০৪.
যমুনার জলে শরীর ধুয়েছি
পূন্য কুড়িয়েছি স্বর্গে যাবো বলে
নরকে আগুন জ্বলে
তীব্র দাবানল
স্বর্গ, আমাকে গ্রহণ করো
আনন্দে আনন্দ নেই
দুঃখে দুঃখ নেই
অনুভূতি ফিরে গেছে নিজের বাড়িতে
সেখানে পাপপুণ্য একসাথে থাকে
আমি কারো বন্ধু নই
নিঃসঙ্গ
একাকী
আমাকে কী দক্ষিণা দেবে দাও
প্রাপ্য প্রাপ্তি চাই
নাভীকুণ্ডে আসবো না আর
দেখ, নীল আকাশে ঝুলছে আমার বসত
০৫.
রাধার মান ভাঙে না
কৃষ্ণ ছেড়ে গেছে তাকে
রাই যমুনার ঘাটে একা
কেউ কাউকে বুঝতে পারে না
বোঝাবুঝির দিন শেষ
রাধার সম্মান কাঁপে যমুনার জলে
রাধা কিছুই বোঝে না
দু'চোখে যমুনার জল
লজ্জায় ওঠে না রাধার শরীর
বড়াইয়ের ছলে ভেসে যায় প্রেমের মান্দাস
০৬.
সাধুর প্রযত্নে সাধুসঙ্গ পৌঁছে যাচ্ছে
হলুদাভ খামে। ডাকঘর নেই। চিঠি
যাচ্ছে সাধুর বাড়িতে। সবকিছু ঠিক।
ঠিক নেই প্রেরক ও প্রাপকের নাম।
ঠিকানাও ভুল। আমি জানি সাধুবাড়ি।
চিঠি দাও। পৌঁছে দেব সাধুর কল্যাণে।
কিছুই দুর্বোধ্য নয়। সুবোধ্য, সহজ।
সহজ সহজে হয়। বাবার আশ্রমে
একটু আশ্রয় চেয়ে এসেছি এখানে।
আমাকে গ্রহণ করো। ফে ইয়া
কাফ
রে...
একতারা কোথাও রয়েছে পড়ে। সুর
নেই। গান নেই। সাধুসঙ্গে অন্ধকার।
বিবাগী পাখির ঠোঁটে লালনের গান।
আত্মার আত্মীয় সব সাধুর নিবাস।
০৭.
তোমার ভেতরে দাউদাউ করে জ্বলে ভাটির মায়া
গুপ্তজ্ঞান প্রকাশিত হয় কালনীর কূলে
মালজোড়া গীত হয় হাওড়ে-বাওড়ে
পাখি বলো, মণিরত্ন
বাউলের স্বর্গালয়ে মহতী সরলা
ভাটির চিঠিতে বেদনার কথা লেখা
আফতাবগীতি নেই
ক্ষত ও ক্ষতিতে ব্যথিত বাউল
সন্ধ্যার দীপ বাতাসে কাঁপে
লোকগান, উজান ধলের জল
ভিটেমাটি ভেসে যায় অলৌকিক স্রোতে
অতঃপর, উড়ে যায় বিবাগী গানের পাখি
০৮.
উকিল মুনশির গানে বিষাদের সুর
পোড়া কপালে আগুনের ধোঁয়া
ধোঁয়ার ভেতরে আমি একটি পাখিকে খুঁজছি
জানালার রোদ্দুরে বিচ্ছেদী তাপ
জলীয় মেঘের দেশে পাখির উড়াল
দু'চোখে বিষণ্ণ জল
ননীচোরা কষ্ট পেয়ে যমুনার কূলে যায়
রাধামগ্ন প্রাণ, রতিমগ্ন মন
শোয়া চান পাখি কবরে ঘুমায়
সুখস্বপ্ন উড়ে গেছে দূরে, বহুদূরে...
দীনহীন,
নিদ্রাহীন
উকিল মুনশির চোখে বিষাদের জল
0 Comments