্ক্রিয়া। যে কিনা আততায়ীর রূপে নিঃশব্দে ছুরির ছোবল হানতে পারে সরাসরি আমাদের মেধার মর্মমূলে। কবিতা তখনই যখন সে হয়ে উঠে নানান দ্যোতনার। নানান চিহ্ন আর সংকেতে যে কেবল অজর-অমর জিজ্ঞাসার দিকে নিজেকে ধাবিত করে। পল হতে পলকেচূর্ণ হতে বিচূর্ণর দিকে 

সতত জাগ্রত ছাড়া ফাঁকি দিয়ে কবিতা লেখা অনেকটাই টাফ। যেমন বনভোজনের শেষে ভাতঘুম দিয়ে যে কবিতা রচিত হবে তার ভাগ্যে পুরস্কারের চেয়ে তিরস্কারের পাল্লাই যে ভারী হবে সে কথা সামান্য একটি ভাঁটফুলও জানে







Post a Comment

0 Comments