সম্মিলিত কবিতা সংখ্য- (১ম পর্ব)

Signature Poetry Collection (Part-1)



সম্মিলিত কবিতা সংখ্যা- (২য় পর্ব)


অভাব


হুট করে হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছ 

তোমার শোবার ঘরে


বললাম—

ক্ষুধা পেলে কোনো কিছুই ভালো লাগে না


না তুমি, না অন্য কিছু


অথচ 

তুমি নাকি আমার জন্য না খেয়ে— 

জয়নুলের 'দুর্ভিক্ষ' ছবির দেয়ালে তাকিয়ে থাক


এটা জানার পর থেকে আমার আর ক্ষুধা লাগে না!




বাঁশি


প্রকৃত বাঁশি আজো বাজাতে শিখিনি

তাই, তুমি কবিতার রাধা

এলে না, এলে না এই মর্মপথ চিড়ে।

দূরে হলুদ কতো ফাগুয়া উৎসব।

বনপথে গোপিনীরা আসে,

সহজ শিকার যারা রাগিণীর অন্ধকারে

তবু তৃষ্ণা মেটে না, তৃষ্ণা মেটে না রাধা

আঁকাবাঁকা বাঁশি ফেরে আঁকাবাঁকা পথে,

মিথ্যে মিথের ছাই লেগে থাকে আঙুলে আঙুলে

আমার কলসের ভিতর কেন যমুনা ঢুকে পড়ে!




স্বপ্ন


সারিবদ্ধ পিঁপড়ার মত মানুষ হেঁটে যাচ্ছে 

আলোর দিকে- 


এই অন্ধকার ছেড়ে আমিও যেতে চাই 

তাই, পা চালিয়েছি তাদের সঙ্গে।


কিছুদূর যেতেই কৌতুহলে প্রশ্ন করলাম তাদের 

কোথায় যাচ্ছেন?


উত্তর এল, 'আলোর দিকে, ঈশ্বরের দিকে।

ব্যস, এই তো'

আরেকজন বলল, 'তুমি কোথায় যাবে?

আমরা মৃত'।







পৌনঃপুনিক


আমাদের মরার খিদে তবু মেটে না।

সেই কবেকার ফেলানীর লাশ হয়ে ঝুলেছিলাম মেরুদণ্ডহীন উপত্যাকার কাটাতারে।


আমরা এখানে দেখতে পাই, সীমান্তের সমস্ত ইস্পাতের কাটাতার একসাথে একটা ইলেক্ট্রিক তারের মতো প্যেচিয়ে রেখেছে ভগ্ন দেশটাকে।

আমরা ফেলানীরা হন্তারকের  কাটাতার 

হয়ে পাহাড়া দেই মাতৃভূমির মানচিত্র।


একপ্রান্তে আওয়াজ হলে আরেকপ্রান্ত কেঁপে ওঠে ভয়ে।

আমরা দলবদ্ধ হয়ে কাঁদি,একাকিও কাঁদি।

আমাদের মরার খিদে তবু মেটে না,আমরা বারবার বিপন্ন পাহাড়ের মতো উজার হই,আমরা ইয়াসমিন হয়ে বারবার ইউনিফর্ম এর দিকে তাকাই। এরা কারা? কাদের ইউনিফর্ম দেখে ভয়ে আতঁকে উঠি? 


আমার মরার খিদে তবু মেটে না। আমরা ফুল হয়ে ফুটি তনু হয়ে মরি। আমরা গণতন্ত্রের গুদের ভেতর পেচ্ছাব করি বারবার,থু মারি মুখোশের উত্তরাধিকারীদের যারা একদিন মাংনা বুলি দিয়ে বলেছিলো সাম্য মৈত্রী স্বাধীনতার কথা।

আমরা সমস্ত রাত কাটাতার হয়ে পাহাড়া দেই তোমাদের ঘুম, তোমাদের আসন্ন মৃত্যুর কফিন।






টুকরো মেঘের কণা


যতবার ভেবেছি,

ততবার ভিন্ন কোনও ভাব

ভাবনার রসদ ভেঙে তুলে আনে আমাকে;


এমন বেদখল হতে হতে চোখের নিকট

সমুদ্র কোলাহল, দুর্ভাবনার ঝিনুক।


অবহেলায় বুজে ফেলে চোখ, অসহ্য

যন্ত্রণার আগে-

ক্রমশ অন্ধকার আঁকি!


