সুমন সৈকত এর কবিতা

Suman Saikat's poem সুমন সৈকত এর কবিতা



নষ্টালজিয়া

নিরুদ্দেশ হতে হতে শাদা ফেনায়  এঁকেছি

মানুষের ঘর্মাক্ত  ললাটের জলছবি। তন্দ্রার ছলে,

আন্দুলিসিয়ার প্রান্তে ফেলে এসেছি

শাদা বাজপাখির ডানা, মৃত ঘোড়ার খুর-

বিপন্ন বসন্ত বিকেল,

আর সাঁওতাল মেয়ের শস্য বিলাস।


নক্ষত্রের দীর্ঘশ্বাস নিয়ে

গাঙচিলের ডানায় উড়ে  প্রাগৈতিহাসিক ভোর

নৈঃশব্দ অন্ধকারে

মাতৃ-জরায়ুতে জমাট বাধে

                          আগামির স্পর্ধা...


আহা! বেদুইন,শূন্য উদ্যানে আজও খিলখিলিয়ে ওঠে

নাবালিকা জৈবিক  পারদসন্ধ্যা।






রোড  কুমিল্লা টু  ত্রিপুরা


মানুষ মরে যাচ্ছে হিংসার কাছে

মানুষ মরে যাচ্ছে লোভের কাছে

মানুষ মরে যাচ্ছে ভালোবাসাহীন পৃথিবীর কাছে

মানুষ মরে যাচ্ছে...

            মানুষ মরে যাচ্ছে; মানুষের কাছে!!!


মানুষ মরে যাচ্ছে ক্ষুধার কাছে

মানুষ মরে যাচ্ছে যুদ্ধের কাছে

মানুষ মরে যাচ্ছে মমতার কাছে

মানুষ মরে যাচ্ছে...

                  মানুষ মরে যাচ্ছে ; মানুষের কাছে!!!


মানুষ মরে যাচ্ছে   দুঃখের কাছে

মানুষ মরে যাচ্ছে মিথ্যার কাছে

মানুষ মরে যাচ্ছে ঘৃণার কাছে

মানুষ মরে যাচ্ছে...

            মানুষ মরে যাচ্ছে; মানুষের কাছে!!!






নোঙর

(জললিপি বোঝনা তুমি নোনতা জলের ব্যাকরণ)


তোমার আত্মহননের পান্ডুলিপি  এইমাত্র  শেষ করে   ঘরে  ফেরার  কথা  ভাবতেই   দেখি,  ঈশ্বরিণীর  শাড়ির আঁচলে বাঁধা কিশোরী সন্ধ্যা। চরুটের   গন্ধে মাতাল তখন মেথর সর্দারের উঠোন,   আত্মস্থ   করতে  থাকি   নগরের  অন্ধগলির  মাংশাসি   প্রলোভন।    নিষিদ্ধ  গন্ধমের জল-পিপাসায় কাতর জমজ স্তন।। কৃষ্ণাঙ্গ ঠোঁটে, মায়ার কলতান...


দূরগাঙে পড়ে রয় 

                      মাঝির হাহাকার,

                             ছেঁড়া "মাস্তুল"

                                        আর

 লোনাজলের শীৎকার ।।






পরম্পরা 


বেয়ারা স্বপ্নের শরীর বেয়ে ঝড়েপড়ে ' মানচিত্র ',  রক্তের ছোপ ছোপ দাগ- লাল মোরগের কন্ঠে প্রলম্বিত ভোরের আর্তনাদ।পৃথিবীর বয়স ক্রমশ বাড়ছে। সভ্যতার অটোবায়োগ্রাফি হাতে সারি সারি নর নারী হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে তাম্রবর্ণ জনপদ পিছু ফেলে।  সাইবেরীয় মেঘ-বালিকার গতর জুড়ে দূর্ভিক্ষের ক্যানভাস।ক্ষুর্ধাত শালিকের পাখনায় উদ্বাস্তু দিনলিপি।কোন এক অদৃষ্টের মোহে অনন্তকাল এ যাত্রা...। পৃথিবীর আয়ুস্কাল ধীরে ধীরে বাড়ছে...। ঘোরের পোষ্টারজুড়ে  মৃত্যু উপতক্যায় নিঃশব্দ আলাপন; ফিস ফিসিয়ে কে যেন হাঁসছে....

 

সারি সারি চোখ  নক্ষত্ররাজি হয়ে দুলছে, কচি বিষন্ন মুখে বিড়বিড়িয়ে বলে উঠে-

বুবু আর কত দূর?

জানিনা... (স্বগতোক্তি

"হয়তো আগামির স্বল্পতম সময়ের বাঁকে

                                                .  কিংবা

পূর্বপুরুষের মতো হারিয়ে ফেলবো আয়ুগুলো

উত্তর প্রজন্মের ললাটে"।।




কলম্বাস কিংবা সোয়ারি

 

ক্ষতের মতো অভিমানগুলো নিয়ে জেগে আছি।। 

দৃষ্টিসীমানায় কি দারুন ভাবে খুলে পড়ে বিশ্বাসের পলেস্তারাদি....

প্লাবিত জোসনার ঘ্রাণে সেদিন তুমি খিলখিলিয়ে বল্লে,  জানো!  জানো!! আমি রাণী ইসেবেলাকে স্বপ্নে দেখেছি,   অমনি  ভয় পেয়ে আমার শ্যামলা মুখমন্ডল কৃষ্ণবর্ণের প্রজাপতি  হয়ে উঠলো,  

তুমি বেশ অবাকই হয়ে ছিলে, বললে, এ আর এমন কি? মানুষ স্বপ্নে কত কি দেখে....

আমি কিন্তু  সে দিন ঠিকই এক লুণ্ঠনকারী কলম্বাস সোয়ারিকে মস্তিষ্কের ভিতর দৌড়াইতে দেখেছি....






সুমন সৈকত 

যৌথ সম্পাদনাঃ ছোট কাগজ "বোল"

ই-মেইল : sumonsaikatboal@gmail.com




Post a Comment

0 Comments