অনু ইসলাম এর একগুচ্ছ কবিতা


 পৃথিবীর তাবৎ সৌন্দর্য্য




সৌন্দর্যজ্ঞান


রহস্যপ্রবণতা সমস্ত অঙ্গে; আর স্বনির্মিত
মুখচ্ছদে উজ্জ্বলবর্ণ হাসির ঝর্না!

সর্বদেহ জুড়ে সবুজের সমাহার যেন প্রকৃতি
আহা! দুর্দান্ত সবুজ; তুমি ছুঁয়ে যাচ্ছো-
চারিদিক; ভেতর এবং বাহির

নির্জন একটা বাতাস ফুঁ দিয়ে গেলো-

সমুদ্রগর্ভের উচ্ছ্বাস ছুটে আসছে-
বীজমন্ত্র ভেঙে; ঝিনুক হওয়ার লোভে
দেহ-¯œানঘরে রক্তচিহ্নের সৌন্দর্য, জেগে-
উঠলে; ফুটফুটে ঝিনুক খেলবে স্বপ্নদৌড়

ভাঙনপ্রিয় সময়ের; হাতে হাত রেখে চর্চিত হোক
সৌন্দর্যবোধ

চলো, সংরক্ষণ করি; পৃথিবীর তাবৎ
সৌন্দর্যজ্ঞান




অবগাহন


যৎসামান্য; ভাবতেই পারো-
এক জীবনে কতোটা আর অবগাহন গভীরে
কিছুটা থেকে যায় পরম্পরা; অংশগত-
আরেক জীবনের প্রতীক্ষায়

এই যে, ডাক দিয়ে যাচ্ছে-
অকালসন্ধ্যা; পারস্পারিক বিবেচনাবোধ
ঘুটঘুটে অন্ধকারের নিচে-
দূরভাষের-আলোয় জাগিয়ে রাখছি-
জোনাকরঙ; একটা শূন্য-জীবন হাতে নিয়ে!

তোমার প্রসাধন-টেবিলের মতো সাজিয়ে রাখা-
ধূলোময় সংসার সৌন্দর্য
যেখানে নিত্যদিন গুচ্ছ-গুচ্ছ বেদনা জমতে থাকে
জমতে জমতে একপ্রস্থ জীবন-
আড়াল হয়ে যায়; আয়নাদৃশ্যের উল্টোপিঠে!

তবু নিমজ্জন হতে থাকে; জীবন জলের গভীরে-
নিত্য এক সন্ধানী জীবন...





ধানরঙের ঘ্রাণ


দূরালাপনী হতে ভেসে আসা দীর্ঘ-দীর্ঘশ^াসে
একটা পুরনো ঘ্রাণ; হেমন্তকন্যার স্বর
আহা! ধানরঙ- কখন গোলায় উঠেছো তুমি?

একটু একটু করে শিশিরফোঁটা ঝরছে-
বুঝে নেয়া যায়; স্মৃতিপথ ছুঁয়ে যাচ্ছে শীতের আগমন

সমীক্ষণ শেষে; ফিরে আসে অবহেলিত মন
ফিরে যায় রঙিন প্রজাপতি-

জঠরযন্ত্রণা বোঝে প্রসূতিমন; প্রেম বোঝে না
ঠুনকো জীবন- মন্দ কী ছুঁড়ে ফেলে দিলে!
হেমন্তকন্যার দীর্ঘশ^াসে ভারী হয়ে উঠছে ধানরঙের ঘ্রাণ

জয়ধ্বজা উড়িয়ে মনোকাশে কী অদ্ভুত এক আনন্দ যাপন...






রূপান্তর


চেয়ে দেখো; আয়নার ভেতর-
প্রত্যহ রূপান্তর ঘটছে, আমাদের!

এই যে তুমি, তুমি থাকো না;
কিংবা আমি, আমি থাকি না-
অথবা- আমরা, আমরা থাকছি না;
হয়ে উঠছি অন্য আমি, অন্য তুমি কিংবা অন্য আমরা!

অদ্ভুত বর্ণবিন্যাসের চারিত্র্যের মতো ঢুকে পড়ছি!
রূপান্তরের এই রহস্য অনুদ্ঘাটিত থেকে যাচ্ছে-
পরম্পরায়-

ক্ষণিক-সময়; আয়নাদৃশ্যে দৃশ্যমান হচ্ছি!
প্রসঙ্গত; উপসংহারে একই সূত্রে মেলবন্ধন

স্বগতোক্তি- জীবন; রূপান্তরিত এক চলমান চাকা







বিরোধাভাস


সবকিছু পূর্ণতা পায় না জেনেও একটা নির্দিষ্ট গন্তব্য খুঁজে চলা
গন্তব্য কী সত্যি খুঁজে পাওয়া যায়! নাকি মিলিয়ে যাওয়া-
শেষ রাস্তায় সঙ্গমের পূর্ণছেদ গন্তব্য হয়ে ওঠে ?

একটা মিথ্যে ভালোবাসার ভিত; কতোটা আঁকড়ে রাখে
যোজন পথ; আয়ুস্রােতে ভেসে বেড়াচ্ছি-
আলো-আঁধার মাঝে জোনাকরঙের আনন্দ ক্ষণিকের!

তবু সন্ধ্যা- চোখে কালোদিঘির পথ ধরে হেঁটে চলেছি
জীবনকে নতুন করে জানবো বলে- অথচ
সংশয়, নীল আকাশে তাকিয়ে নীল রঙে মিশে যাচ্ছি শূন্যতায়

--১৮




Post a Comment

0 Comments