জানি,

আঁধার টপকে গেলেই

যাপনের জন্য বাতাসের যত পাঠ-

একাগ্রতায় এক বিন্দু আলো,

জ্বলে উঠবে নিশ্চিত;


ভেঙে যাবে মনোপ্রান্তরের গাঢ়তর ঘুম।


যতবার ভেবেছি,

দৃষ্টি সরে যায় টুকরো মেঘের মত, অযথা

ভিজে যাই গোপন বৃষ্টিজলে।




একজন বিনয় ও নীলবিষ


কবিতার জন্য রাত জাগা পাগলামি

আর ঘুমের জন্য বসে থাকা অন্যায়


এত কাল বৃষ্টির জন্য বসে থাকতাম

এখন রিবট্রিল .5 এর জন্য


যে কবি বাইরে থেকে না ডেকে - 'অন্তরে তার

ডাক পাঠায়'-- তাঁর জন্মদিনে এক বাটি পায়েস

সাতটা লাল গোলাপ আর মহামতি

আইনস্টাইনের থিউরি অব রিলিটিভিটি'- পাঠিয়ে দিয়েছি।


আমি কোনো রিস্ক নিতে পারব না

কেননা,  'গায়ত্রী'র সাথে একা একা কথা বলা

আমার কাজ নয়, পৃথিবীর মানচিত্রে অঘ্রানের

অনুভূতি নিয়ে আমাকে বেরোতেই হয়...


কত বর্ষা কত বসন্ত চলে গেল - অথচ, সুতুপার

মান ভাঙল না। বাল্মিকীর কবিতা হাতে তাই ধূসর পাণ্ডুলিপির কাছে নত হই, 

কিন্তু, একজন উজ্জ্বল মাছের দেখা পাই না...


কবিতা জাগিয়ে রাখে তবু

নির্নিমেষ ঘুমুতে দেয় না


তার ওষ্ঠে নীলবিষ


আমি সেই বিষ প্রতিদিন পান করে যাই...





অপাপবিদ্ধ


সূর্যের প্রখরতায় আকাশ-অডিটোরিয়ামে মেঘেদের সভা

ভাস্কো দা গামার উদ্ভাবন-উন্মত্ততায় আবিষ্কৃত

উত্তমাশা অন্তরীপ, ভারতমার্গ...

চাঁদের স্তনাগ্র স্পর্শে উদ্বাহু নভোচারি।


কুলমানহীন, নিন্দার্হ; সেও বীরভোগ্যা নেশাতুর রাত্রির আলিঙ্গনে

অনলোন্মুখ হাঁপর-যোনিতে তাঁতা‌নো

লৌহ-শিশ্নের স্খলনে নির্মিত হয় গার্হস্থ্য তৈজস।


নীলাদ্রি, তুমিই বলো—ভালোবেসে আমি যদি পা বাড়াই

তোমার গোপন আঙিনায়;

সেচ-কর্ষণে ফলাই অবারিত ফসল-সম্ভার—

সে আমার পাপ? 






দুটি লিমেরিক


ক.

নামাজ রোজা হজ্ব যাকাতের আমল করো বেশ ভালো।

দায়িত্বের কাজ সম্পাদনে কেন করো হাত কালো?

                 ধর্ম পালন যেমন করো

                 কর্ম করো তেমনতর

কামেল মানুষ বলবে লোকে ছড়বে দ্যুতির সেই আলো।


দুই

বৈশাখী ভাতা খাও তখন যায়নি জাত,

বাঙালির উৎসব সেরা বলছো বিদাত!

            বলি কথা মোটা দাগে;

            আমরা মানুষ আগে।

বোধকে শানিত করি, কেন ফুটো করি পাত?





মানুষ প্রেমে খুঁজেছি ঈশ্বর 


যতটা হাপিত্যেশ করছ ততটা নয় 

আসলে

মন্দির ভেঙে গীর্জা তুলেছে নিরাকার ঈশ্বর আদেশে 

প্যাগোডা ভেঙেছে বলে নির্বানে গৌতম হেসেছে 


মানুষ বাঘে কতবার শাসিয়েছে 

তবুও ফকিরের আদেশ 

বুক পেতে নিতে হবে প্রেম 

যে দেবে না, সে কাফের

বিশ্বাস ভঙ্গে মিলেছে মৌলবাদী মিছিলে 


অগণন মানুষ 

বিশ্বাস ভঙ্গের দায়ে আমাকেই ঘিরে ধরে,

আসলে আমিই বোকা 

পাথুরে ঈশ্বর ফেলে 

ভগবান খুঁজতে গিয়েছি নদীবক্ষ বামে ফেলে! 





কবিতাসুন্দরী


আমি তো বসন্ত নই, সেন্ট ভ্যালেন্টাইনও নই


তবুও আত্মাতে রাখি তোমার মুখশ্রী


যেখানে রোদের প্রেম


উষ্ণতা ছড়িয়ে রাখে চিরবসন্তের কাছে।



অবহেলা ঢালো আরো, প্লাবন আসুক;


নূহ নবীজীর মতো পেয়ে যাবো পর্বতশিখর


নয়তো বস্তুর মতো ডুবে গিয়ে পৌঁছে যাবো


খিজির নবীর দরজায়।


তোমার স্তুতির ফেনা 


তবুও জিহ্বায় ঠোঁটে রয়ে যাবে অমলিন।



কবিতাসুন্দরী,


তোমাকে তিলাওয়াতে রেখেই একদিন মুছে দেবো


এই ভাঙাকুলার জীবন! 






