পতঙ্গপ্রবণতায় ঝাঁপিয়ে পড়ার ইচ্ছে

প্রত্যয় হামিদ এর কবিতা








মুখপঠন


তোমার মুখ দেখেছি বহুত্র
অসংখ্য অবয়বে ভুলে যাই কখনো কখনো
কেউ একজন যে তুমি সে তুমি সত্যিকার।

মনে হয়- তুমি বুঝি তোমার মুখটি নও
অথবা তোমাতে বাস করে অজস্র মুখ
এক তোমাকে চিনি তো অচেনায় ভেসে ওঠে অন্য অনেক
মুখপাঠ তাই শেষ হয় না-
মুখের মতোন মুখ
মুখসদৃশ মুখ
মুখ উপমুখ প্রতিমুখ
সম্মুখে কেবলই অসংখ্য মুখ
অযুত নিযুত অর্বুদ...

আমি তবু উন্মুখ থাকি
ও মুখের অবয়বটুকু স্থির করি
অতঃপর মুখস্থ করি মনে মনে-
মুখস্থ হয় না, হতে চায় না,
প্রতিস্থাপিত নতুন মুখ দাবী করে ভিন্নপাঠ।

যতবার ভাবি আমি সমাপ্তি এবার
ততবার ফিরে আসো- ভিন্ন ভিন্ন রূপ!

অজস্র মুখে তবু খুঁজে বেড়াই
তোমারই আদিমুখ!

ব্যস্তানুপাত


ভালোবাসার বাজিতে জিতে গেলে
বিশ্বজয়ের উল্লাস দেখি তোমার চোখে
আর আজন্ম হেরে যাওয়া আমি
তোমার উল্লাস শুষে আলোকিত হই

আমার হেরে যাওয়ার যে কষ্ট
প্রতিবার সুখ তার ব্যস্তানুপাত...
বাজিতে হেরে যেতে
তাই
বার বার বাজি ধরি
বার বার সুখ ছুঁয়ে যাই।

বৃষ্টিবিলাস

তোমার শহরে বৃষ্টি নেই।

ভালোবেসে চলো তবে বৃষ্টি নামাই।
বৃষ্টির হাত ধরে ভাসমান হই
অতঃপর হয়ে উঠি উত্তরের মেঘ
বুকে নিয়ে অফুরান পূবালির গান
আছড়ে পড়ি কোন পাহাড়ের গায়

পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে নেমে
মিশে যাই চলো অন্ধকার জলে

চলো আজ দুয়ে মিলে বৃষ্টি হই
ভাসমান বাতাসে ভেসে ভেসে
অবশেষে চলো হই রঙধনু রঙ...

ভালোবেসে চলো আজ বৃষ্টি হই!

ইনবক্সে

তোমার নামের পাশে সবুজ আলো দেখে
এগিয়ে যাই তুমুল আগ্রহে
পতঙ্গপ্রবণতায় ঝাঁপিয়ে পড়ার ইচ্ছে হয় মনে,
আমার আঙুলের ক্ষিপ্রতা তখন
এক দুর্নিবার টর্নেডো!

একই সঙ্গে সহস্র কথা অযুত রূপে
লক্ষ আবেগ নিযুত বিরহে
ভিড় করে সমস্ত অস্তিত্বে
তখন দিশেহারা আমার তাবৎ  স্নায়ুজাল

সাহসের সুনীল বাতি
আচমকা নিভে যায়
কেন যে নিভে যায় হঠাৎই...

অতঃপর তোমার ইনবক্সে আমি
এক প্রস্তর প্রতিমা
কেবলই এক নিথর সময়!

চাকা

সাঁই সাঁই ছুটে চলেছে চাকা

ছুটে চলেছে চাকাভর্তি প্রাণ
পেছনে ঘুরছি আমি
উড়ে উড়ে দেখছি
চাকার ঘূর্ণন।

চাকা ঘোরে
এগিয়ে যায় চাকা
এগিয়ে যায় প্রাণ
পেছনে পড়ে থাকি
পুড়ে যাওয়া ধুঁয়া...

ধুঁয়া যদি থামাতে চাও
থামিয়ে দাও দেখি চাকা!

Post a Comment

0 Comments