মনখারাপের মাস
(১)
পরশু রাত তিনটে থেকে
মনখারাপের মাস শুরু, তাই
লোডশেডিং হয়ে গেল
ইকড়ি মিকড়ি চাঁদের আলোয়
ছমছমে বনানীদির বাড়ি ছাড়িয়ে আরও দূরে
বিলটুদের ছাদের ডিশ অ্যান্টেনায়
টিপটিপ করে মনখারাপ নামছে।
মামন যাস না, একা একা যাস না, ওদের বাগানে
মানুষখেকো কুকুর আছে, মামন, সাবধান,
মনখারাপ ছুঁয়ে দেবে তোকে, মামন
পরশু রাত তিনটে থেকে
মনখারাপের মাস শুরু।
(২)
কতগুলো জ্যোৎস্নার স্রোত একসঙ্গে বাঁধলে তবে
চাঁদের কাছাকাছি যাওয়া যায়?
রেকর্ডে বেগম আখতার থামলেই
নীচ থেকে মায়ের ডাক, রাতের খাবার সময় হয়ে গেছে –
মা, এটা মনখারাপের মাস,
আবার রুটি-তরকারি নিয়ে বসতে হবে?
এখন তিরিশটা দিন শুধু মৌন অনশন
আর নিবিড় অপ্রেমেই কেটে যাবে।
আর কিছু দরকার নেই।
(৩)
বীররসে ভরে গেলে কাব্যভার, পাত্র ভরে দাও দু’চামচ শৃঙ্গারে
ফোঁটায় ফোঁটায় জিভে শুষে নিতে নিতে ভুলে যাই
এটা মনখারাপের মাস,
সূর্য এখন মধ্যগগনে,
প্রখর কিরণে সমস্ত যুদ্ধসাজ তোমার স্খলিত,
জপমালা কোথায় রেখেছ? জপমালা?
অক্ষ গুণে গুণে হাঁটো
এই মাসও ঠিক শেষ হয়ে যাবে।
(৪)
জীবনের যত সাধ সব বালিশের নীচে গুঁজে
কাটিয়েই দিই মনখারাপের মাস।
তারপর তো ঘুম থেকে উঠতে হবে,
সাড়ে ছ’টা বাজে, টাইমকলে জলের শব্দ
উঃ! আজও খবরের কাগজ পড়ে আছে চৌকাঠে,
এক তারিখ আজ, ধার-বাকি মেটাতে হবে তো?
গতমাসের বালিশের নীচ থেকে
মিটিয়ে নিই সব মন খারাপ ।
(৫)
মনখারাপের মাস শেষ হল কাল রাতে
শ্যামকল্যাণে।
আলাপে বিস্তারে এখনো তিরিশটা দিন,
বেহালার ছড় গুণে এখনো তিরিশটা দিন,
তারপর?
আবার সূর্যের গতিবেগের কারণে
ক্যালেন্ডারের পাতাবদল।
0 Comments