মনে পড়ে


এমনটি ত হয়নি যে 

একেবারে মনে নেই

মনে আছে,বেশ মনে আছে

হর হামেশাই মনে পড়ে

কখনো কাজের মধ্যে

কখনো বা একা পথে হেটে গেলে 

লোকে বলে তুমি নাকি অকপটে ভুলে গেলে,

দিব্যি মনে পড়ে

সমস্ত রাতের পরে, ঘাসে জমা শিশিরে

সব কিছু ঘুমিয়ে যখন

পিনপন নীরবতা বিরাজ করে

তখন তোমার স্মৃতি পদে পদে মনে পড়ে

মনে পড়ে কাজে - অকাজে

কুতুবদিয়া হয়ে শতাব্দী, বছর ও দশকের মাঝে মাঝে

মনে পড়ে বাক্যে

মনে পড়ে উদ্দেশ্যে ও বিধেয়ে

দাড়ি থেকে কমায়,কোলন ও হাইপেনে

মনে পড়ে কবিতা ও সাহিত্যের পাঠে

চোখ পড়ে তোমার চলে যাওয়া ঘুনে ধরা চৌকাঠে 

মনে পড়ে গোধূলি আধারে, খরস্রোতা বিদ্যাধরীর কিনারে,মনে পড়ে  মন পিঞ্জিরার একান্ত মিনারে

ভর দুপুরে তাড়া করে তোমার নানা স্মৃতি,

চোখ জোড়া যেন ফ্যাকাশে কালের বিস্মৃতি






ডোম


জীবনের শেষ স্টেশনে

এসে দাঁড়ালো রথ

চুল্লু রঙের সন্ধ্যা ঝুলে আছে চুল্লীর নাকের ডগায়

নদীর উদ্দাম খিদে

চিতাভস্ম হয়ে ভেসে যায় পাপ

ডোম বিড়ি থেকে শক্তি নিয়ে

ইতি টানে শেষ দৃশ্যের

ডোম ধর্মের জ্ঞাতিগুষ্টি  আমার অন্তিম সাথি।





উদীয়মান 


পৃথিবীকে এমন আগে কখনও দ্যাখেনি চাঁদ 

এখনও মাটিতে রক্তাক্ত ক্ষয়াটে জীবন ছাদ। 

চৈত্র শেষে হয়না বসন্ত শেষ মন প্রস্তুতির রাত

আর ওপারে নগর সভ্য প্রথম পাওয়া আলাপ হাত।

পাহাড় থেকে সুন্দরবনে ঘোমটা টানা মাঠের ধান 

খামখেয়ালি ষড়ঋতু মৌসুম হাওয়ায় করছে স্নান।

নির্জন দুপুর ভীষণ একা নীরব নিথর সন্ধ্যা স্থির 

বাদাবন সাঁকোয় পাহাড়ী উচামন উন্নত শির।

ভালবাসার আবেগ উছল রাতে গোলাপ হাতে হাত

ভাল থেকো ভাল রেখো সবাই সবার ভাতে ভাত।

যে যার তালে থাক্,নদীতে নোঙর করা নৌকা ঠায় 

তারা খসে হায়! ভোগের নৌকা ছয়টি পাল দাঁড়ে বায়।

স্বপ্নের ভেতর বেজে ওঠে অপূর্ব গীটারের সুর

অনাবিল মৌনতা মাঝে বাজে ভাটিয়ালি দূর।

গোপন দোতারায় জেগে ওঠে কালো ভ্রমরের গান 

নগরী সফর ব্যস্ত শহর নিবিড় সবুজের টান। 

সবার মাঝে উঠছে দেখো পুব আকাশে সিঁদুর টিপ 

সৃজণ ভোর দেবে উপহার নব উদীয়মান দীপ। 





আন্তরিক


পোড়া ইতিহাস ঠুকরে দেখেছি মুখোমুখি বসে আছে পাতার এপিঠ ওপিঠ,যত হলুদ কথারা

চিরচেনা তবু কত অচেনা মহামন্ত্র মেন প্রিয়প্রতিমা

নিঝুম নির্ঝরে পূজারী আঁকা মনে একাত্মা

সব সরোবরে সরণী ধরে অভিভাষণের পথিক 

পাশাপাশি সোনাঝুরি কবিতার পাখি

প্রকৃতির মতো মোহমায়া টেনে নিশিপদ্মে আশ্চর্য

গহনে লুকনো শিরদাঁড়া যেন প্রেমবিভোর

ছলজাদুতে মুগ্ধ করে দরাজ সৃজনে সব ছায়াপাখি

ধরতে চেয়েও জোছনা উদ্ভাসে চক্রশিকারি

শুধু মন খুঁজি আকাশে বাতাসে কেউ যদি আসে

মনের ক্যানভাসে মনপূজারী আন্তরিক আখ্যানে...





গৌরাঙ্গবাড়ির সেই সন্ধ্যায়


গ্যালারির মতো ধাপে ধাপে উঠে গেছে আলক্ষেত

সারিবেঁধে কাদা মেখে ধানচারা দর্শক—

পাখিজন্মে পেয়ে গেলে মাছের লেজুড়

ডিগবাজি খায় ফিঙে— ফড়িঙের পিছে।


নিম ও অশ্বত্থেরা যৌথ ছায়ায়

ঘিরে রাখে খেতুরের গৌরাঙ্গবাড়ি—

হাত থেকে পড়ে গেলে পুজোর প্রসাদ 

উড়ে এসে খুঁটে খায় ধূসর চড়ুই।


জগন্নাথ মন্দিরের ঘণ্টাধ্বনি শুনে

চত্বরে বসে পড়ে পঞ্চকুমারী—

কপালে আলপনা কেশব-তিলক!


সফেদ ছাদের নিচে 

কুচি পাথরের মেঝে

তারার নকশা কাটা।

গোল হয়ে সুরে সুরে 

কোরাসে ভজন ধরে—

'হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ

কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে...!'


পাঁচিলের গা-ঘেঁষে শানবাঁধা স্তব্ধ পুকুরে

ডুব দেয় সিঁথিকাটা মিনতি সরেন—

স্নান সেরে উঠে এলে সন্ধ্যা ঘনায়

দাবনায় লেগে থাকে 

হলুদ বাবলা ফুল!


মোষের ক্ষুরের ছাপ

তোবড়ানো লাল মাটি

দাঁড়াশ সাপের মতো 

চলে গেছে পথ—

প্রেমতলী সন্ধ্যায় 

পথে পথে পড়ে থাকে স্মৃতির খেতুর—

পায়ে নিয়ে প্রেমকাঁটা পঞ্চকুমারী

নছিমনে চলে যায় বিলকুমারী।





নিসর্গ রমণী


দোপাট্টার শাসন না মানা যুগল পদ্মকোরক, সুষমা অবয়ব

দেখে নেচে উঠি পুলকানন্দে -ছন্দে  হৃদয়ের বাঁকে তাজা অনুভব

রূপঝর বাংলার শ্যামলিম রমণী আমার কাঙ্ক্ষিত চারুলতা

বাঁকপ্রতিম সব মোমের নির্মাণ, অধর থেকে ঝরে শত শুভ্রলতা।


পদ্মশ্রী হাত,চুল মেঘের পালক পিঠ বেয়ে মৃত্তিকামুখি

দেবদারু হিজল তমাল বনে হেঁটে যায় একা,  যেনো চিরসুখি

হরিয়াল শালিক চেয়ে থাকে অপলক, চোখ বুঝি অশান্ত সাগর

অনন্ত ভাবনায় ডুবুডুবু আমি , চারু কেমন করে এমন হয়েছে ডাগর!


একদিন এক শ্যামলিম বিজন পথে দেখা হল চারুর সাথে

বললাম, কথা শোনো, কথা শোনো হৃদয়ের হাত রেখে হাতে

মেখে নাও প্রেমাঞ্জন তোমার দৃশ্যমান স্ফীত পলল বুকে

এসো, দুজন হেঁটে যাই মালঞ্চ নদীর পাড়ে সম্মুখে ঝুঁকে।


দখিনা বায়ূর আদর পেয়ে  উড়বে তোমার খোঁপাভাঙা চুল,

খসে যাবে বুটিদার শাড়ির আঁচল, দেখব যুগল হলুদাভ ফুল

বলল চারুলতা, যদি থাকে গোলাপ পাথরে আজন্ম মিল,

নিসর্গের আলপনা মেখে দু ' জন হব জোড়া শঙ্খচিল।





অন্তর্দাহ


রাতের চন্দ্রহাসি হেসে হেসে স্বপ্নময় করে ঘুম,

ঘুমের রাজ্যে পাখামেলে ঝিঁঝিঁ-ঝাউগাছ ছাড়িয়ে 

উড়ে উড়ে জুড়ে বসে শূন্যের শ্মশানে;

আকাশ তো নয়, শূন্যতা চারিদিকে চোঁ চোঁ করে-

অস্পষ্ট ভোঁভোঁ শব্দের সান্ত্বনা খুঁজে খুঁজে ফিরে 

অদৃশ্য অলোকে শুধু দুঃখদের বসবাস সেখানে বা

এখানেও।

  প্রাচীন পদ্যের পদে পদে পাখা ঝাপটিয়ে ঝাঝালো

এক মোহময় মোদির মাহাত্ম্য মহাশূন্যেই খুঁজে খুঁজে ফিরি;

মধ্যরাতের মহা পরিব্রাজক- বিপ্লবীর ঘোড়দৌড়ে

সূর্যাধার ডিঙিয়ে  

পৃথিবীতে ফিরতে চাই সাম্যবাদের জয়গান নিয়ে। 

 খসে খসে পড়ে পড়ে ভেঙেচুরে বৃক্ষমুলে জন্মাবার 

নতুন গল্পের উল্টোপিঠে উপেক্ষিত(আমি) আত্মঘাতী হই,

দীর্ঘশ্বাসে দীর্ঘশ্বাসে আলো দেখি-আলোকিত করি

কৃষ্ণগহ্বর,

অবশেষে জেগে দেখি স্বপ্ন নয়, রাত নয়, পূর্ণিমাও নয়;

জ্বলন্ত এক মস্তিষ্ক বিচ্ছুরিত বিস্তীর্ণ দুরভিসন্ধি

অভিসারে অভিমানে অবয়বহীন এক ব্যর্থকুরুক্ষেত্র।





উপেক্ষিত ক্রেঙ্কার


পৃথিবীর সমস্ত খানকির পোলা ঘুমিয়ে গেলে 

আমি একটি সিগারেটের পুটকিতে নির্বিঘ্নে চুমু এঁকে দিতে পারতাম!

শরীরের গাঁটে গাঁটে এমন ক্লান্তির বারোটা বাজিয়ে 

নেমে যেতো না আমার ছন্নছাড়া বীর্জ।

হায় ঈশ্বর! শুয়োরের বাচ্চা!

এমন পোড়াচোদা কপালে কেন শকুনের চাষাবাদ?

আমি ক্রমশ চাপা পড়ে যাচ্ছি মাংসের দাপটে

আমার হৃদয় জুড়ে কবিতার মর্মাহত ভোদা!

শুয়োরের বাচ্চারা পালাক্রমে আলুথালু করে গ্যাছে সব।

আমার সঞ্চিত স্বপ্নগুলো ইঁদুর খেয়ে নিয়ে 

বিড়ালের দাঁতে আজ ঝুলে ঝুলে আছে।

এই বালছেঁড়া চতুরের দেশে আমি হয়ে গেছি এক বঞ্চিত বাঞ্চোদ।

পৃথিবী গোলাকার! 

তাতে আমার কি বাল?!

সকালে খাওয়া হয় নি,

দুপুরে পঁচিশখণ্ড রবীন্দ্ররচনা পুড়িয়ে এখন রান্না করছি রাতের ভাত, 

আমার পেটে বিধ্বংসী ক্ষুধা!

শাউয়ার 'কাব্যতত্ত্ব' পড়ে আমি কি করবো?

প্রেমিকাদের ফিরে পাবো?

নাকি চুরি যাওয়া সেই হারানো শৈশব ?

উপদেশ দিতে এসো না মাদারচোদ!

আমি এখন উন্মাদ, ঠিক তোমার পিতাজানের আস্ফালিত লিঙ্গের মতোন।

অশ্লীল চোদাও কেন অসুস্থ মগজ?

সমাজের পেটিকোট খুলে খুলে তুমি কত কিছু চেটেছো, আমি কি দেখিনি?

নির্লজ্জ কাকে বলো, হে চোদারু ভাবুক?

আমি তো জানি তোমার সব নিগূঢ় নষ্টামি!

ভুলে গ্যাছো মারা-খাওয়া রাতের কথা?

দুইচোখে আমার ঘৃণার পারদগুলো ঝরছে!

চ্যাটের বিদ্রূপ নিয়ে বিব্রত কনডম খানা ফেটে গ্যাছে,

অথচ, চারপাশে কোনো পরিধানযোগ্য পলিথিনও অবশিষ্ট রাখেনি কুত্তার বাচ্চারা!

পৃথিবীতে আবর্জনা বেড়ে যাচ্ছে।

কাক জাতীয় হচ্ছে না কেন?

বোকাচোদা তাই?

নাকি কোকিলের মায়েরে চুদে দেবার মতো সাহস  নেই বলে?

মানুষগুলি নিতান্ত গরু হয়ে যাচ্ছে 

পৃথিবীটা সুশীল খামার এবং

সেখানে ওলানের জং নিয়ে

দুধেল গাভীগণ জাবর কাটাচ্ছে বলদের সাথে।

পৃথিবীর সমস্ত মাদারচোদ ঘুমিয়ে গেলে

আমি পৃথিবীটা গুছিয়ে নিতে পারতাম!

কিন্তু পারছি না, কারণ খানকির পোলারা ঘুমাচ্ছে না, 

সবকটা পিল খেয়ে জেগে আছে।





আমার জগদীশ্বর


সমস্থ পুন্য ধ্বংস হোক—ধ্বংস যতো ধর্ম

কুরআন—পুরাণ—বেদ—বাইবেল সকল ধর্মগ্রন্থ।

নামাজের সময় বয়ে যাক; খোদা হলে রুষ্ট

হৃদয় ভগবান—নবীজি মহান হয় যদি প্রেমে তুষ্ট।

চাই না—জান্নাত, অদৃষ্টে লেখা থাক নিরীহ নরক

তবুও করি না ভয়, উপেক্ষায়—ঈশ্বরের রক্ত চক্ষু

—পাপ হলে হোক, সকল বিধান করিবো ছিন্ন

পরম-পতি ঈশ্বর রূপে—জগত মহাসুর—

কুর্নিশে নত—নতজানু শিরঃ, হে আমার জগদীশ্বর।




বহুদিন হল সত্য মরে গেছে


বহুদিন হল সত্য মরে গেছে

খুন হয়েছে মানবিকতা

বেঁচে আছে শুধু একজন

সে হল মিথ্যা

কোমল সবুজের পাশে

আঁধারের আলিঙ্গন

তবু ঘুমোতে যাবার আগে

অপথ্য কুপথ্য ব্যর্থতা

গ্রীষ্মের মায়াহীন জ¦ালাময়ী প্রখরতার মত কষ্টের নানার্থ

নিভিয়ে দিতে হবে

নিস্তব্ধ এফিটাফে সাজিয়ে দেতে হবে আমাদের

আলো দেখে অতি আশা করে

নতুন জীবন্ত অরিন্দম শপথে

মহাকালের আগুনে আঁকা সাদাকালো গোয়ের্নিকা

তবু মানুষের অন্তরে

সত্য নিয়ে ভ্রান্তি

সময়ের ভাঁজে ভাঁজে যুগে যুগে কালে কালে

নৈরাজ্যের চটুল পরিক্রমায়

বিকৃত হয়ে গেছে সাদা মানবিকতা

পিকাসোর অনুরাগও দগদগে

অশ্রুকান্না ফুরিয়ে

সকল অশুভ ছন্দে ছন্দে নন্দে আনন্দে

বড় সকল কালে গ্রাস করে নিচ্ছে ছোটকে

বহুদিন হল সত্য মরে গেছে

বেঁচে নেই আর ন্যায়নীতি

খুন হয়ে গেছে মানবিকতা


গোয়ের্নিকা- স্পেনের বিশ^খ্যাত চিত্রশিল্পী পাবালো পিকাসোর সাদাকালো রঙে

আঁকা যুদ্ধ বিরোধী চিত্রকর্ম.





নদীর নিজস্ব ঘ্রাণ


মাতামুহুরীর কথাই বলছি;যার একান্নবর্তী সংসার ভরে আছে জল, জাল,মাতাল তরঙ্গ আর প্রবহমান করতালি।...রাত যখন ক্রমশ আঁধার হয়ে আসে তখন অস্পুট স্বর নীরবতায় মাদক ঢালে আর ঢুলুঢুলু চোখে চারদিকের আয়োজন দেখে;ভয় নাকি পরাজয়!... বেদনা না প্রণোদনা!

কারা সঙ্গ দিতে আসে রাতে নদীর বুকে? তারা,সংসার বৈরাগী, ঘর ভাঙ্গা মানুষ নাকি আত্মহন্তারক? যার যার মতো সময়ের বিন্যাসে আসে তারা,জলতরঙ্গে ভাসে; কাঁদে বা হাসে!...তার পরের হিসাব নদীও মনে রাখে না।

তবে প্রতি শীতের সকালে নদী তার নিজস্ব ঘ্রাণে বাস্প বানায় আর জানান দেয়;সারারাত ধরে প্রবাহিত পাঁজরের তাপ।

রাতের সঙ্গম শেষে শীতের ভোরে যারা মাতামুহুরীর জলে স্নান সেরেছেন তাদের শরীরে অনুভূত তাপই সাক্ষ্য দিবে নদী ও নারীর ঘ্রাণ সম্পূর্ণ মৌলিক।





ক্লোরোফিলে ডুব দেয় অনিয়মের ঈশ্বর 


অনিয়মের স্বর্গধামের ক্লোরোফিলে

ফরমালিন আর কার্বাইট মেখে 

বারবার ডুব দেয় অনিয়মের ঈশ্বর। 


আমি বলি, ওহে ঠাকুর

দাঁড়াও বৎস! তোমার কী ভয়ডর নেই?


দেখি ভরা পূর্ণিমায় আধখানা 

চাঁদ মুখে পানের রস 

আর তামাকের গন্ধ লেপ্টে আছে।


অসুরের মতো অট্টহাসি 

বিকট তার শব্দ,

প্রকম্পিত বিশ্ব, পৃথিবী এ ধরণী, !


অন্নপূর্ণাকে জিজ্ঞেস করলাম,

মা দুগ্গার সাথে দেখা হয়েছে তোমার?

তোমরা কার্তিক, গণেশ সব্বাই মাকে

নিয়ে কিসে চড়বে, গজে না নৌকায়?

অসুর ঠাকুরটা কী থাকবে দুগ্গা মায়ের সাথে?

কেন হে এ প্রশ্ন? তোমার!


আমি তো জানি, অনিয়মের ঈশ্বর 

বাস করে বেশ্যাপল্লী কিংবা ভদ্রপাড়ায়

ভোগ আর বিলাসিতায়।;

দুগ্গা মায়ের পাশে বসে 

পা লেপ্টে থাকে ভোগ আর আরতিতে।





তুমি ভালো থেকো


তোমাকে নিয়েই লিখছি, হ্যাঁ তোমাকে নিয়েই।

অনেক দিন হলো তুমি চলে গ্যাছ,

সেকথা ভাবতে ভাবতে এখন আর ভাবি না।

তোমাকে না পাওয়ার ব্যর্থতা এখন আমাকে আর কষ্ট দেয় না।

আমার মনের মণিকোঠায়, হৃদয়ের অতল 

গভীর থেকে গভীরতম স্থানে যে জায়গা জুড়ে তুমি আছ;

সাধ্য কার সেখান থেকে তোমাকে ছিনিয়ে নেবে!

তুমি কি পারবে সেখান থেকে ছিনিয়ে নিতে তোমাকে?


কে বলে তুমি নেই! তুমি আছ-

আমার আকাশে বাতাসে, সাগর নদী মহাসাগর

আমার পৃথিবী মহাবিশ্বে , আমার প্রতিটি শিরায় শিরায়,

রক্তের প্রতিটি কণায় কণায়।


তোমাকে হারিয়ে আমি কষ্টে আছি আমি বেদনাহত,

একথা ভেবে যদি তুমি কষ্ট পাও!

তারপর-ও আমি বোলবো,-

তুমি ভালো থেকো প্রিয়তমাষু, তুমি ভালো থেকো।






বিষাদের হিমালয়


জীবন যেখানে নিত্য প্রহসন যাতনার প্রতিমা প্রতিম

সুখস্বপ্ন সেখানেই মরু-ধুধু বালুচর-বিবর্ণ ধূসর

অনাহুত অতিথির মতো আমি আজ কেন ভন্ড ভগমান

পূজার প্রসাদ দিয়ে কেটে যায় সারাবেলা পূজারিনীহীন।

রিক্তমনোঃমন্দিরের চৌকাঠে ঠেকিয়ে মাথা নিভৃতে ভেবেছি

আর কতো দূর যেতে হবে এই একাকীত্ব পথের শেষান্তে

শত জন্ম জন্মান্তরে পাথরের পথ পিষে আমিতো এসেছি

মানুষের পদতলে নিবেদিত প্রাণে গেয়ে যেতে শান্তিগীতি।

প্রার্থনার মগ্নতায় মগজের মধ্যকোষ রক্তাক্ত করেছি

সভ্যতার মাঙ্গলিক মহাকাব্য লিখে লিখে - অথচ আমাকে

কেউ কোন দিন শুদ্ধ আলোর দেয়নি দিশা

হোমারের মতো পথ খুঁজে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি

আঁধারে।

যদি জন্ম-আদি অন্ত বাণী বলি তবে শোনো এক জীবনের গল্প

বিমাতার রোষানলে শীর্ণদেহে পুড়ে গেছি সেই আতুর ঘরে

অতঃপর অনাদরে মরে বেঁচে আছি যেন প্রাণহীন পাথরের

মূর্তি

কত বিষন্ন বসন্তে কেটে গেছে আমার ফেরারী ফাগুন।

তৃষিত মরুর দাহে আমি এক দিকভ্রান্ত পথের বিবাগী

অপমান-অবজ্ঞার ক্ষেতেই জমেছে লৌহ প্রলেপ পাহাড়

নিষ্ঠুর নিয়তি শুধু এই আমাকেই উপহাস করে বারবার

অবশেষে বুকশুন্য এই শুন্য বুকে জমে আছে বিষাদের হিমালয়।





মাংস-নিদ্রায় রেখে আসি এক জ্যান্ত রাঁধুনিকে


পরস্পর লাল-ধোঁয়া

ঠোঁটে চুমুর রেশ ধরে বেরিয়ে আসছে ঘুমের গন্ধ।


চোখে নির্জনতাজুড়ে কুহুকের দল

তবুও কোথাও করাতের গর্জন বেজে ওঠে কোন এক বনের ভিতর।

মহুয়ার চিরন্তন সন্ধ্যাগুলো ঝুলে থাকে

বাঁদুরের মত কোন স্বপ্নের ডালে—


বীর্যের বাগানে এক জ্যান্ত রাঁধুনি

তার খোপার চুল খুলে নির্বিকারভাবে

বাতাসে ভেসে আসছে রন্ধনকালীন শ্রমশিল্প।


অথচ চোখের উজ্জ্বল তারাগুলো খেয়ে ফেলে

যে মাংসাশী অতীত তার নির্মম প্লেটে

আমাকে রেখে নিদ্রা হনন করছে কয়েকটা কাঁটাচামচ।


অবশেষে আমাকে চূলায় চড়িয়ে মাছের মত

মচমচে ভাজা হচ্ছে যোনির একাগ্রতায়।


আমাদের যৌথ শামুক জীবনে কোন ধানের গন্ধ নেই

পড়ে আছে কেবল মাংসরেণু আর বাষ্পীভূত স্তন"





কুটিরশিল্পের গ্রাম


ছায়া সরে আসছে কুটিরশিল্পের গ্রামে।

মাখন তৈরি করছেন কৃষকের স্ত্রী

বলখেলার মাঠ,ইঁদুরের গর্ত ঢেকে যায় 

                                            মাঘকুয়াশায়

আমরা অন্ধ হয়ে থাকি।আমরা রেডিও

                                           শুনি।

২.

পালকি থেকে পা নামছে।

ঘুমিয়ে পড়া সব মানুষজন সাইকেলের স্বপ্ন দেখে

                                                      জেগে উঠলে

আমাদেরকে গোল হয়ে ঘিরে ধরে অন্ধকার।





অবাধ্য প্রজাপতি


নিস্তরঙ্গ ঘুমিয়ে আছো শান্ত শরীরে

তোমাকে ছুঁয়ে দেখা হয়নি বহুকাল!

হেয়ালি চোখ এড়িয়ে যায় তোমার সৌন্দর্য

কতোটা অযত্ন হলে স্পর্শের বাইরে থাকো-

থাকতে চাও।

একটি দীর্ঘ রাত গল্প হলেও তোমাকে স্পর্শে রাখিনি

এমনকি ! সুন্দর চোখেও না

তোমার ভায়োলিন শরীর আমাকে দাগ কাটে

অত:পর আমরা বাজতে থাকি ।


চারিদিকে এতো রঙ! এতো আলো!

তোমার ঘরটায় এতো অন্ধকার কেনো অরু?

মেঝেতে পড়ে আছে আঁশটে গোলাপ-

ঝাঁঝালো গন্ধ

গন্ধমের মতো অপরাধী করে দিচ্ছে হাওয়াকে

জন্মলগ্নে তোমাকে পেয়েছি বলে

সাথে সাথে রাখি চোখ

বিভোর নেশার ভেতর অবাধ্য প্রজাপতি

কাঠফড়িংয়ের মতো লাফিয়ে চলে।






হাওয়াফুলের ঠোঁটোগ্রাফ


বহুগামী গাছের  ক্যাকোফোনি


               হঠাৎ

    যেন বৃষ্টির বিগলিত ক্যাওয়াস


দূরে ভবঘুরে হাওয়াফুলের ঠোঁটোগ্রাফ 

কিঞ্চিৎ কেঁপে ওঠে রাস্তার স্বরলিপি 


   গাছের সৎকার হয়  মিস্ত্রি পাড়ায়


মরা গাছে ফুল ফোটায় বৈবাহিক রাত/

 ফুল কি ফোটাতে পারে বৈবাহিক রাত!





ফুলসুত্র


আমি বলি ফুলসূত্র

তুমি বলো ভুল

নির্ভুল বাতাসের ভবিষ্যৎবাণী

একদিন সকল সম্পর্কের অবসান হবে


আকাঙ্ক্ষা থেকে অপ্রাপ্তি

অপ্রাপ্তি থেকে হতাশা

তারপর জ্যোৎস্নালোকে কুয়াশার আত্মহনন

এসব কে কাকে শোনাবে?


সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত গভীর আলিঙ্গনে বাঁধা

ম্লান আভায় অম্লান ধূলিকণা

তারারা ধীরে ধীরে শিশিরে মিশে যায়

কেবল কিছু স্মৃতি গন্ধ ছড়ায় অন্ধকারে।






কফি


কফির সুবাস পেলাম নাকে পরিষ্কার অনেক দিন পর

ঠিক যেমন পেতাম সামনে দিয়ে হেঁটে যাবার সময়

তবে এবারের সুবাসে মিষ্টি একটা বাড়তি সুবাসের ছোঁয়া ছিলো।

এই জগতের সবচেয়ে প্রিয় সুবাস

কাজের ভেতর হঠাৎ ভেসে এলো

আশেপাশে দশ গজের ভেতর নেই কারুর হাতে কোন কফি

শোনার ভুল হয় কানে, কম শোনা বেশী শোনা এরকম

বোঝার ভুল হয়

ছাপার অক্ষরে ভুল হয়।

হয় মনের ভুল

এমনই একটা ভুল হয় তো শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের

হয়তো দূর অনেক দূর থেকে ভেসে আসা।

মনে হলো এটা সে রকম কোনো ভুল ছিলো না।

রোস্টেড খয়েরী রঙের কফি বীজ, গ্রাইন্ডিং মেশিনে গুড়ো করে একদম ফ্রেশ ব্রুড


কফি শব্দটার মতো মিষ্টি মাখা একটা সুবাসের সাথে মিশে অনন্য

যেন ভেসে এলো

সেই দূর থেকে, অনেক দূর থেকে

সতেজ সজীব সুবাস।  





প্রীতির পতাকা


তুমি অজয়ের তীরে আছো্

আমি শিবসার ঢেউয়ে

তুমি ময়ূরের রূপে মুগ্ধ, আমি—

দোয়েলের সুরে স্নাত


এভাবেই কেটে যাক শ্রমজীবনের এভারেস্ট সময়

হালকা বৃষ্টি হালকা রোদই কাম্য আমাদের

পরবর্তী অংশ পূর্ব নির্ধারিত নানামুখী চাপে

সামান্য সামান্য অনিশ্চয়তায়


তবু, প্রীতির পতাকা নিয়েছি

বেমালুম চেপে যাওয়ার রীতি হাতে না এলেও

কৌশল কুশাসন পাশাপাশি হাঁটে,দেখছি


পরের দিনের সকাল অনুমোদিত হলে

বেরিয়ে যাব

কুলটানা বৃত্ত কিছুই করতে পারবে না

শুধু জংশন বদলানো ছাড়া


Signature Poetry Collection (Part- 1)


Post a Comment

0 Comments